
আধুনিক দৈনিকের যুগস্রষ্টা জনকণ্ঠ
১৯৯২ সালের প্রথম দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ এক দুঃসাহসিক অভিযানে নেমেছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তি তখনো এতটা সমৃদ্ধ হয়নি। ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন তখন দেশে আসেনি। ছিল না বেসরকারি টেলিভিশন কিংবা অনলাইন প্রযুক্তি। ফেসবুক-ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নামও দেশের মানুষ শোনেনি। মানুষ দেশ-বিদেশের সর্বশেষ সংবাদ জানতে সংবাদপত্রের ওপরই নির্ভর করত।
রাজধানীতে সকালে প্রকাশিত জাতীয় পত্রিকাগুলো দেশের কোনো কোনো এলাকায় পৌঁছতে সন্ধ্যা কিংবা পরদিন পর্যন্ত সময় লেগে যেত। এমন একটি যুগে সফল ব্যবসায়ী আতিকউল্লাহ খান মাসুদ দেশের পাঁচ জায়গা থেকে একযোগে পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শুরুতে তাঁর এই উদ্যোগ ছিল সবার কাছে অবিশ^াস্য। অনেকে এ নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি করতেও ছাড়েননি। অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার দুর্নিবার আকাক্সক্ষা, কঠোর পরিশ্রম এবং সদৃঢ় মানসিকতা তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিল নির্দিষ্ট লক্ষ্যে।
তাঁর এই অভিযান কতটা দুঃসাহসিক ছিল তা বুঝানোর জন্য বাংলাদেশে কম্পিউটার প্রযুক্তির অন্যতম পথিকৃত মোস্তাফা জব্বারের লেখা কয়েকটি লাইন তুলে ধরতে চাই। দৈনিক জনকণ্ঠের প্রকাশ ইতিহাস লিখতে গিয়ে এক নিবন্ধে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি জনকণ্ঠের প্রয়াত সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম না।
একদিন তিনি আমাকে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠান। ততদিনে আমি জেনে গেছি যে তিনি একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করবেন। আলোচনার টেবিলে বসে আমি চমকে উঠেছিলাম। তিনি কেবল একটি দৈনিক সংবাদপত্রের কথাই ভাবছিলেন না। তাঁর ভাবনায় ছিল প্রচলিত সংবাদপত্র জগতের সীমানা দেয়াল উড়িয়ে দিয়ে একটি ঢাকাকেন্দ্রিক পত্রিকার বদলে জাতীয় পত্রিকা প্রকাশ করা। সে সময় কোনো দৈনিক তো দূরের কথা সাপ্তাহিক বা মাসিক পত্রিকা তাঁর ভাবনার ধারেকাছেও চিন্তা করেনি।’
তিনি আরও লিখেন, ‘মাসুদ সাহেব আমাকে স্পষ্ট করে বললেন, তিনি ঢাকা ছাড়াও দেশের আরও চারটি প্রধান শহর থেকে জনকণ্ঠ প্রকাশ করতে চান। মনে রাখবেন তখন দেশে ইন্টারনেট আসেনি। এখন যেমন করে সারা বিশ্বের সঙ্গে ডিজিটালি যুক্ত হওয়া যায় তখন সেটি ভাবাও যেত না। আমি এই অবস্থার কথা উনাকে জানালে উনি সাফ বলে দিলেন, আমি এসব জানি না- আমি যা বলছি তা-ই করতে চাই। তাঁর কথার যে অর্থ দাঁড়ায়, পত্রিকাটি ঢাকায় কম্পোজ-মেকআপ হবে।
লেখা ও ছবি যুক্ত হবে এবং মেকআপ করা সেই পত্রিকাটির পুরোটা ৫টি শহরে হুবহু পাঠিয়ে দিতে হবে। আমি তাঁর ইচ্ছাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম।’ এরপর তিনি তাঁর লেখায় পাঁচ জায়গা থেকে পত্রিকা বের করার প্রযুক্তিগত দিক তুলে ধরেন। সর্বশেষ লিখেন, ‘মাসুদ ভাই এমন দুঃসাহসী কাজটি করে বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে সেই মাইলফলক কাজটি করলেন। অবাক হতে পারেন এটি ভেবে যে অন্য কোনো দৈনিক পত্রিকা কেন তার পথ ধরে সামনে পা বাড়াননি।
