সংবাদ সম্মেলনে টিম সাউদি
‘টেস্ট ক্রিকেট সবসময়ই আমার হৃদয়ে বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে। এত বছর আগে যে দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল, সেই একই দলের বিপক্ষে এত বড় সিরিজ দিয়ে এবং যে তিনটি মাঠ আমার কাছে অবিশ্বাস্যরকমের স্পেশাল, সেখানে খেলে বিদায় নিতে পারাটা আমার কাছে মনে হচ্ছে সবচেয়ে উপযুক্ত।’ টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের আগাম ঘোষনা দিয়ে বলছিলেন টিম সাউদি।
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের সঙ্গে তিন টেস্টের সিরিজ খেলবে টম লাথামের নিউজিল্যান্ড। ২৮ নভেম্বর ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট দিয়ে শুরু এই সিরিজ। পরের দুই টেস্ট ওয়েলিংটন ও হ্যামিল্টনে।
দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে সাদা পোশাকে মাঠ মাতিয়েছেন। গর্বিত ৩৬ বছর বয়সি ডানহাতি পেসার,‘বেড়ে ওঠার সময় আমার কেবল একটিই স্বপ্ন ছিল, নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলা। ব্ল্যাক ক্যাপদের হয়ে ১৮ বছর খেলতে পারা আমার জীবনের সর্বোচ্চ সম্মান ও প্রাপ্তি। তবে যে খেলাটা আমাকে এত কিছু দিয়েছে, সেখান থেকে সরে দাঁড়ানোর উপযুক্ত সময় মনে হচ্ছে এখনই।’
২০০৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ১৭ উইকেট নিয়ে নজর কাড়ার কদিন পরই টেস্ট দলে ডাক পান সাউদি। ওই বছরে মার্চে ১৯ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নেপিয়ারে টেস্ট অভিষেক তার। অভিষেকে প্রথম ইনিংসেই শিকার করেন ৫ উইকেট। দলের পরাজয়ের আগে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট হাতে ৯ ছক্কায় ৪৮ বলে ৭৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দ্রুতই তিন সংস্করণে দলের বড় ভরসা হয়ে ওঠেন।
সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেই বিদায় নিচ্ছেন তিনি। রেকর্ড-অর্জন তার কম নেই। স্যার রিচার্ড হ্যাডলির (৪৩১) পর টেস্টে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮৫ উইকেট সাউদির, ওয়ানডেতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২১টি আর টি-টোয়েন্টিতে ১৬৪ উইকেট নিয়ে তিনিই সবার ওপরে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে তার উইকেট ৭৭০টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৭০০ উইকেট নেই আর কারও।
নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসের সেরা সাফল্যেও তার ছিল বড় অবদান। ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে চারটিসহ ম্যাচে শিকার করেছিলেন পাঁচ উইকেট। সবশেষ ভারত সফরের আগে নিউ জিল্যান্ডের টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন তিনি। ১৪ টেস্ট, ১ ওয়ানডে ও ২৯ টি-টোয়েন্টিতে তিনি দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তার অভিষেকের পর থেকে এখনও পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের ১৩৭ টেস্টের ১০৪টিই খেলেছেন সাউদি। একজন পেসারের জন্য যা প্রায় অবিশ্বাস্য। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৩৯১ ম্যাচ, নিউজিল্যান্ডের পেসার হিসেবে যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ।
মিরাজ