কাগিসো রাবাদা টেস্টে ৩০০ উইকেট পেরিয়েছেন
সোমবার মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন বোলারদের দাপট দেখা গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১০৬ রানে। কিন্তু এরপর সফরকারী প্রোটিয়ারাও সুবিধা করতে পারেনি। তাইজুল ইসলামের বিধ্বংসী বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম দিন শেষে তুলতে পেরেছে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান। ৩৪ রানে তারা এগিয়ে থাকলেও লড়াইটা সমানে-সমান হয়েছে তা বলাই যায়।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেছে ৪০.১ ওভারে। আর দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাট করেছে ৪১ ওভার। আলোর স্বল্পতার জন্য ৬ ওভার কম খেলা হয়েছে। তাই মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন ১৫ মিনিট আগেই খেলা শুরু হবে।টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ এবং দেশের ১০৫তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক ক্যাপ পান জাকের আলী অনিক। তবে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার উইয়ান মুল্ডার ও কাগিসো রাবাদার দাপটে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
২৬.১ ওভার ব্যাট করে ৬০ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। মুল্ডার ততোক্ষণে ৩টি আর রাবাদা ২টি উইকেট নিয়েছেন। বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ নেন ১টি।
একপ্রান্তে লড়াই করা ডানহাতি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় টিকে ছিলেন। কিন্তু লাঞ্চ বিরতির পর তিনিও বেশিক্ষণ টেকেননি। ৯৭ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে তিনিও ৩০ রানে বিদায় নেন।
সাদমান ইসলাম ০, মুমিনুল হক ৪, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭, মুশফিকুর রহিম ১১, লিটন দাস ১, মেহেদি হাসান মিরাজ ১৩ ও জাকের আলী ২ রানে বিদায় নিয়ে চরম ব্যর্থতা দেখান। শেষদিকে তাইজুল ইসলাম ৩১ বলে ২ চারে ১৬ রান করেন।
এরপরও বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় ১০৬ রানে। এটি দেশের মাটিতে বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বনিম্ন ও মিরপুরে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। এর আগে মিরপুরে ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিমকে বোল্ড করে কাগিসো রাবাদা টেস্টে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। সবচেয়ে কম ডেলিভারি দিয়ে তিনি এই মাইলফলক ছুঁয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন এবং পাকিস্তানের কিংবদন্তি ওয়াকার ইউনুসকে পেছনে ফেলেন।
ওয়াকার ১২ হাজার ৬০২ ডেলিভারি করে এবং রাবাদা ১১ হাজার ৮১৭ ডেলিভারি করে ৩০০ উইকেট নিয়েছেন। রাবাদা, মহারাজ ও মুল্ডার ৩টি করে উইকেট নেন।
এরপর জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারের শেষ বলে প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম বোল্ড হন হাসান মাহমুদের পেসে। তারপর টনি জর্জি ও ত্রিস্তান স্টাবসের মধ্যে ৪১ রানের জুটি হয়েছে।
তাইজুল ইসলাম এই জুটি ভেঙ্গে দেন ২৭ বলে ৪ চারে ২৩ রান করা স্টাবসকে সাজঘরে ফিরিয়ে। এরপর থেকে তাইজুলের বাঁহাতি স্পিনে বড় কোনো জুটিই গড়তে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। কিন্তু টনি ৭২ বলে ৪ চারে ৩০, রায়ান রিকেলটন ৪৯ বলে ৪ চারে ২৭ রান করলে লিড পেয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ততোক্ষণে ৬ উইকেট হারিয়েছে তারা।
ক্যারিয়ারে ১৩তম বার ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখান তাইজুল। সেই সঙ্গে ২০০ টেস্ট উইকেটের মালিকও হয়েছেন সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে। তাইজুল ৪৮তম টেস্টে এই কৃতিত্ব দেখালেন ৮৫তম ইনিংসে। আর সাকিব ৫৪তম টেস্টের ৯১তম ইনিংসে ২০০ উইকেট পেরিয়েছেন। সেদিক থেকে দেশের পক্ষে এই মাইলফলকে দ্রুততম তাইজুল।
শেষ পর্যন্ত দিনের ৬ ওভার বাকি থাকতেই সমাপ্ত হয় খেলা। ৬ উইকেটে ১৪০ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৪ রানে এগিয়ে আছে তারা। ৫ উইকেট নিয়েছন তাইজুল। কাইল ভেরেইন ১৮ ও মুল্ডার ১৭ রানে ব্যাট করছেন।
মামুন