আমি মনে করি, তিনি যে দেশপ্রেম নিয়ে নগরকেন্দ্রিকতাকে রেখে পুরো দেশটাকে তাঁর ভাবনায় রেখেছিলেন, সেটি আর কোনো সম্পাদক-প্রকাশকের ধারণাতেও আসেনি। দেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে তাঁর এই অমর কীর্তি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
আতিকউল্লাহ খান মাসুদ তখন সফল ব্যবসায়ী। দোকানে গিয়ে মানুষ বলত, ‘একটি গ্লোব দেন’। আসলে গ্লোব ছিল একটি মশার কয়েলের ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ডটি এত জনপ্রিয় ছিল যে মশার কয়েল তখন গ্লোব নামেই পরিচিতি পায়। যেমনটি পেয়েছিল হোন্ডা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল কিংবা মবিল ব্র্যান্ডের লুব্রিকেন্ট (ইঞ্জিন ওয়েল)। আতিকউল্লাহ খান মাসুদ ছিলেন গ্লোব মশার কয়েলের প্রতিষ্ঠাতা।
পরবর্তী সময় তিনি আরও বেশকিছু পণ্য প্রথম বাজারে এনেছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মিহি দানার সাদা লবণ, যা গ্লোব লবণ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিল। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গ্লোব ক্যাবল, গ্লোব মেটাল এবং গ্লোব খামার ইত্যাদি। তিনিই মানুষকে দিয়েছিলেন স্বল্পমূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা। ২০০১ সালের পর রাজনৈতিক পরিবর্তনে তিনি ব্যাপক ক্ষতির শিকার হন ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে। সে এক ভিন্ন ইতিহাস।
৯২ সালের এই দুঃসাহসিক অভিযান ছিল একটি সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের দৈনিক পত্রিকা বের করা। প্রয়াত সিনিয়র সাংবাদিক বোরহান আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে তিনি নামেন সেই দুঃসাহসিক অভিযাত্রায়। লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯৯২ সালের ১৬ ডিসেম্বর পত্রিকাটি বাজারে দেওয়া হবে। নভেম্বর মাসে আমরা এক ঝাঁক নবীন-প্রবীণ সংবাদকর্মী যুক্ত হই জনকণ্ঠের এই অভিযাত্রায়। কিছুদিন পর এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন প্রখ্যাত সাংবাদিক প্রয়াত তোয়াব খান।
সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে তোয়াব ভাই ঠিক করলেন পত্রিকা প্রকাশ হবে ’৯৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। নতুন করে শুরু হলো প্রস্তুতি। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এলো সেই শুভক্ষণ। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা দিবসে বের হলো দেশের পাঁচ জায়গা (ঢাকা-চট্টগ্রাম-খুলনা-বগুড়া এবং সিলেট) থেকে প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা দৈনিক জনকণ্ঠ। দেশের সংবাদপত্র জগতে তৈরি হলো এক নতুন ইতিহাস। প্রথম দিনের পত্রিকার মূল শিরোনাম ছিল ‘একুশ এসেছে গণতন্ত্র রক্ষার চেতনা নিয়ে’।
কলেবর ছিল মূল ১২ পৃষ্ঠার, অতিরিক্ত ২০ পৃষ্ঠা। অর্থাৎ মোট ৩২ পৃষ্ঠা। এর আগে অবশ্য কিছুদিন ধরেই পরীক্ষামূলকভাবে পত্রিকা প্রকাশিত হয়। কখনো ৮ পৃষ্ঠা, আবার কখনো ১২ পৃষ্ঠা। তখন জাতীয় দৈনিকগুলো ছিল ৮ পৃষ্ঠার। মাঝেমধ্যে বিশেষ কোনো আয়োজনে পত্রিকার পৃষ্ঠা বাড়ানো হতো। জনকণ্ঠ প্রথম থেকেই ১২ পৃষ্ঠা কাগজ নিয়ে বাজারে আসে। এরপর সকল দৈনিক পত্রিকাই ১২ পাতায় যেতে বাধ্য হয়েছিল। জনকণ্ঠই ধারাবাহিকভাবে দৈনিক পত্রিকাকে রঙিন, ১৬ পৃষ্ঠা, ২০ পৃষ্ঠা এবং বিশেষ দিনে ২৮ পৃষ্ঠায় নিয়ে যায়। বর্তমানে সকল পত্রিকাই তাই করছে।
