রেকর্ড গড়া মোহাম্মদ সালাহকে (মাঝে) ঘিরে লিভারপুলের ফুটবলারদের উল্লাস
প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে খেলা ও জেতা এমনিতেই বেজায় কঠিন ব্যাপার। তার ওপর প্রথমার্ধেই অতিথি দল ৩-১ গোলে পিছিয়ে। এই অবস্থায় তারা যে হারতেই যাচ্ছে, নিশ্চয়ই এমনটাই ধরে নেবেন বেশিরভাগ ফুটবলবোদ্ধারা। কিন্তু না, মঙ্গলবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ঘটেছে ঠিক উল্টোটাই। রূপকথার মতো অবিশ্বাস্য এক প্রত্যাবর্তনের গল্প রচনা করেছে স্পেনের ফুটবল ক্লাব (এফসি) বার্সেলোনা।
স্বাগতিক বেনফিকাকে তারা হারিয়েছে ৫-৪ গোলে! স্কোরলাইন দেখে মনে হতে পারে এটা হয়তো টাইব্রেকারের ফল। না, এটা নির্ধারিত ৯০ মিনিটের রেজাল্ট। বিফলে গেছে পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্ট লিসবোয়া (এসএল) বেনফিকার ভেঙ্গেলিস পাভলিদিসের অনবদ্য হ্যাটট্রিক। জয়ী দলের রবার্ট লেভানডোস্কি এবং রাফিনহা জোড়া গোল করেন। এরিক গার্সিয়া করেন অপর গোলটি। ম্যাচসেরা হন ব্রাজিলিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড রাফিনহা।
৯ গোলের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগের সুপার এইট নিশ্চিত করেছে ১২৫ বছরের পুরনো ক্লাব ও ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী বার্সেলোনা। সাত খেলায় ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে তারা। পক্ষান্তরে ১২০ বছরের পুরনো ক্লাব বেনফিকা সেরা আটের বেশ কাছে থাকার সুযোগ আপাতত হারালো। ১০ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফের জায়গা অষ্টাদশ স্থানে নেমে গেল ২ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (তৎকালীন ইউরোপিয়ান কাপ) বেনফিকা।
এদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল। ফ্রেঞ্চ ক্লাব লিলকে ২-১ গোলে হারিয়ে সাত ম্যাচের সবগুলোতেই তুলে নিয়েছে জয়। সেই সঙ্গে কোয়ালিফাই করেছে শেষ ষোলোতেও। ৭ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল। সমান ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে লিলের অবস্থান একাদশ স্থানে।
ম্যাচসেরা রাফিনহা বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি একটি কঠিন ম্যাচ হবে। আমি জানি তাদের মাঠে বেনফিকার বিরুদ্ধে খেলাটা কতটা কঠিন। তাদের খেলোয়াড়রা অত্যন্ত উঁচুমানের। তবে আমরা ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও হাল ছাড়িনি। এটি একটি দুর্দান্ত ম্যাচ ছিল। এখানে যে কোনো দলই জিততে পারত।’ বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক বলেন, ‘পাগলাটে ম্যাচ ছিল।
সবচেয়ে পজিটিভ দিক ছিল আমাদের মানসিকতা। আমরা ফিরে এসেছি এবং এটা দারুণ। ফুটবল এমনই, এবং এজন্যই আমরা এটি ভালোবাসি’। ফ্লিক আরও যোগ করেন, ‘আমি মনে করি না আমি কখনো এমন একটি প্রত্যাবর্তন দেখেছি। এটি অবিশ্বাস্য।’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসে এ নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার কোন দল ৪ গোল খেয়েও ম্যাচ জিতল। প্রথমবার এমনটা হয়েছিল ২০১৬ সালের নভেম্বরে, লেগিয়া ওয়ারশকে ৮-৪ গোলে হারিয়েছিল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।
ম্যাচের সংযুক্তি সময়ে (৯৬ মিনিটে) গোল করে ম্যাচের রং পাল্টে দেন রাফিনহা (৫-৪)। এই মৌসুমে ৩০ ম্যাচে তার গোল ২২টি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই ৮টি।