মেসি ও বেকহাম।
আগে ছিলেন তার প্রতিপক্ষ। আর এখন সেই প্রতিপক্ষকেই নিজের ডেরায় নিয়ে এসেছেন। তবে খেলোয়াড় নয়, মালিক হিসেবে। এখন তিনি গ্যালারিতে বসে সেই ফুটবলারের খেলা প্রাণভরে মুগ্ধ নয়নে অবলোকন করেন। সেই ফুটবলার গোল করলে বা দলকে জেতালে অপার চিত্তসুখে নিজের অজান্তেই অশ্রুজলে চোখ ঝাপসা হয়ে ওঠে। সর্বকালের সেই সেরা ফুটবলারকে নিজের ক্লাবে নিয়ে আসার জন্য গর্বে বুক ভরে ওঠে তার।
আজ বৃহস্পতিবার আবারও সেই অনুভূতি হয়েছে তার। গ্যালারিতে বসে দেখলেন সেই ফুটবলারটির নৈপুণ্যে তার ক্লাব আরেকটি শিরোপা জিতেছে। সেই সঙ্গে তার নিজের একটি কীর্তিকেও ছাপিয়ে গেছে সেই ফুটবলারটি।
ইন্টার মায়ামির অন্যতম কর্নধার ডেভিড বেকহাম, যিনি নিজেও ছিলেন দুর্দান্ত এক ইংলিশ ফুটবলার। ১৯৯২-২০১৩ সাল পর্যন্ত ক্লাব ও জাতীয় দলে খেলে মোট ১৪৬ গোল করেছিলেন এই মিডফিল্ডার। ফ্রি কিকে ছিলেন দারুণ পারদর্শী। মোট গোলের ৬৫টি-ই করেছিলেন ফ্রি কিক থেকে। সর্বকালের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির বিরুদ্ধে কয়েকবারই খেলেছেন। মজার ব্যাপার-ইন্টার মায়ামির যখন অন্যতম মালিক হলেন, তখন মেসি বলেছিলেন, ‘শুভকামনা ডেভিড। একদিন হয়তো তুমি আমাকে তোমার ক্লাবে খেলতে ডাকবে।’ তার মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই মেসিকে নিজের ক্লাবে নিয়ে এলেন বেকহাম!
আরেকটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার, অনেকদিন ধরেই বেকহামের সঙ্গে ৬৫ ফ্রি কিক গোলের সমতায় অবস্খান করছিলেন মেসি। আজ “সাপোর্টার্স শিল্ড” জেতার পথে কলম্বাস ক্রুর বিপক্ষে যে জোড়া গোলগুলো করেছেন, তার একটি ছিল দৃষ্টিনন্দন ফ্রি কিক থেকে। আর সেই সাথে টপকে যান বেকহামকে। ফ্রি কিক থেকে মেসির গোলসংখ্যা এখন ৬৬।
ফ্রি কিক থেকে এই একটি গোল করেই মেসি ফ্রি কিক গোলের সর্বকালের তালিকায় এক লাফে তিন ধাপ ওপরে উঠে গেলেন। সেরা ১০-এ তিনি এখন যুগ্মভাবে তিনে।
এখন দেখার বিষয়, ক্যারিয়ার শেষ করার আগে গ্রেট পেলে ও জুনিনহোকে ফ্রি কিক গোলে পেছনে ফেলতে পারেন কি না মেসি।
ফ্রি কিক গোলের তালিকা:
১. জুনিনহো পারনামবুকানো (ব্রাজিল, ১৯৯৩-২০১৩), ৭৭ গোল
২. পেলে (ব্রাজিল, ১৯৫৬-১৯৭৭), ৭০ গোল
৩. লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা, ২০০৩ থেকে অদ্যাবধি), ৬৬ গোল
৪. ভিক্টর লেগ্রোটাগলাই (আর্জেন্টিনা, ১৯৫৩-১৯৭৬), ৬৬ গোল
৫. রোনালদিনহো গাউচো (ব্রাজিল, ১৯৯৮-২০১৫), ৬৬ গোল
৬. ডেভিড বেকহাম (ইংল্যান্ড, ১৯৯২-২০২৩), ৬৫ গোল
৭. ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো (পর্তুগাল, ২০০২ থেকে অদ্যাবধি), ৬৪ গোল
৮. ডিয়েগো ম্যারাডোনা (আর্জেন্টিনা, ১৯৭৬-১৯৯৭), ৬২ গোল
৯. জিকো (ব্রাজিল, ১৯৭১-১৯৯৪), ৬২ গোল
১০. রোনাল্ড কোয়েম্যান (নেদারল্যান্ডস, ১৯৮০-১৯৯৭), ৬০ গোল
রুমেল খান/ এম হাসান