জনকণ্ঠের মূল আকর্ষণ ছিল দেশের পাঁচ জায়গা থেকে একযোগে প্রকাশ। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থায় রাজধানীবাসীর মতো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোরে একটি জাতীয় পত্রিকা হাতে পেয়ে মানুষের সে কি আনন্দ। অনেক পাঠক পত্রিকা অফিসে ফোন করে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতেন। এর বাইরেও সংবাদ পরিবেশনের নতুন ধারা, বিষয়-বৈচিত্র্য এবং সরল উপস্থাপনা দ্রুত পত্রিকাটিকে পৌঁছে দেয় অনন্য উচ্চতায়।
বলা হয়, জনকণ্ঠই দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ পত্রিকা। এক মলাটে সবকিছু। নিত্যদিনের সংবাদের পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হলো বিশেষ রিপোর্ট, ফিচার নিউজের। ভেতরের পাতাগুলোতে দেশ-বিদেশের খবরের পাশাপাশি সাজানো হলো নানা বৈচিত্র্যময় বিষয় দিয়ে। শিক্ষাসাগর, যাপিত জীবন, অপরাজিতা, আপনার ডাক্তার, খেলার খবর, আনন্দ কণ্ঠ, চতুরঙ্গ, ঝিলিমিলি, আইটি, ডি-প্রজন্ম, ভ্রমণ, সাত সতেরো, চলমান বিশ^, ক্যাম্পাস, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, অর্থনীতি, ফ্যাশন, পরিবেশ ও বিজ্ঞান, সাহিত্য পাতা ইত্যাদি বিষয় যুক্ত হলো সাপ্তাহিক বা পাক্ষিক ম্যাগাজিনের আদলে।
জনকণ্ঠই প্রথম ঈদ সংখ্যা বের করেছে সমৃদ্ধ বই আকারে। পনেরো দিন পরপর বের হতো একটি পূর্ণাঙ্গ পাক্ষিক ম্যাগাজিন। নাম ছিল ‘জনকণ্ঠ পাক্ষিক’। সবসময় মানুষের পাশে থাকার জন্য চালু হলো নিয়মিত কলাম মানুষ মানুষের জন্য, মিনি প্রেসক্রিপশন, আইনি পরামর্শ ইত্যাদি। জনকণ্ঠ হয়ে উঠেছিল দেশের সকল বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের মিলনমেলা। দৈনিক পত্রিকা জগতে সৃষ্টি হলো নতুন যুগের।
বাহারি আয়োজনে খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠল দৈনিক জনকণ্ঠ। শীর্ষস্থানে উঠে এলো খুব কম সময়ে। এরপর যারাই নতুন পত্রিকা নিয়ে এসেছেন তাদের এই ধারাকেই অনুসরণ করতে হয়েছে। দেশের দৈনিকগুলো পূর্ণাঙ্গ পত্রিকায় হয়ে উঠেছিল জনকণ্ঠের হাত ধরে।
পত্রিকার মালিক এবং সম্পাদক ছিলেন একজন সৎ, সাহসী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। এ কারণে শুরু থেকেই পত্রিকাটি যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। ১৯৯৩ সালের ২৩ জুন তারিখ সংখ্যায় সম্পাদক লিখেছিলেন ‘দুর্নীতিবাজ কয়েকজনকে অন্তত ফাঁসি দিন’ শিরোনামে সংবাদ ভাষ্য। প্রথম পাতায় প্রকাশিত তাঁর এই সংবাদ ভাষ্য সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। সাহসী ভূমিকার কারণে পত্রিকাটিকে অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
মোকাবিলা করতে হয়েছে কঠিন প্রতিকূলতা। কখনো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পত্রিকার বিজ্ঞাপন, আবার কখনো মামলায় জড়িয়ে জেলে নেওয়া হয়েছে সম্পাদককে। কখনো কখনো ঘটেছে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট। শক্তিশালী বোমা রেখে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে জনকণ্ঠ ভবন। পরম করুণাময়ের অশেষ রহমতে সেদিন রক্ষা পেয়েছিল অনেক মানুষের প্রাণ এবং জনকণ্ঠ ভবন।
