ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১

তিন প্রোটিয়া ব্যাটারের অনন্য কীর্তি

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

তিন প্রোটিয়া ব্যাটারের অনন্য কীর্তি

১৭৭ রান করা টনি ডি জর্জিকে অভিবাদন জানাচ্ছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম

টেস্ট কিংবা ওয়ানডে, একসঙ্গে সেঞ্চুরির মহোৎসব দক্ষিণ আফ্রিকা এর আগেও করেছে, তবে চট্টগ্রাম টেস্টে প্রোটিয়াদের এই কীর্তি ব্যতিক্রম। সাদা পোশাকের ক্রিকেটের বিচারে ‘প্রায়’ তারকাশূন্য দলটির পক্ষে একই ইনিংসে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছেন টনি ডি জর্জি, ট্রিস্টিয়ান স্টাবস এবং উইয়ান মুল্ডার। দীর্ঘ ৭৬ বছর পর এমন ঘটনা দেখল টেস্ট ক্রিকেট।

মঙ্গলবার প্রথম দিনেই সাদা পোশাকে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ১০৬ রানে আউট হয়েছিলেন ফ্রাঞ্চাইজি টি২০’র তারকা স্টাবস। একই দিনে সেঞ্চুরির স্বাদ পাওয়া জর্জি বুধবার দ্বিতীয় দিনে থেমেছেন প্রায় ডাবল সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে, খেলেছেন ১৭৭ রানের অনবদ্য এক ইনিংস। মুল্ডারের সেঞ্চুরিটি আরও আকর্ষণীয়। সাত নম্বরে নেমে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ১০৫ রানে, সেনুরন মুথাসামি ৭৫ বলে ৬৮; এরপরই ৬ উইকেটে ৫৭৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৯৪৮ সালের পর এই প্রথম টেস্ট ক্রিকেটে একই ইনিংসে একসঙ্গে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন তিন ব্যাটসম্যান। সেবার ভারত সফরে দিল্লি টেস্টে একসঙ্গে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাযেড ওয়ালকট, গ্যারি গোমেজ ও রবার্ট ক্রিশ্চিয়ানি। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তারা করেছিলেন যথাক্রমে ১৫২ (অপরাজিত), ১০১ ও ১০৭ রান। সেই ইনিংসে সে সময়ের অন্যতম বড় তারকা এভারটন উইকসও (১২৮) হাঁকিয়েছিলেন সেঞ্চুরি।

চার সেঞ্চুরিতে ৬৩১ রান তুলেছিল জ গোদার্দের নেতৃত্বাধীন উইন্ডিজ। ড্র হয়েছিল সেই টেস্ট। ২৭ বছর বয়সি বাঁহাতি জর্জির এটি অষ্টম টেস্ট। দুই হাফ সেঞ্চুরির পর পেলেন প্রথম সেঞ্চুরির দেখা। ২৬৯ বলে ১৭৭ রানের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১২ চার ও ৪ ছক্কায়। ২৪ বছর বয়সী ডানহাতি স্টাবস প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন পঞ্চম টেস্টে এসে। এর আগে একটিই হাফ সেঞ্চুরি ছিল তার নামের পাশে। সাউথ আফ্রিকার টি২০ চ্যালেঞ্জে ১৮৩.১২ স্ট্রাইক রেটে ২৯৩ রান করলে ২০২২ আইপিএলে ২১ বছর বয়সী এ ব্যাটারকে দলে নেয় মুম্বাই। সেবার মুম্বাইয়ের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলে তার রান ছিল শূন্য ও দুই। তবে তার প্রতিভা চাপা থাকেনি। 
আইপিএলের পরপরই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টি২০ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক স্টাবসের। দেশের জার্সিতে নেমেই ২৮ বলে ৭২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ৮ ছক্কায়। এসএ টোয়েন্টির ড্রাফটে ৯২ লাখ র‌্যান্ড (৫ লাখ ২০ হাজার ডলার) পারিশ্রমিকে দল পেয়ে তিনি ছিলেন সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার। হয়ে ওঠেন টি২০’র পরিচিত মুখ। এ বছর জানুয়ারিতে টেস্ট ক্যাপও পেয়ে যান তিনি। অভিষেক টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ভালো করতে পারেননি। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে প্রথম টেস্ট ফিফটির স্বাদ পান। ত্রিনিদাদে ইনিংসটি শেষ হয় ৬৮ রানে।

ওই সিরিজের বাকি তিন ইনিংসেই ২০ ছুঁয়ে আউট হয়ে যান ৩০ করার আগেই। এরপর এই বাংলাদেশ সফর। মিরপুরে প্রথম টেস্টে আবার আউট হন ২৩ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত থাকেন ৩০ রানে। যে সম্ভাবনা নিয়ে তার ইনিংসগুলো শুরু হচ্ছিল, সেটির পূর্ণতা পেল অবশেষে চট্টগ্রামে। ২৬ বছর বয়সী ডানহাতি পেস বোলিং-অলরাউন্ডার মুল্ডার অবশ্য ২০ ওয়ানডে (সেঞ্চুরি ১টি) ও ১১টি টি২০ খেলেছেন। ১৬তম টেস্টে এসে পেলেন প্রথম সেঞ্চুরি।

×