ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

বাংলাদেশের সেমিতে ওঠার চ্যালেঞ্জ

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:১৯, ২৪ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশের সেমিতে ওঠার চ্যালেঞ্জ

নারী এশিয়া কাপে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫০ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশী ওপেনার মুরশিদা খাতুন (মাঝে)।

হার দিয়ে শুরুর পর সেমিফাইনালে ওঠার রেসে থাকতে একটি জয় খুব জরুরি ছিল। কাক্সিক্ষত সেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। থাইল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলকে ৭ উইকেটে হারিয়ে বেশ ভালোভাবেই সেমিতে ওঠার রেসে টিকে আছে তারা। যদিও নেট রানরেটের কারণে ‘বি’ গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলের তিনে অবস্থান করছে বাংলাদেশের নারীরা। টানা দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট ও +৪.২৪ নেট রানরেট নিয়ে সেমি নিশ্চিতই হয়ে গেছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা নারী দলের।

তাদের নেট রানরেট থাই ও বাংলাদেশ নারী দলের পেছনে ফেলতে হলে অবিশ^াস্য ও অভূতপূর্ণ কিছু ঘটতে হবে। ২ ম্যাচে একটি করে জয় থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের। উভয় দলের পয়েন্ট ২ হলেও থাই মেয়েদের নেট রানরেট +০.১০ এবং বাংলাদেশের মেয়েদের -০.০২! তাই আজ শেষ গ্রুপ ম্যাচে মালয়েশিয়া নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে বেশ ভালোভাবেই জিততে হবে জ্যোতিদের। ম্যাচটি বেলা ২টা ৩০ মিনিটে মাঠে গড়াবে। একই দিনে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে লঙ্কান মেয়েদের মুখোমুখি হবে থাই মেয়েরা। উভয় দল জিতলে পয়েন্ট সমান ৪ হবে এবং তখন নেট রানরেটে এগিয়ে থাকা দল সেমিতে উঠবে। দুটি ম্যাচই ডাম্বুলায় অনুষ্ঠিত হবে।
ডাম্বুলায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ডু-অর-ডাই লড়াই ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের। কারণ শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে বাংলাদেশ আর মালয়েশিয়ার বিপক্ষে জিতেছে থাইল্যান্ড। সে কারণে থাই মেয়েদের কাছে কোনোভাবে হেরে গেলেই গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে বাংলাদেশের। কিন্তু সেই ম্যাচে বাংলাদেশী বোলারদের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়ে থাই মেয়েরা। যদিও ২৬ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে তারা। কিন্তু লেগস্পিনার রাবেয়া খান বোলিংয়ে এসে তছনছ করে দেন থাই ব্যাটিং লাইন।

তার ঘূর্ণিতে টানা উইকেট খোয়াতে শুরু করে থাই মেয়েরা। একাই লড়েছেন ওপেনার নাত্তায়া বুচাথাম। তিনিও ৪১ বলে ৪০ রান করে রাবেয়ার লেগস্পিনে বোল্ড হন। শেষদিকে সুলিপর্ন লাওমি ১৩ বলে ১৭ ও রোজেনান কানোহ ৯ বলে অপরাজিত ১৩ রান করেন। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৯৬ রান তুলতে সক্ষম হয় থাইল্যান্ড। রাবেয়া ৪ ওভারে ১৪ রানে ৪টি এবং রিতু মনি ২ ওভারে ১০ রানে ও সাবিকুন নাহার জেসমিন ৪ ওভারে ২৮ রানে ২টি করে উইকেট নেন। জবাবে ২৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ার পর ১১ বলে ১৭ করা দিলারা আক্তার রানআউট হন।

এরপর ৫৯ বলে ৬০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জলে ভিত গড়ে দেন মুরশিদা খাতুন ও ইশমা তানজিম। শুরুতে ১২ বলে মাত্র ১ রান করা মুরশিদা পরে আক্রমণাত্মক হয়েছেন। তিনি ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি পেয়ে যান ৫৪ বলে ৮ চারে। কিন্তু পরের বলেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। বাংলাদেশ তখন জয় থেকে ১১ রান দূরে। তার আগে ইশমাও ২২ বলে ১৬ রানে সাজঘরে ফিরেছেন। শেষ পর্যন্ত ১৭.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১০০ রান তুলে সহজ জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ। ফানিতা মায়া ও থিপাচা পুত্থাওয়াং একটি করে উইকেট নেন।
বেশ আগেভাগেই জেতার সুযোগ ছিল, কিন্তু মুরশিদা সাজঘরে ফেরার পর বাকি রান ধীরগতিতে তুলেছে বাংলাদেশ। আর সেটাই রানরেট তেমন ভালো অবস্থায় নিতে পারেনি নিগার সুলতানা জ্যোতিদের। এ কারণে পয়েন্ট টেবিলে এখনো তিনে আছে বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জেতার আশাই করছেন জ্যোতিরা। সেটি করতে পারলেই রানরেট বেশ ভালো অবস্থায় যাবে। আজ দুপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে পরে ব্যাট করলে কম ওভারে এবং আগে ব্যাট করলে বেশি রানের ব্যবধানে জিততে হবে বাংলাদেশের মেয়েদের। 
সেক্ষেত্রে রানরেট বেশ ভালো অবস্থানে যাবে। তখন সেমিতে ওঠার রাস্তা সুগম হবে। দলগত অবস্থান এবং বর্তমান পারফর্ম্যান্স অনুসারে লঙ্কান মেয়েরা শক্তিমত্তায় অনেক এগিয়ে থাই মেয়েদের তুলনায়। তাই ম্যাচটি লঙ্কানরাই জিতবে সেটাই বাস্তব সম্মত বিষয়। তারা জিতলে বাংলাদেশের ন্যূনতম ব্যবধানের জয়ও জ্যোতিদের সেমিতে পৌঁছে দেবে। কিন্তু থাই মেয়েরা কোনোভাবে অঘটন ঘটিয়ে জিতে গেলে তখন সেমিতে ওঠার জন্য হিসেবের মারপ্যাঁচে পড়তে হবে। তাই ভালোভাবেই মালয়েশিয়াকে হারানোই নিরাপদ হবে বাংলাদেশের জন্য। আর সেজন্য বাজে ব্যাটিং এবং অবশ্যই বেহাল ফিল্ডিংয়ের উন্নতি করতে হবে জ্যোতিদের।

×