সত্য প্রকাশ ও নীতির প্রশ্নে আপোষহীন থাকার কারণে মোকাবিলা করতে হয়েছে অনেক মামলা, সম্পাদক ও সাংবাদিকদের জেল পর্যন্ত খাটতে হয়েছে। ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় সম্পাদককে দুই বছরের বেশি সময় জেলে থাকতে হয়েছে। নানা প্রতিকূল পরিবেশেও জনকণ্ঠ তার চরিত্র পাল্টায়নি। নির্ভীকভাবে পত্রিকা প্রকাশ করে গেছে।
শুধু সংবাদ প্রকাশই নয়, জনকণ্ঠ সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অনেক দায়িত্ব পালন করেছে। জনকণ্ঠই প্রথম এই দেশে বাঙালির শিল্প সংস্কৃতির নিজস্ব ধারাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে এসেছে। দেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছে সমাজ তথা বিশে^র কাছে। দুর্নীতির পাশাপাশি যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে। জনকণ্ঠের লাগাতার প্রচারের ফলে সরকার অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করেছে। প্রচার মাধ্যমে নিষিদ্ধ করেছে সব ধরনের অপচিকিৎসার বিজ্ঞাপন প্রচার। জনকণ্ঠ প্রথম দেশের গুণীজনদের সম্মাননা চালু করে।
জাতীয় বসন্ত উৎসব, খেলাধুলা এবং সামাজিক কর্মকা-ে উৎসাহ ও আর্থিক পৃৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। পত্রিকার ‘মানুষ মানুষের জন্য’ কলামটি চালু করে হাজার হাজার দরিদ্র অসহায় মানুষকে চিকিৎসা ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করেছে।
তথ্যপ্রবাহের যুগে এখন প্রচুর সংবাদ মাধ্যম রয়েছে বাজারে। দৈনিক সংবাদপত্রের সংখ্যাও অসংখ্য। জনকণ্ঠ বের হওয়ার আগেও দেশে ছিল কয়েকটি সংবাদপত্র। প্রশ্ন করা যায়, জনকণ্ঠ কি সংবাদপত্র শিল্প, রাষ্ট্র ও সমাজকে বিশেষ কিছু দিতে পেরেছে, নাকি আর দশটা সংবাদপত্রের মতো বাজারে এসেছে ব্যবসার উদ্দেশ্যে? এই প্রশ্নের জবাব খুবই সহজ। বর্তমানে সবাদপত্র জগতে সবাইকে স্বীকার করতে হবে, তারা এখনো হাঁটছেন জনকণ্ঠের সূচিত পথ ধরে।
আধুনিক সংবাদপত্রের যে ধারণা জনকণ্ঠ প্রতিষ্ঠা করেছে, এখন সবাই তাই অনুসরণ করছেন। জনকণ্ঠের আগে যেসব পত্রিকা বাজারে ছিল তাদেরও আসতে হয়েছে জনকণ্ঠের পথে। রাষ্ট্র ও সমাজ চিন্তায়ও বড় ধরনের পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে জনকণ্ঠ।
সময় বয়ে যায়। নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে সুখ-দুঃখে কেটে যায় ৩২টি বছর। ২০২১ সালের ২১ মার্চ ঘটে যায় এক অপ্রত্যাশিত মর্মান্তিক ঘটনা। সবাইকে কাঁদিয়ে, না ফেরার দেশে চলে যান পত্রিকার সংগ্রামী সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ। গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন। এক অজানা আশঙ্কায় শক্ত হাতে হাল ধরেন তাঁর জীবনসঙ্গী, গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের বর্তমান চেয়ারম্যান শামীমা এ খান।
অভিভাবক হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে নতুন সম্পাদকের নেতৃত্বে শুরু হয় জনকণ্ঠের নতুন অভিযাত্রা। আজ পত্রিকার ৩৩তম জন্মদিনে নতুন কা-ারীর নেতৃত্বে এই অভিযাত্রায় অতীতের মতোই সকলের সহযোগিতা ও দোয়ার প্রত্যাশা। একই সঙ্গে পরম করুণাময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন এই প্রতিষ্ঠানটিকে তাঁর সদয় হেফাজতে রাখেন। করুণাময়ের দয়া এবং সকলের সহযোগিতা পেলে যত কঠিন সময় আসুক পত্রিকাটি এগিয়ে যেতে পারবে এর সুনাম অক্ষুণœ রেখে।