দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে বছর শুরু হয় বিএনপির
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে বছর শুরু হয় বিএনপির। এর পর সমমনা দলগুলোকে নিয়ে মাঠের আন্দোলন জোরদার করার চেষ্টা করেও তেমন সফল হতে পারেনি। তবে দীর্ঘদিন রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা দল বিএনপি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়। সারাদেশের সর্বস্তরে চাঙ্গা হয় দলটি। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার হয় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা।
তবে রাজনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিছু সুবিধাভোগী ও লোভী নেতাকর্মী বিভিন্ন জায়গায় আধিপত্য বিস্তার, দখল ও চাঁদাবাজি করতে করতে গিয়ে দলের বদনাম বয়ে আনে। অবশ্য অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব সুবিধাভোগী ও লোভী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তি নিশ্চিত করে সাধারণ মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড।
প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। এই দীর্ঘ সময় সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সরব থাকলেও ক্ষমতাসীন সরকারের টনক নড়াতে পারেনি। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা নড়বড়ে করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া ওই সরকারের সকল অনিয়ম-দুর্নীতি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহলের কাছে পৌঁছে দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে সক্ষম হয় বিএনপি। তবে তা করতে গিয়ে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
আন্দোলন করতে গিয়ে বারবার সরকার পতনের হুমকি দিয়ে বিএনপিকে হতে হয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। মামলা ও গ্রেপ্তার নির্যাতনের শিকার হতে হয় অসংখ্য নেতাকর্মীকে। তার পরও দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সর্ব স্তরের নেতাকর্মীরা মামলা-গ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিয়েই রাজপথে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে অংশগ্রহণ করাতে সরকার ও নির্বাচন কমিশন ছাড়াও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহল নানামুখী তৎপরতা চালায়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ ও বিশেষ শর্তে কারামুক্ত থাককায় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকায় লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ছিল রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। তারা তারেক রহমানের নির্দেশ মেনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে অনড় থাকে।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। তবে কিছু সমমনা দলকে নিয়ে আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করে ফেললেও এ নির্বাচন যাতে দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কাছে বৈধতা না পায় সে জন্য ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে থাকে বিএনপি।
বছরের শুরু থেকে প্রথম ৭ মাস আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে সক্রিয় ছিল বিএনপি। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণমিছিল, গণসংযোগ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে দলটি। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিবন্ধকতার শিকার হন নেতাকর্মীরা। এতে বেশ ক’জন নিহত হওয়াসহ আহত হন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। কারাবরণ করতে হয় অনেক নেতাকর্মীকে।
বিশেষ করে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি পালনের কারণে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হন। তবে নির্বাচনের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে থাকার পর ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির সরকারবিরোধী ধারাবাহিক আন্দোলন চলাকালে এক পর্যায়ে সারাদেশে ছাত্ররা চাকরিতে কোটা বৈষম্য দূর করতে আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু সরকার ছাত্রদের আন্দোলনকে আমলে না নেওয়ায় এক পর্যায়ে সরকার পতনে ছাত্র-জনতার আন্দোলন জোরদার করা হয়। ওই আন্দোলন আরও বেগবান হলে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়। তাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগের পর সারাদেশের সর্বস্তরের বিএনপি নেতাকর্মীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে দলের নেতাকর্মীরা সভা-সমাবেশ করে ব্যাপক শোডাউনের মাধ্যমে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করে। সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশে স্থায়ী মুক্তি পান। এ ছাড়া কারাগার থেকে মুক্তি পান দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘ সময় বিদেশে অবস্থান নেওয়া দলের নেতাকর্মীরাও দেশে ফিরতে থাকেন। রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বসেন বিএনপি সমর্থক লোকরা। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা প্রত্যাহার হয়ে যায়।
৭ আগস্ট নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিশাল সমাবেশ করে বিএনপি। এই সমাবেশে রাজধানী ঢাকার সকল ইউনিটসহ সারাদেশের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড বহন করে বাদ্যের তালে তালে নেচে-গেয়ে স্লোগান দিতে দিতে সমাবেশস্থলে গিয়ে হাজির হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালের কেবিন থেকে ভিডিও বার্তায় দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ করায় স্বস্তি প্রকাশ করেন।
প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর খালেদা জিয়া কোনো সমাবেশে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। এ ছাড়া লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি আওয়ামী লীগের পতনের কারণ ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ ছাড়া দলের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পেলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
৮ আগস্ট প্রফের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি এ সরকারকে স্বাগত জানায়। সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারকে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দেওয়া হয়। প্রধান (এরপর ১৮ পৃষ্ঠায়)
উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতারা বেশ ক’দফা বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে দ্রুত নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্কার শেষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
দীর্ঘদিন পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনকে নিজেদের বড় অর্জন বলে মনে করে বিএনপি। আর এ অর্জনকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তী নির্বাচনে কিভাবে ক্ষমতার আসনে যাওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে সর্বস্তরে দল গুছানোর পাশাপাশি সারাদেশে জনসংযোগ কর্মসূচি জোরদার করে বিএনপি। বিশেষ করে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে তুলে ধরেন। এ বিষয়ে জনমত সৃষ্টির পাশাপাশি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফার আলোকে সংস্কার করা হবে বলে আশ্বাস দেন।
এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলন সফল হওয়ার পেছনে বিএনপির অবদান অনেক বেশি বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এ আন্দোলন সফল করতে গিয়ে দলের ৪২২ জন নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন এবং অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জুলাই মাসের শুরুতে নতুন উদ্যমে মাঠের আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিতে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে বিএনপি। সিদ্ধান্ত হয়Ñ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন বাতিল করে নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকার গঠন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বন্ধ, ভারতের সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক বাতিল ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণার।
কিন্তু জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লে পাল্টে যায় দৃশ্যপট। নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ না থেকে বিএনপি কোটা বৈষম্য আন্দোলনে সমর্থন দেয় এবং নেতাকর্মীদের আন্দোলনে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেয় দলীয় হাইকমান্ড। যে কারণে আবারও বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার হন। তবে গ্রেপ্তার এড়াতে দলের অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যান। অভিযান চালিয়ে আবারও তালাবদ্ধ করা হয় বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়।
এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করার ঘোষণা দেয় বিএনপি। অবশেষে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজপথে জনতার বাঁধভাঙ্গা জোয়ার নেমে আসে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়। তাই ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এর ফলে দেড় যুগ পর সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মুক্ত পরিবেশে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ পাওয়ায় দেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হয় বিএনপি। তাই এ বছরটি বিএনপির একটি স্মরণীয় ও ঐতিহাসিক বছর।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণনের পর থেকে দিন যত যেতে থাকে বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি তত জোরদার করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। আর সার্চ কমিটির বাছাই করা ১০ জনের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নাম বিএনপির প্রস্তাবিত নামের তালিকায় ছিল। ২১ নভেম্বর নতুন নির্বাচন কমিশন প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ গ্রহণ করে ওই দিনই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে কাজ শুরু করেন। এর পর থেকে বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্রুত করার দাবি আরও জোরদার করা হয়।
আগের ক’বছরের মতো ২০২৪ সালেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছিলেন গুরুতর অসুস্থ। গুলশানের বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা বোর্ডের পরামর্শে চিকিৎসা নিলেও বছরের বিভিন্ন সময়ে বেশ ক’বার তাঁকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেদিনই তিনি গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফিরেন। এর পর ১৩ মার্চ এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
একদিন পর ১৪ মার্চ তিনি বাসায় ফিরেন। ৩০ মার্চ দিবাগত রাত ৩টায় আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা শেষে ২ এপ্রিল বাসায় ফিরেন তিনি। এর পর ১ মে সন্ধ্যায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ২ মে রাতে তিনি বাসায় ফিরেন। ২১ জুন গভীর রাতে আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১১ দিন চিকিৎসা শেষে ২ জুলাই সন্ধ্যায় বাসায় ফিরেন খালেদা জিয়া।
২৩ জুন তাঁর হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। ৮ জুলাই খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ৪৫ দিন পর ২১ আগস্ট গুলশানের বাসায় ফিরেন। সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা শেষে ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় ফিরেন খালেদা জিয়া।
অসুস্থ শরীর নিয়েই হুইল চেয়ারে করে এক যুগ পর ২১ নভেম্বর সেনাকুঞ্জে অনুষ্ঠিত সশস্ত্র বাহিনী দিবসে যোগ দেন তিনি। এ অনুষ্ঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অনেকেই খালেদা জিয়ার সামনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ অনুষ্ঠানে তাঁর প্রতি বিরল সম্মান প্রদর্শন করেন সবাই। বছরের শেষের দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা বিদেশে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে যাওয়া হয়নি। তবে শীঘ্রই তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে জানা যায়।
বছরের শেষ দিন পর্যন্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা দ্রুত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ছিলেন সোচ্চার। আর নির্বাচন হলে বিজয়ের ফসল যাতে ঘরে তোলা যায় সে জন্য দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে ব্যস্ত থাকেন তারা।
লেখক : শরীফুল ইসলাম