ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

লিটন-রিজওয়ানের নৈপুণ্যে টানা পাঁচ জয় কুমিল্লার

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:৪৪, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

লিটন-রিজওয়ানের নৈপুণ্যে টানা পাঁচ জয় কুমিল্লার

কুমিল্লার জয়ের দুই নায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ও লিটন দাস

শুরুটা হয়েছে একেবারেই বাজে রকমের। দল টানা ৩ ম্যাচ হারের সঙ্গে সঙ্গে দেশের অন্যতম সেরা কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও জরিমানার শাস্তি পেয়ে যান। তবে কোচ সালাউদ্দিন ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস জুটি আবারও নিজেদের ফিরে পেয়েছেন। আর তাতেই এখন গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স টানা ৫ ম্যাচ জিতে রীতিমতো উড়ছে। শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুরের ম্যাচে অবশ্য খুলনা টাইগার্সকে হারাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে কুমিল্লাকে।

শেষ বল পর্যন্ত লড়াইয়ের পর খুলনা হেরেছে মাত্র ৪ রানে। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের এই ম্যাচে কুমিল্লা আগে ব্যাট করে তোলে ২০ ওভারে লিটন কুমার দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের জোড়া ফিফটিতে তোলে ২ উইকেটে ১৬৫ রান। জবাবে শেষ বলে ছক্কার প্রয়োজন থাকলেও খুলনার অধিনায়ক ইয়াসির আলী রাব্বি নিতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। তাই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬১ রানে থামে খুলনা। এটি তাদের সপ্তম ম্যাচে পঞ্চম হার। আর কুমিল্লা ৮ ম্যাচে ৫ জয়ের ১০ পয়েন্ট নিয়ে এখন তৃতীয় অবস্থানে। 
টস জিতে কুমিল্লাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় খুলনা। তৃতীয় সন্তানের বাবা হওয়ার খবরে নিজ দেশ পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছিলেন রিজওয়ান। তিনি আবার বাংলাদেশে ফিরেই সিলেটের মাঠে লিটনের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন। উদ্বোধনী জুটিতে নিজের চিরাচরিত স্বভাবে খেলে ৬৫ রান তোলেন তিনি। ইনিংসের দশম ওভারের পঞ্চম বলে লিটন সাজঘরে ফেরেন। তিনি ক্যারিয়ারের ২১তম ফিফটি হাঁকিয়ে ৪২ বলে ৯ চারে ঠিকঠাক ৫০ রানেই সাজঘরে ফেরেন নাহিদুল ইসলামের অফস্পিনে।

এরপর জনসন চার্লস নেমে রানের গতি বাড়িয়েছেন দ্রুতবেগে ব্যাট চালিয়ে। দ্বিতীয় উইকেটে তাই রিজওয়ানের সঙ্গে তার ৩৮ বলে ৬০ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে ওঠে। ফলে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় কুমিল্লা। ২২ বলে ৫টি ছক্কায় ৩৯ রান করে চার্লস সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজের বলে। তবে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন রিজওয়ান। তিনি ৪৭ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তৃতীয় উইকেটে খুশদিল শাহর (১১ বলে ১৩) অবিচ্ছিন্ন ৪০ রানের জুটি হয় তার ২৩ বলের মোকাবিলায়। ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৬৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। 
জবাব দিতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলেই তামিম ইকবালের (১১) উইকেট হারায় খুলনা। তবে দ্বিতীয় উইকেটে অ্যান্ডি বালবির্নি ও শাই হোপ ৪১ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়ে খুলনাকে ভালো অবস্থানেই রাখেন। দশম ওভারে ৩১ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় বালবির্নি রানআউট হন ৩৮ করে। এরপর হোপ ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ২১ বলে ৪৩ রানের জুটি ঝড়ো জুটিতে জয়ের সুবাস পেতে থাকে খুলনা।

মারমুখী জয় মাত্র ১৩ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ রান করে মোসাদ্দেক হোসেনের অফস্পিনে সাজঘরে ফিরলে স্বস্তি ফেরে কুমিল্লায়। পরের ওভারেই আজম খান (১) ও বেশ দ্রুতই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (৮) সাজঘরে ফিরলে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় ইমরুলের দল। তবে হোপ আর ইয়াসির খুলনার আশা জাগিয়ে রাখেন। এক সময় ৩০ বলে ৪৯ রান প্রয়োজন পড়ে তাদের। কিন্তু ১৬তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান মাত্র ৩ রান দেন, সেখানেই ম্যাচ ঘুরে যায়। পরবর্তী ১৮ বলে ৩৬ রান দরকার থাকলেও ৩১ করতে পেরেছে খুলনা।

১৯তম ওভারে হোপ ৩২ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ৩৩ রানে নাসিমের পেসে বোল্ড হয়ে যান। এরপর ইয়াসির চেষ্টা চালিয়েছেন। শেষ ওভারে ১৭ রান করতে পারেননি। মোসাদ্দেকের করা সেই জমজমাট ওভারের প্রথম বল ডট দিয়ে দ্বিতীয় বলে ১ রান নেন ওয়াহাব। এরপর টানা দুই চার হাঁকিয়ে ম্যাচে প্রাণ ফেরান ইয়াসির। পঞ্চম বলে ২ রান নিলে শেষ বলে প্রয়োজন পড়ে ছক্কার। কিন্তু ১ রানের বেশি নিতে পারেননি ইয়াসির।

শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬১ রানে থামে খুলনার ইনিংস। নাসিম ৪ ওভারে ২৯ রানে নেন ২ উইকেট। ইয়াসির ১৯ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে অপরাজিত থাকেন ৩০ রানে। 
স্কোর ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ইনিংস- ১৬৫/২; ২০ ওভার (রিজওয়ান ৫৪*, লিটন ৫০, চার্লস ৩৯, খুশদিল ১৩*; নাহিদুল ১/৩৪, ওয়াহাব ১/৩৬)।
খুলনা টাইগার্স ইনিংস- ১৬১/৬; ২০ ওভার (বালবির্নি ৩৮, হোপ ৩৩, ইয়াসির ৩০*, জয় ২৬; নাসিম ২/২৯)।
ফল ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা ॥ মোহাম্মদ রিজওয়ান (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।

×