চিটাগাং কিংসকে হারিয়ে ইতিহাস জয় করে বিপিএল টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ান শিরোপা জিতেছে ফরচুন বরিশাল। ফরচুন বরিশালের এই বিজয়ে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছে গোটা বরিশাল বিভাগের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও গ্রামের ক্রিকেট প্রেমীরা।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে শ্বাসরুদ্ধকর বিপিএল ফাইনাল খেলা শেষ হতে না হতেই তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উল্লাসে রাস্তায় নেমে এসে আনন্দ মিছিল করেছেন।
নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলো ছাড়াও ‘বরিশাল, বরিশাল’ শ্লোগানে নগরীর অলিগলি মুখরিত হয়ে ওঠে। অনেক জায়গায় আতশবাজি-পটকা ফুটিয়ে বিজয়ের উল্লাস করা হয়। কেউ কেউ আবার মোটরসাইকেল বহর নিয়েও করেছেন উল্লাস।
এছাড়া ফাইনাল খেলা উপলক্ষে নগরীর প্রায় সিংহভাগ পাড়া, মহল্লায় ভুরি ভোজের আয়োজন ছিল।
নগরীর বগুড়া রোড বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বড় পর্দায় খেলা দেখা ও খিচুড়ির আয়োজন করা সাইফুল ইসলাম সুজন বলেন, বড় পর্দায় খেলা দেখা ও খিচুড়ির আয়োজন করা হয়েছে। বরিশাল জিতেছে, আয়োজন সার্থক হয়েছে।
ক্রিকেটপ্রেমী নগরীর সদর রোড এলাকার বাসিন্দা রায়হান বলেন, শেষ ১৫ মিনিটের খেলায় রানের হার কমে যাওয়া ও একাধিক উইকেটের পতন টেনশনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৮তম ওভারে তো ধরেই নিয়েছিলাম বরিশাল হারবে। কিন্তু রিশাদের ব্যাটিং দেখে ভরসা পাই। আর কয়েক মুহুর্ত পার হতে না হতেই চ্যাম্পিয়ান ট্রফি বরিশালের হাতে, এটা এখনও ভাবতে পারছি না। এলাকার অন্য সবার সাথে তাই বিজয় মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছি।
নগরীর নতুনবাজার এলাকার বাসিন্দা সুভাস দাস বলেন, এই মুহুর্তে বরিশালবাসীর সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হচ্ছে; ভালোবাসার টিম ‘ফরচুন বরিশাল’ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে এবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
এনিয়ে টানা দুইবার ফরচুন বরিশাল বিপিএল শিরোপা নিজেদের ঘরে এনেছে। এজন্য তামিম ইকবালসহ ফরচুন বরিশাল টিমের মালিক মিজানুর রহমানসহ সকল ক্রিকেটার এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আগামীতেও মিজানুর রহমানের মালিকানায় তামিম ইকবালের নেতৃত্ব ফরচুন বরিশালের দল দেখার প্রত্যাশা জানিয়ে এসএম মিজান নামের এক দর্শক বলেন, সবারই অবদান ছিলো। এরমধ্যে তামিম অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই আমরা আশাবাদী আগামী মৌসুমে বরিশালের নেতৃত্ব তার কাঁধে থাকবে। শেষ ওভারে রিশাদ হোসেনের ছয় বড় ভূমিকা রেখেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিপিএল-এর ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে নগরীসহ বরিশাল বিভাগের প্রতিটি জেলা, উপজেলাসহ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের পাড়া ও মহল্লায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে খেলা দেখার আয়োজন করা হয়েছিলো।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশালের পক্ষ থেকে ঐতিহ্যবাহী বেলস্ পার্ক মাঠে বিশাল স্ক্রিনে খেলা দেখার আয়োজন করা হয়। যেখানে হাজারো মানুষ একত্রে খেলা দেখেন এবং শেষে বিজয় উৎসবে মেতে ওঠেন।
উল্লেখ্য, ফাইনাল খেলায় টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে চিটাগাং কিংস। যেখানে শুরুটা ছিল বেশ ভালো। পারভেজ হোসেন ইমন ও খাজা নাফে ৭৬ বলে ১২১ রানের দারুণ জুটি গড়েন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে চিটাগাং কিংস ১৯৪ রান করে। যার জবাবে ফরচুন বরিশাল ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৫ রান করে।
যারমধ্য দিয়ে ফরচুন বরিশাল ৩ উইকেটে বিজয়ী হয়।
সাজিদ