অনলাইন ডেস্ক ॥ সবকিছুতে প্রথম হওয়া যে সবসময় সুখকর নয়, দানুশকা গুনাথিলাকার তা এখন ভালোই বুঝতে পারার কথা। শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে একটি জায়গায় তিনিই প্রথম। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই এটি তিনি চাননি!
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অ্যান্টিগায় বুধবার ৫৫ রানে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউট হন গুনাথিলাকা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনাকাঙ্ক্ষিত এই আউট হওয়া প্রথম লঙ্কান ক্রিকেটার তিনিই।
তার আউট নিয়ে অবশ্য বিতর্ক চলছে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের পর থেকেই। আইনে আছে, কেবল ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দিলে বা বিঘ্ন ঘটালেই ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ দেওয়া যাবে। গুনাথিলাকা ইচ্ছা করে বাধা দেননি বলেই মনে হয়েছে। টম মুডি, ড্যারেন স্যামিরা মনে করছেন, গুনাথিলাকা আউট ছিলেন না। তবে তাতে এখন বাস্তবতা পাল্টাচ্ছে না। রেকর্ড বইয়ে তার নাম উঠে গেছেই।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গুনাথিরাকার আগে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউটের স্বাদ পেয়েছেন মোটে ১০ জন, এর মধ্যে ওয়ানডেতে ক্রিকেটেই ৭ জন।
টেস্টে এই আউটের শিকার হওয়া একমাত্র ক্রিকেটার স্যার লেন হাটন। ১৯৫১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওভাল টেস্টের শেষ ইনিংসে ২৭ রানে এভাবে আউট হন এই ইংলিশ কিংবদন্তি।
টেস্ট ইতিহাসের আলোচিত আউটগুলির একটি সেটি। প্রোটিয়া অফ স্পিনার অ্যাথল রোয়ানের ডেলিভারি লেংথ থেকে লাফিয়ে হাটনের গ্লাভসে লেগে বাহুতে ছুঁয়ে চলে যায় পেছন দিকে। হাটন বুঝেই উঠতে পারছিলেন না বল কোথায়। বল স্টাম্পে লাগবে ভেবে তিনি হতদন্ত হয়ে হাত চালিয়ে দেন। কিন্তু বল স্টাম্পে লাগছিল না। কিপার রাসেল এনডিন হয়তো ক্যাচ নিতেও পারতেন না। কিন্তু হাটনের হাতে লেগে বল কিপারের নাগালের আরও বাইরে চলে যায়। আবেদন হওয়ার পর আউট না দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না আম্পায়ারের।
টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম, এখনও পর্যন্ত সেটিই শেষ ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড।’
হাটনের ঘটনার ৩৬ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবার এই আউট দেখা যায়, এবার ওয়ানডেতে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করাচিতে আউট হন পাকিস্তানের রমিজ রাজা। এটিও তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়, কারণ তিনি আউট হন ৯৯ রানে!
ম্যাচের সেটি ছিল শেষ বল। দলের হার নিশ্চিত হয়ে গেছে। সেঞ্চুরি করতে রমিজের লাগত ২ রান। প্রথম রান নিতে পারলেও দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হতে বসেছিলেন। ফিল্ডারের থ্রো যাচ্ছিল স্টাম্পের দিকে। রমিজ ব্যাট বাড়িয়ে আটকে দেন বল। রান আউট না হলেও ইতিহাসে নাম লেখান ওয়ানডের প্রথম ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউট হয়ে।
এই আউটের সঙ্গে পাকিস্তানিদের বেশ সখ্য আছে। রমিজের পর এই আউটের স্বাদ পেয়েছেন পাকিস্তানের ইনজামাম-উল-হক, মোহাম্মদ হাফিজ ও আনোয়ার আলি।
চার পাকিস্তানি ছাড়া ওয়ানডেতে এই আউটের শিকার হয়েছেন ভারতের মহিন্দর অমরনাথ, ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস ও যুক্তরাষ্ট্রের জেভিয়ার মার্শাল (একসময় তিনি খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে)।
কেবল গুনাথিলাকা ও রমিজই এই আউট হয়েছেন ফিফটি পেরিয়ে।
ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ের নায়কদের একজন অমরনাথ আবার এক জায়গায় সবার চেয়ে আলাদা। ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ ও ‘হ্যান্ডলড দা বল’ , দুটি অদ্ভুত আউটের অভিজ্ঞতাই তার আছে।
টি-টোয়েন্টিতে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ হয়েছেন ইংল্যান্ডের জেসন রয় ও কাতারের বিপক্ষে মালদ্বীপের হাসান রশিদ।