ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১

অ্যাটকিনসনের ইতিহাস

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ৩১ আগস্ট ২০২৪

অ্যাটকিনসনের ইতিহাস

টেস্ট অভিষেকের দুই মাসের মধ্যে তিনবার লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখালেন ২৬ বছর বয়সি এ ইংলিশ ক্রিকেটার

গ্রেট জেমস অ্যান্ডারসনের অবসরে ইংল্যান্ড টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন গাস অ্যটকিনসন। ১০ জুলাই ২০২৪— লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে জীবনের প্রথম ইনিংসেই ৭ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫; ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে রেকর্ডবই তছনছ করে দেওয়ার পাশাপাশি এক টেস্টেই দুইবার নাম লেখান ‘অনার্স বোর্ডে’। ২৬ বছর বয়সি ডানহাতি পেসার যে ব্যাট হাতেও ইতিহাস গড়বেন, কে ভেবেছিল? সেই লর্ডসেই আট নম্বরে নেমে ১১৫ বলে ১৪ চার ও ৪ ছক্কায় খেললেন ১১৮ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস! ১ মাস ২০ দিনের মধ্যে তিনবার নাম উঠল ‘অনার্স বোর্ডে’, দ্রুততার বিচারে এমন কীর্তি আর দ্বিতীয়টি নেই। আগেরদিনই ক্যারিয়ারের ৩৩তম টেস্ট সেঞ্চুরিতে অ্যালিস্টার কুকের সঙ্গে ইংলিশ রেকর্ডের চুড়ায় বসেছিলেন জো রুট (১৮ চারে ১৪৩)। এরপর অ্যাটকিনস-ঝড়, ধাক্কা সামলে ঠিকই প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডও পেয়েছে ৪২৭ রানের বড় সংগ্রহ।

লাহিরু কুমারার ডেলিভারি লং অফ দিয়ে চার। এরপর দুই হাত উঁচিয়ে সাদামাটা এক উদযাপন। ড্রেসিংরুম থেকে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানালেন ইংল্যান্ড দলের সতীর্থ ও কোচিং স্টাফরা। ঐতিহাসিক লর্ডসে তখন মুহুমুর্হু করতালি। আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরি করতে অ্যাটকিনসনের লাগে ১০৩ বল। এর আগে সর্বশেষ ২০১০ সালে ইংলিশদের হয়ে একই পজিশনে সেঞ্চুরি করেছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পঞ্চম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন। তিনবারই নাম উঠে গেল ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসের ‘অনার্স বোর্ডে’। শেষ পর্যন্ত অ্যাটকিনসনের ইনিংসটি থেমেছে ১১৮ রানে। ১১৫ বলে তিনি ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। এর আগে তিনি নাম তুলেছেন রথি-মহারথিদের সঙ্গে আরেকটি রেকর্ডে। এতদিন পর্যন্ত ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত লর্ডসের টেস্ট ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি ছিল পাঁচজনের, অ্যাটকিনসন সেই রেকর্ডে ষষ্ঠ নাম। অন্যরা হলেনু ইংল্যান্ডের গাবি অ্যালেন, অস্ট্রেলিয়ার কিথ মিলার, ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম, স্টুয়ার্ট ব্রড ও ক্রিস ওকস। তবে একই মৌসুমে এই ভেন্যুতে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি কেবল অ্যাটকিনসন (২০২৪) ও বোথামের (১৯৭৪)।

টেলএন্ডার ব্যাটার অ্যাটকিনসন ক্রিজে আসার আগে ইংল্যান্ডের অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। ২১৬ রানেই স্বাগতিকরা ৬ উইকেট হারিয়েছিল। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে ছিলেন কেবল জো রুট। সপ্তম উইকেটে অভিজ্ঞ এই তারকা অ্যাটকিনসনকে সঙ্গে নিয়ে ১১ বলে গড়েন ৯২ রানের জুটি। এটিই মূলত ইংলিশদের বড় রানের ভিত গড়ে দেয়। দারুণ এক ইনিংস খেলে রুট থামেন ১৪৩ রানে। ২০৬ বলের ইনিংসে তিনি ১৮টি চার মেরেছেন। এ ছাড়া বর্তমানে খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ ৩৩তম সেঞ্চুরি এখন রুটের। এতদিন ফেবারিট চারজনের এই প্রতিযোগিতা ছিল দেখার মতো, তার পরই আছেনু কেন উইলিয়ামসন (৩২), স্টিভ স্মিথ (৩২) ও বিরাট কোহলি (২৯টি)। ইংল্যান্ডের হয়েও টেস্টে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেঞ্চুরিতে ছুঁয়েছেন পূর্বসুরি অ্যালিস্টার কুককে। লঙ্কানদের হয়ে ৫ উইকেট নিয়ে অনার্স বোর্ডে নাম লিখিয়েছেন আসিথা ফার্নান্দোও।
 

 

মিরাজ //শহিদ

×