ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়ছেন ম্যাচসেরা চিটাগং কিংসের পাকিস্তানি তারকা হায়দার আলী
শেষ আশাটুকুও বাঁচিয়ে রাখার লড়াইটা করতে পারল না ঢাকা ক্যাপিটালস। বুধবার সন্ধ্যায় ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেই তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। কারণ রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে এদিন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে চিটাগং কিংস। আগে ব্যাট করে রংপুর নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৩ রান তোলে।
জবাবে ১৭.৪ ওভারে ৫ উইকেট খুইয়ে ১৪৮ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় চিটাগং। এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে তারা। সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে ইতোমধ্যে লিগ পর্ব শেষ করা দুর্বার রাজশাহী। আর টানা তৃতীয় হারে রংপুর প্রথমবার শীর্ষস্থান হারিয়েছে। শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন বরিশাল। এখন প্লে-অফ রেসে টিকে আছে চিটাগং, রাজশাহী ও খুলনা টাইগার্স। রংপুর, বরিশাল শেষ চার নিশ্চিত করায় এ তিনটি দলের মধ্যে আর দুটি উঠবে প্লে-অফে।
টস জিতে আগে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় চিটাগং। প্রথম সাক্ষাতে মিরপুরেই রংপুরের কাছে ৬ উইকেটে পরাজিত হয় তারা। এবার রংপুর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে মাত্র ৩৭ রান করতেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। সৌম্য সরকার ১৭ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ২৩ রান করে বিদায় নেন। এরপরও বড় জুটি হয়নি কিংবা রানের গতি বাড়াতে পারেনি রংপুর। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাজঘরে ফিরেছেন ২১ বলে মাত্র ৯ রান করে।
ইরফান শুক্কুরও মাত্র ১ রানে বিদায় নিলে বিপদ বেড়েছে রংপুরের। সেখান থেকে দলকে একটি লড়াইয়ের পুঁজিতে নিয়ে গেছেন ইফতিখার আহমেদ ও শেখ মেহেদি হাসান। দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকে ৭৫ রানের জুটি গড়েছেন মাত্র ৪৬ বলে। এর পেছনে মূল অবদান পাকিস্তানি ব্যাটিং অলরাউন্ডার ইফতিখারের। অন্য ব্যাটাররা যখন রান তুলতে হিমশিম খেয়েছেন, তখন তিনি মাত্র ৩৯ বলেই ফিফটি করেন।
শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৭ চার, ৩ ছক্কায় ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন ইফতিখার। ডানহাতি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ৪ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী।
জবাব দিতে নেমে ২৯ রানেই ২ উইকেট হারিয়েছে চিটাগং। প্রথম থেকেই বেশ চাপে ছিল তারা। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ২ উইকেটে সাকুল্যে মাত্র ২৯ রানই করতে পেরেছে তারা। সেখান থেকে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও পারভেজ হোসেন ইমন ২৬ বলে ৩৪ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন। তবে মিঠুন ১৫ বলে ২ ছক্কায় ২০ রানে বিদায় নেন। ১০ ওভারে ৩ উইকেটে মাত্র ৬৩ রান স্কোরবোর্ডে ওঠে চিটাগংয়ের।
পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছেন পাকিস্তানের মিডলঅর্ডার হায়দার আলী। তিনি মাত্র ১৮ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৪৮ রানে এবং জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন। অবশ্য পারভেজ ধীরস্থির থেকে ৪৩ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৪১ রান করতে পেরেছেন। রান তোলায় শ্লথ হলেও চতুর্থ উইকেটে তিনি হায়দারের সঙ্গে ৪৩ রানের যে জুটি গড়েন তাতেই জয়ের ভিত গড়ে ওঠে চিটাগংয়ের। তবে ১৮তম ওভারে পাক পেসার আকিফ জাভেদকে টানা চার ছক্কা হাঁকিয়ে হায়দার দলকে জিতিয়েছেন ১৪ বল বাকি থাকতেই।
দশম ম্যাচে এটি চিটাগংয়ের ষষ্ঠ জয়। ১২ পয়েন্ট নিয়ে এখন তিনে তারা। আরও দুটি ম্যাচ বাকি আছে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে। ইতোমধ্যেই প্লে-অফ রেসে তারা এগিয়ে গেছে রাজশাহী ও খুলনার চেয়ে। আরেকটি ম্যাচ জিততে পারলে নিশ্চিত হবে তাদের শেষ চারে খেলা।