
মেহেদি হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের জয় বিলম্বিত হয়েছে
সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরেছে বাংলাদেশ। তবে বোলাররাও আহামরি কিছু করতে পারেননি। ব্যতিক্রম শুধু মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনি উভয় ইনিংসে ৫টি করে উইকেট নিয়ে ভুগিয়েছেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটারদের। এর ফলে তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেট ছুঁয়েছেন তিনি। ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার তার ১২তম, তবে ম্যাচে ১০ উইকেট ৩ বার হয়েছে যা কোনো বাংলাদেশী বোলারের সেরা অর্জন। ২ বার করে ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়া সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামকে ছাড়িয়ে গেছেন মিরাজ।
সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৬ উইকেট নেন পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি। ১১তম টেস্টে স্পর্শ করেন ৫০ উইকেট। মাত্র ১৭৪ রানের টার্গেট পায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশী বোলারদের আলগা বোলিংয়ের সুবাদে জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারান ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করে ৯৫ রানের জুটি গড়েন। এতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় সফরকারীরা। কিন্তু মেহেদি হাসান মিরাজ জয়টাকে সহজে পেতে দেননি।মেহেদি হাসান মিরাজের অফস্পিনে কারান ৭৫ বলে ৭ চারে ৪৪ রানে সাজঘরে ফেরেন এবং জুটি ভেঙ্গে যায়। এরপর মিরাজের ঘূর্ণিতে বেসামাল হয় জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং অর্ডার। শন উইলিয়ামস ৯, নিয়াশা মায়াভো ১ ও মাসাকাদজা ১২ রানে তার শিকার হন। তাদের বাইরে টানা দুই অর্ধশতকে বেনেট ৮১ বলে ৭ চার, ১ ছয়ে ৫৪ রানে সাজঘরে ফেরেন মিরাজের স্পিনেই। কিন্তু মাত্র ৫০.১ ওভারেই জয় ছিনিয়ে নেয় জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান তুলে।
জিম্বাবুয়ে ১০ টেস্ট ও ৪ বছর পর কোনো টেস্ট জিতল। ২০২১ সালে আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষবার টেস্ট জিতেছিল তারা। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে তারা সাড়ে ৬ বছর পর। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই সিলেটেই বাংলাদেশকে ১৫১ রানে হারিয়েছিল তারা। মাঝে ৩ টেস্ট খেলে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে।
দল হারলেও টেস্ট ক্যারিয়ারে ১২তম ৫ উইকেট শিকার হয়ে যায় মিরাজের। বাংলাদেশের মলিন পারফর্ম্যান্সে একমাত্র উজ্জ্বলতা এই অফস্পিনার। সেই সঙ্গে সাকিব আল হাসান (২৪৭) ও তাইজুল ইসলামের (২১৯) পর তিনিও বাংলাদেশী হিসেবে টেস্টে ২০০ উইকেট স্পর্শ করেন। বাংলাদেশের একমাত্র অফস্পিনার হিসেবে এই কীর্তি দেখিয়েছেন তিনি। তবে টেস্ট ইতিহাসে বিশ্বের অষ্টম অফস্পিনার হিসেবে ২০০ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
তাইজুল ইসলাম ৪৮ টেস্ট ও ৮৬ ইনিংস এবং সাকিব ৫৪ টেস্ট ও ৯১ ইনিংসে ২০০ উইকেট ছুঁয়েছেন। আর মিরাজের লেগেছে ৫২ টেস্ট, ৯৫ ইনিংস। তাই ২০০ উইকেট শিকারে মিরাজ অন্য দু’জনের চেয়ে কিছুটা মন্থর। সবমিলিয়ে সাকিব ১৯ বার ও তাইজুল ১৫ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন। সেদিক থেকেও বেশ পিছিয়ে আছেন মিরাজ।
এরপরও মিরাজ একটি ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছেন সাকিব ও তাইজুলকে। সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫২ রান দিয়ে এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০ রান দিয়ে ৫টি করে উইকেট নেন। এ ম্যাচে ১০২ রানে তার শিকার ১০ উইকেট। বাংলাদেশের বাকি ৪ বোলার মিলিয়ে পেয়েছেন মাত্র ৭ উইকেট।
৫২ টেস্টের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ৩ বার ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন মেহেদি হাসান মিরাজ। যা কোনো বাংলাদেশী বোলারের টেস্ট ক্রিকেটে সেরা সাফল্য। এই কীর্তিতে সাকিব ও তাইজুলকে ছাড়িয়ে গেছেন মিরাজ। সাকিব ৭১ টেস্ট খেলে ২ বার এবং তাইজুল ৫২ টেস্ট খেলে ২ বার করে ম্যাচে ১০ উইকেট নিতে পেরেছেন। তবে মিরাজের এই কীর্তি ম্লান হয়েছে বাংলাদেশের পরাজয়ে।
রাজু