
স্বাগতিক আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে নিজেদের স্বাভাবিক ফুটবল খেলতে পারেননি আফিঈদা খন্দকাররা
প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৬ ধাপ এগিয়ে। যদিও এর আগে কখনই তাদের বিপক্ষে খেলা হয়নি। তবে জুনিয়র পর্যায়ে যে তিনবার সাক্ষাৎ হয়েছে, তার প্রতিটিতেই ‘বাংলার বাঘিনী’দের ছিল শতভাগ জয়। আমিরাতের সঙ্গে দু’টি ফ্রেন্ডলি ম্যাচের (প্রথমটি ফিফা স্বীকৃত হলে পরেরটি তা ছিল না, কেননা পরের ম্যাচটি ফিফা উইন্ডোতে হয়নি) সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।
প্রতিটিতেই স্কোরলাইন ছিল ৩-১ এবং বাংলাদেশের হয়ে দু’টি ম্যাচেই একমাত্র গোলদাতা ছিলেন নতুন অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দকার। আর দু’টি গোলই তিনি করেছেন পেনাল্টি থেকে। প্রতিটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হয়েছে আরব আমিরাত ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মাঠে। এই দু’টি ম্যাচেই বাংলাদেশ যে হারতে পারে বা হারতে যাচ্ছে, এটা আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল। কেননা বাংলাদেশ দলে খেলেননি সর্বশেষ ২০২৪ সাফজয়ী ১৮ ফুটবলার, যাদেরকে ‘বিদ্রোহী’ বলা হচ্ছে।
হারটা অনুমেয় হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ দলের কোচ পিটার বাটলারের দিকে ধেয়ে এসেছে সমালোচনার তীক্ষè বাণ! কিন্তু আমিরাতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ হারলেও এই ব্রিটিশ কোচ কোচ আশাবাদী, এই দলের হাত ধরে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের নারী ফুটবল। বলেছেন, নতুন দলের উন্নতির দিকগুলোই প্রাধান্য পাচ্ছে তার কাছে।
এই দলের ব্যর্থতায় ‘অনেকে হাসবে, রসিকতা করবে’, এমন কথা প্রথম ম্যাচের পর বলেছিলেন বাটলার। শুনিয়েছিলেন দল নিয়ে আশাবাদ। রবিবার দ্বিতীয় ম্যাচে হারের পর একই সুরে কথা বলেছেন এই ইংলিশ কোচ, ‘এই সফর নিয়ে যদি বলি, এই সপ্তাহ নিয়ে আমি খুবই গর্বিত। ফুটবলের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন আছি। জিততে হবে, জিততে হবে- আমি এই মানসিকতার নই। আমার ভাবনায় উন্নতি।
এই সপ্তাহে আমরা সেটা পেয়েছি, সেই মানসিকতা দেখেছি (মেয়েদের মধ্যে)। যখন আমরা এই মানসিকতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব যে, আসুন ধৈর্য ধরি, উন্নতি করি, নতুন ভবিষ্যৎ সাজাই, তখন বাংলাদেশের নারী ফুটবল এই মেয়েদের হাত ধরে বেড়ে উঠবে।’ বিদ্রোহীরা আরব আমিরাত সফরে না থাকায় ফরোয়ার্ড লাইনে ছিলেন না সাবিনা, ঋতুপর্ণা, কৃষ্ণা, তহুরার মতো অভিজ্ঞরা।
তাদের অবর্তমানে সেভাবে ঝলসে উঠতে পারেননি শাহেদা আক্তার রিপা, আইরিন খাতুন, সৌরভী আকন্দ প্রীতিরা। কেউই গোল পাননি। পেয়েছেন এক ডিফেন্ডার, অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার।
কিন্তু রিপাপ-সৌরভীদের নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাটলার, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে আমি অনেক পরিবর্তন করেছি। মেয়েদের খেলার সুযোগ দিয়েছি এবং এই তরুণীরা ভীষণ ইতিবাচক এবং দারুণ ফুটবল খেলেছে। তারা দারুণ মানসিকতা দেখিয়েছে।’
বাটলার আরও যোগ করেন, ‘দেখুন, আমরা সেই দলের সঙ্গে এখনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব না, যাদের ২৩ জনের মধ্যে ১০-১২ জনই বিদেশী খেলোয়াড়, আমরা তাদের সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে লড়তে পারব না, আমরা তাদের সঙ্গে লড়তে পারি উদ্দীপনা ও সাহস দিয়ে। সেখানে এই মেয়েদের নিয়ে আমি গর্বিত।’ দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে মেঘলা, হালিমা, নবিরুনদের মতো নতুনদের খেলার সুযোগ দেন বাটলার। তাদের পারফরম্যান্স ইতিবাচক বলেই মনে করেন তিনি।