![সাবিনাদের রোষানলে জুনিয়র ফুটবলাররা! সাবিনাদের রোষানলে জুনিয়র ফুটবলাররা!](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/sp9-2-2502111841.jpg)
অনুশীলনে ৩৬ নারী ফুটবলার
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবলের ক্যাম্পে সিনিয়রদের রোষানলে পড়েছে জুনিয়র ফুটবলাররা। ১৮ সিনিয়র ফুটবলারের বিদ্রোহ-আন্দোলনের সঙ্গে শামিল না হওয়ায় বা তাদেরকে সমর্থন না করায় মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেকেই। এমনটাই দাবি করেছেন নির্যাতিত ফুটবলারদের অনেক অভিভাবক। ক্যাম্পে থাকা তাদের মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে মহাউদ্বেগে আছেন তারা। দেশের ফুটবলের স্বার্থে সৃষ্ট সংকটের সুষ্ঠু সমাধান চান তারা।
দলের হেড কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে ১৮ সিনিয়র ফুটবলারের বিদ্রোহের ঘটনায় টালমাটাল হয়ে পড়েছে দেশের নারী ফুটবলের ভবিষ্যৎ। সপ্তাহের বেশি পেরুলেও যার কোনো সুরাহা এখনো হয়নি। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি জটিল-ঘোলাটে হচ্ছে আরও প্রতিনিয়ত। ব্রিটিশ কোচ বাটলারের অপসারণের জন্যই ১৮ ফুটবলারের এই বহুল আলোচিত বিদ্রোহ।
বাটলার থাকলে অনুশীলনে যাবেন না সাবিনারা। দাবি মানা না হলে হুঁশিয়ারি দেন গণঅবসরে যাওয়ার। কোচের বিরুদ্ধে যেন অভিযোগের শেষ নেই তাদের। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে নিজেদের জেদ বজায় রাখতে গিয়ে এখন যেন উল্টো বিপাকেই পড়ে যাচ্ছেন তারা! কেননা বাটলারকে সরিয়ে দেবার অভিযোগগুলো তদন্ত কমিটির কাছে ধোপে টেকেনি। ফলে নিজেদের ক্যারিয়ারের এখানেই ‘দ্য এন্ড’ দেখছেন মাসুরারা।
কমিটি সপ্তাহজুড়ে যে তদন্ত করেছে, তার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কোচ থাকবেন। সানজিদা-মনিকারা অনুশীলনে যোগ না দিলে স্বভাবতই বাদ পড়বেন। এর মধ্যেই বাফুফে সভাপতির একান্ত অনুরোধেও মন গলেনি সুমাইয়া-নীলাদের। অনুশীলনে যোগ দেননি তারা। ক্যারিয়ার বাঁচাতে নতজানু হননি তারা।
বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই ৩৬ নারী ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে বাফুফে। চুক্তি সম্পন্ন হওয়াদের মধ্যে নেই রূপনা-শামসুন্নাহার-তহুরা-কৃষ্ণারা। ফুটবলপ্রেমীদের বলছেন অতিরিক্ত অহংকার এবং ধরাকে সরাজ্ঞান করারই মাসুল পাচ্ছেন সাবিনাদের নেতৃত্বে একদল সিনিয়র ফুটবলার। পিটার বাটলারের অধীনে যারা অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে তাদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ফলে মাসিক বেতনের আওতায় চলে এসেছেন নারী ফুটবলাররা।
৬ ক্যাটাগরিতে নারী ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাফুফে। ?এই ৬ ক্যাটাগরির ফুটবলারদের যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার, ২৫ হাজার, ২০ হাজার, ১৫ হাজার ও ১০ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া হবে। চুক্তি কার্যকর হবে ক্যাম্প যোগ দেওয়ার দিন ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে।
নতুন করে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ঢাকায় ফেরা নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার আগের চুক্তির এক মাসের বেতন এখনো বুঝে পাননি। সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন মেয়াদের জানুয়ারি মাসের বেতনও।
বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, সব মিলিয়ে ৫৫ জনের সঙ্গে চুক্তি করা হবে। আপাতত অনুশীলন চালিয়ে যাওয়া ৩৬ জন চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। এর মানে সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমাদের পথ এখনো খোলা আছে।
বর্তমানে যে ৩৭ জনকে নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন পিটার, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন খেলোয়াড় কেবল চুক্তির বিবেচনায় আসেননি বলে জানালেন একজন টিম অফিসিয়াল।
বাফুফে ভবনে কান পাতলেই শোনা যায় জুনিয়রদের প্রতি সিনিয়রদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর মানসিক নির্যাতনের খবর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুনিয়র ফুটবলারের অভিভাবক জানিয়েছেন, সিনিয়রদের এই বিদ্রোহের পেছনে কলকাঠি নাড়া কিংবা ইন্ধন জোগানো হচ্ছে অধিনায়ক সাবিনার মাধ্যমে।
দেশের নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রার শুরু থেকেই দলের সঙ্গে আছেন সাতক্ষীরার মেয়ে সাবিনা। নারী ফুটবলের ঈর্ষণীয় সাফল্যে তার অবদান অনস্বীকার্য। তবে তার আগ্রাসী আচরণও বাফুফে ভবনের সবার কমবেশি জানা। বিদ্রোহে যোগ নেয়াতে রীতিমতো ‘বেইমান’, ‘স্বার্থপর’ বলেও ক্ষোভ ঝারেন সাবিনা।
তাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ না করায় জুনিয়রদের মুখ দেখাও নাকি বন্ধ করে দিয়েছেন সাবিনা! সিনিয়রদের সিন্ডিকেটে যোগ দিলেও বিপদ, আবার না দিলে বিপদ ... সাবিনা বা বাফুফের রোষানলে পড়ার ঝামেলা। শেষমেষ বাফুফের সঙ্গে থেকেছে জুনিয়ররা।