রিয়ালের হয়ে ‘১০০’ গোল করা ভিনিসিয়াসকে জার্সি উপহার দিয়েছেন ক্লাব সভাপতি পেরেজ
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্দান্ত এক প্রত্যাবর্তনের গল্প রচনা করেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্টের বাঁচা-মরার ম্যাচে বুধবার রাতে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্যারিস জায়ান্টরা ৪-২ ব্যবধানে পরাজিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটিকে। ফলে পরের রাউন্ডে যাওয়ার পথ কিছুটা হলেও সহজ হয়েছে লুইস এনরিকের শিষ্যদের।
পক্ষান্তরে এই পরাজয়ে ম্যানচেস্টার সিটির বিদায়ের শঙ্কা বেড়েছে। কেননা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কেবল জিতলেই চলবে না পেপ গার্দিওলার দলকে। বরং আরও যদি কিন্তুর ওপর নির্ভর করতে হবে ম্যানচেস্টার সিটিকে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটির হারের দিনে কেবলমাত্র বায়ার্ন মিউনিখ ছাড়া প্রত্যাশিত জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে আসরের বাকি ফেভারিট দলগুলো। তবে বড় জয়টা পেয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা এদিন ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে রেড বুল সালজবার্গকে। ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে ডায়নামো জাগরেবকে। কষ্টে জিতেছে ইতালির দুই মিলান। এসি মিলান নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে হারিয়েছে জিরোনাকে।
স্পার্তা প্রাগের মাঠ থেকে একই ব্যবধানে জয় নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ইন্টার মিলানও। সেল্টিকও একই ব্যবধানে ইয়ং বয়েজকে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে। শাখতার দোনেৎস্ক ২-০ ব্যবধানে হারায় ব্রেস্টকে। আরবি লিপজিগ ২-১ গোলে জয় তুলে নেয় স্পোর্টিং সিপির বিপক্ষে। তবে এদিন লজ্জার হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। ফেইনুর্ড তাদের মাঠে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে জার্মান জায়ান্টদের।
তবে এদিন ফুটবলপ্রেমীদের বাড়তি নজর ছিল ম্যানচেস্টার সিটি বনাম পিএসজির ম্যাচে। কেননা, এই ম্যাচে হারলেই যে বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত ছিল পিএসজির। অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার সিটির সম্ভাবনা ঝুলছিল সুতোর ডগায়। তবে পার্ক ডি প্রিন্সেসে প্রথমার্ধে গোল শূন্য সমতায় শেষ করে দুই দল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জ্বলে উঠে ম্যানচেস্টার সিটি। ৩ মিনিটের ব্যবধানেই দুই গোল করলে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে স্বাগতিক সমর্থকরা।
৫০ মিনিটে জ্যাক গ্রিলিশ প্রথম গোল করার পর ৫৩ মিনিটে আর্লিং হালান্ড গোল করলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। তবে দুই গোল হজম করার পরই যেন হুশ ফিরে পিএসজির। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৬ থেকে ৬০ এই চার মিনিটের ব্যবধানেই দুই গোল করে সমতায় ফিরে পিএসজি। ৫৬ মিনিটে উসমান ডেম্বেলে প্রথম গোল করার পর ৬০ মিনিটে গোল করে সমতায় ফেরান আরেক ফরাসি তরুণ ব্রাডলি বারকোলা। এরপর ৭৮ মিনিটে গোল করে উজ্জীবিত পিএসজিকে এগিয়ে দেন জোয়াও নেভাস।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের ৯৩ মিনিটে গঞ্জালো রামোস গোল করলে ৪-২ ব্যবধানের প্রায় অবিশ্বাস্য এক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লুইস এনরিকের দল। এই জয়ে ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ২২ নম্বরে অবস্থান করছে পিএসজি। গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্টুটগার্টের বিপক্ষে জয় কিংবা ড্র করলেই প্লেঅফ নিশ্চিত হবে তাদের। অন্য দিকে ম্যানসিটির অবস্থান ২৫ নম্বরে।
শেষ ম্যাচে ঘরের মাঠে ক্লাব ব্রাগের বিপক্ষে জিতলে ১১ পয়েন্ট হবে ম্যানসিটির। সেক্ষেত্রে বেনফিকা, পিএসজি, স্পোর্টিং কিংবা স্টুটগার্ট যদি শেষ ম্যাচে হারে তবেই প্লেঅফ খেলার সুযোগ পাবে গার্দিওলার শিষ্যরা।
এদিকে, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদ ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রেড বুল সালজবার্গকে। ফলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ১৬ নম্বরে উঠে এসেছে আনচেলত্তির দল। শেষ ম্যাচ জিতলে সেরা আটে উঠে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।
সালজবার্গের বিপক্ষে রিয়ালের হয়ে দুটি করে গোল করেন দুই ব্রাজিলিয়ান রদ্রিগো আর ভিনিসিয়াস। অন্য গোলটি আসে কিলিয়ান এমবাপের পা থেকে। ভিনির প্রথম গোলটি ছিল রিয়ালের জার্সিতে শততম। স্বদেশী কিংবদন্তি রোনাল্ডোকে (১০৪) স্পর্শ করতে তার লাগে আর ৩ গোল। যা ভিনির জন্য সময়ের ব্যাপার।