বাংলানিউজকে ৩-০ গোলে হারানোর পর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ও তারকা ফরোয়ার্ড শেখ মো. আসলামের সঙ্গে টিম জনকণ্ঠ
বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসের প্রথম কর্পোরেট মিডিয়া দৈনিক জনকণ্ঠের যাত্রা শুরু ১৯৯৩ সালে। সংবাদপত্রের ইতিহাসের অনেক ‘প্রথম’ কীর্তি ও রেকর্ডের অধিকারী এই জাতীয় দৈনিক সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকে নিয়মিতভাবে এবং অনেক সাফল্যও অর্জন করেছে। এ ধারাবাহিকতায় এবার জনকণ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) আয়োজনে এবং বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস নগদের পৃষ্ঠপোষকতায় ডিআরইউ মিডিয়া ফুটবল টুর্নামেন্টে।
রবিবার দুপুরে (১৩ নভেম্বর) ঢাকার পল্টনের শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম. মনসুর আলী হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জনকণ্ঠের শুরুটা হয়েছে দুরন্ত জয়ে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ ২৪ ডটকমকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষ এই দৈনিক। ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচে বিজয়ী দলের হয়ে জোড়া গোল করেন ফরোয়ার্ড রুমেল খান। অপর গোলটি করেন মিডফিল্ডার জাহিদুল আলম জয়। চৌকস পারফরমেন্স প্রদর্শন করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অধিনায়ক রুমেল খান।
এই ম্যাচে ডিআরইউ ফুটবলে জনকণ্ঠের হয়ে অভিষেক হয়েছে মোঃ মামুন রশীদ, গোলাম মোস্তফা এবং মাহমুদ আকাশের। লেফট ব্যাক পজিশনে খেলা মামুনের সাবলীল ও চমৎকার খেলা দেখে মনেই হয়নি তিনি এটা তার প্রথম ম্যাচ! রাইট ব্যাক পজিশনে খেলা মোস্তফা শুধু চমৎকারভাবে রক্ষণদুর্গই সামলাননি, একবার তো বল নিয়ে ওপরে উঠে গিয়ে জোরালো শট মেরে প্রায় গোলই করে ফেলেছিলেন! আর গোলরক্ষক পজিশনে অভিষিক্ত আকাশকে তো কঠিন কোন পরীক্ষাতেই পড়তে হয়নি! ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তায় পোস্টের নিচে তিনি পার করেছেন অলস সময়! আর রাইট উইঙ্গে খেলা নিয়াজ আহমেদ লাবুও দেখিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার ঝলক। নিজের পজিশন ধরে রেখে প্রতিপক্ষের মাঝমাঠ থেকে সৃষ্ট আক্রমণগুলো নসাৎ করেছেন। সেই সঙ্গে সুযোগ পেলেই বল নিয়ে সামনে ওঠে আক্রমণ শাণাতে সাহায্য করেছেন সতীর্থদের।
কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রতিপক্ষের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে জনকণ্ঠ। পঞ্চম মিনিটে মিডফিল্ডার জাহিদুল আলম জয়ের গোলের সুবাদে ম্যাচে এগিয়ে যায় জনকণ্ঠ। সতীর্থ ফরোয়ার্ড এবং অধিনায়ক রুমেল খান প্রতিপক্ষের অর্ধে ভেতরে ঢুকে জয়কে বল পাস দিলে ডি বক্সের মাথা থেকে ঠা-া মাথায় বা পায়ের নিপুণ প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান। জাল ছিঁড়ে বল বাইরে চলে যাওয়ায় জয় তো বটেই, তার সতীর্থরা এবং প্রতিপক্ষের কেউই প্রথমে বুঝতে পারেননি এটা গোল! তবে রুমেলের উল্লাস এবং রেফারির গোলের বাঁশিতে সব পরিস্কার হয় এবং গোলের উল্লাসে মাতোয়ারা হয় টিম জনকণ্ঠ (১-০)। এরপর আরও উজ্জীবিত হয়ে একের পর এক আক্রমণ শাণায় জনকণ্ঠ। একাধিক গোলের সুযোগও নষ্ট করে। নবম মিনিটে আবারও গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা। এবার আবারও জয়-রুমেলের কম্বিনেশন। জয়ের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতরে রুমেল ড্রিবলিং করে ও প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে ডজ দিয়ে ডান পায়ের গড়ানো শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন (২-০)। উল্লেখ্য, ডিআরইউ ফুটবলে এই প্রথম গোল করলেন জয়-রুমেল (যদিও এর আগে টাইব্রেকারে তারা একাধিক গোল করেছেন, অন্যান্য মিডিয়া টুর্নামেন্টেও গোল করেছেন)।
বিরতির পর আরেকটি গোল করে প্রতিপক্ষের হারের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয় জনকণ্ঠ! ১৭ মিনিটে কর্নার পায় তারা। জয়ের নেয়া কর্নারে ডি বক্সে জটলা থেকে বল পেয়ে সুযোগসন্ধানী রুমেল তা জালে জড়িয়ে দেন (৩-০)। কিছুক্ষণ পরেই রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজালে প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত জয়ের চিত্তসুখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে টিম জনকণ্ঠ। উল্লেখ্য, ম্যাচ হয় দুই অর্ধে ১০ মিনিট করে মোট ২০ মিনিট। আর প্রতি দলে খেলেন ৬ জন করে। জি-গ্রুপে জনকণ্ঠ ও বাংলানিউজ ছাড়াও আছে চ্যানেল ২৪, কালবেলা, সারাবাংলা ডটনেট এবং এটিএন বাংলা। চ্যানেল ২৪ বনাম কালবেলার মধ্যকার বিজয়ীর বিরুদ্ধে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে জনকণ্ঠ। টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ও তারকা ফুটবলার শেখ মো. আসলাম, নগদ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এবং নির্বাহী পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদ এলিট।
জনকণ্ঠ দল ॥ মাহমুদ আকাশ (গোলরক্ষক), গোলাম মোস্তফা, মোঃ মামুন রশীদ, নিয়াজ আহমেদ লাবু, জাহিদুল আলম জয় ও রুমেল খান (অধিনায়ক)।
রুমেল