ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১

অর্ধশত বীর শহীদের সমাধিস্থল

কোল্লাপাথর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত তীর্থভূমি

মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

কোল্লাপাথর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত তীর্থভূমি

‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তি সেনা, দে-না তোরা দে-না, সে মাটি আমার অঙ্গে মাখিয়ে দে-না’। বাঙালির জাতীয় জীবনের প্রধানতম অর্জন আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালে এই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন ৩০ লক্ষ বাঙালি। সম্ভ্রম হারিয়েছেন দু’লক্ষ মা-বোন। মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের সমাধি হয়েছে সেই মাটির বুকে, যে মাটির মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তারা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মৃত্যুবরণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরও এই মাটির বুকেই হয়েছে। তাইতো এ-মাটি ধন্য। এ-মাটি আমাদের পরম আরাধ্য, পুণ্যময় ও পবিত্রভূমি।
লাখো লাখো মুক্তিযোদ্ধাদের কবর, অসংখ্য গণকবর ও বধ্যভূমি এই দেশের নানা স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তেমনি একটি সমাধিস্থল দেশের শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নে অবস্থিত। যেখানে শুয়ে আছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫০জন বীর শহীদ। ভারত সীমান্তবর্তী সালদা নদী ঘেঁষা কোল্লাপাথর গ্রামে রয়েছে এই সমাধিসৌধ। কোল্লাপাথর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি উল্লেখযোগ্য সমাধিস্থল। একটি ছোট টিলার উপরে এই সমাধিস্থল অবস্থিত। কোল্লাপাথরে দুজন বীর বিক্রম, দুজন বীর উত্তম, দুজন বীর প্রতীক পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাসহ মোট ৫০ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি রয়েছে। দুজন অমুসলিম বীর মুক্তিযোদ্ধাও এখানে শায়িত আছেন। যা মুক্তিযোদ্ধাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিচায়ক। অজ্ঞতনামা তিন জন ছাড়া বাকি ৪৭টি কবরের উপরে প্রত্যেক বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম লেখা রয়েছে।
শালদা নদী যুদ্ধক্ষেত্র ও কোল্লাপাথর সমাধি ক্ষেত্র তৈরির প্রেক্ষাপট
কসবা বাংলাদেশের একটি সীমান্তবর্তী উপজেলা। মুক্তিযুদ্ধের সময় কসবা ২ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল এবং এর দক্ষিণ-পূর্ব পাশের ভারতের আগরতলা, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘মেলাঘর’ মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। সীমান্ত এলাকা ও মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থাকার কারণে এ অঞ্চলটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্যে পরিণত হয়। তাঁরা কসবায় তাদের ঘাঁটি স্থাপন করে। ফলে অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এ এলাকায় বেশি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ সকল যুদ্ধে বিপুল সংখ্যক (সংখ্যা) পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয় এবং শাহাদাতবরণ করেন (সংখ্যা) দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাগণ।
কোল্লাপাথর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে শালদা নদী যুদ্ধক্ষেত্র। এই সম্মুখ সমরে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট বড় (সংখ্যা) বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ যুদ্ধ বলা হয়ে থাকে এই সালদা নদীর যুদ্ধগুলোকে। সালদা নদী সাব সেক্টর সামরিক দিক থেকেও ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। শালদা নদী এমন একটি নদী যেটি ভারত থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে এসেছে। ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় মুক্তিবাহিনী এই অঞ্চল দিয়ে ভারত প্রশিক্ষণে আসা-যাওয়া করত। কয়েক কিলোমিটারের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে শালদা নদী ও মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন। মন্দভাগ ও শালদা নদী গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার আরেকটা কারণ হলো এই রেললাইন ধরে পাকবাহিনীকে ঢাকা চট্টগ্রাম আসা-যাওয়া করতে হতো। তাদের খাদ্য গোলাবারুদসহ অন্যান্য রসদ এই পথেই আনা নেওয়া করতে হতো। ফলে এটি ছিল তাদের লাইফ লাইনের মতো। শালদা নদী স্টেশনটা ছিল ভারত সীমান্তবর্তী, পাকিস্তানি বাহিনী সর্বপ্রথম সালদা নদী রেলওয়ে স্টেশন ও নয়নপুর বাজারে ৩০ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের দুটি কোম্পানি নিয়োজিত রেখেছিল।
অপরদিকে মুক্তিবাহিনী চেয়েছিল সালদা নদী অঞ্চল দখল করে মুক্তাঞ্চলে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে। এই অঞ্চলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সর্বপ্রথম রেললাইনসহ গোটা এলাকা দখল করতে হবে। কারণ তাতে করে বন্ধ হয়ে যাবে ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে রেল যোগাযোগ। যা ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য লাইফ লাইন। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে যুদ্ধ করেছিলেন মুক্তিবাহিনীর ২ নম্বর সেক্টরের চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিভিন্ন প্লাটুনের যোদ্ধারা। ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ পরিকল্পনায় ও পরবর্তীতে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর এটিএম হায়দারের নির্দেশে ক্যাপ্টেন আশরাফ, ক্যাপ্টেন এম এ গাফফার, মেজর সালেক-এর নিয়ন্ত্রণাধীন তিনটি পদাতিক কোম্পানি এবং ক্যাপ্টেন আবদুল আজিজ পাশার মুজিব ব্যাটারির ফায়ার সাপোর্ট নিয়ে কোম্পানি কমান্ডারেরা এখানে বেশ কয়েকটি অপারেশন পরিচালনা করেন। তাঁরা আগস্টের শেষের দিক থেকে শালদা নদী রেল স্টেশন নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। কেবল একবার ছাড়া তা মুক্তিযোদ্ধাদের কখনোই আর হাতছাড়া হয়নি।
যেভাবে তৈরি হলো কোল্লাপাথর সমাধিস্থল :
১৯৭১ সালে সালদা নদী যুদ্ধ ক্ষেত্রসহ কসবা এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রায় ৯ মাস ধরেই এই যুদ্ধে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রায় মাঝামাঝি জুলাই মাসের দিকে সিলেটের তৈয়ব আলী নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ যুদ্ধে আহত হন। মৃত্যুর পূর্বে আহত অবস্থায় তিনি সহযোদ্ধাদের কাছে আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন যে, ‘আমিতো মনে হয় আর বাঁচবো না। মৃত্যুর পরে আমার লাশটি যেন বাংলাদেশের মাটিতে কবরস্থ করা হয়।’
তখন প্রায় সমগ্র বাংলাদেশই পাকিস্তানি হানাদারদের দখলে ছিল। কোল্লাপাথর সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় এলাকাটি একটি মুক্ত এলাকা ছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীর শেষ আকাক্সক্ষা পূর্ণ করার জন্য মন্দভাগ সাব সেক্টরের কমান্ডার, ক্যাপ্টেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবদুল গাফফার হালদার (বীর উত্তম) সীমান্তের আশপাশে কোন্ জায়গায় তাঁকে সমাহিত করা যায় তা খোঁজ নেওয়ার জন্য লোক পাঠান। তখন তারা কবর দেওয়ার জায়গার সন্ধান করতে এসে এই কোল্লাপাথরে আবদুল করিম নামে এক ব্যক্তির সন্ধান পান। মুক্তিযোদ্ধারা আবদুল করিমসহ আবদুল করিমের বাবা আ. মান্নান (বেনু ফকির)-এর কাছে এসে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীকে তাঁদের পৈতৃক ভিটায় কবর দেওয়ার অনুমতি চান। আ. মান্নান স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গেই বীর শহীদের জন্য কবরস্থানের জায়গা দিতে রাজি হয়ে যান।
শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীকে কবর দেওয়ার মাধ্যমেই কোল্লাপাথর সমাধিসৌধের গোড়াপত্তন হয়। যুদ্ধের সময় এই এলাকাটি যেহেতু মুক্ত এলাকা ছিল, সীমান্তের দুই পাড় থেকে এসে তখন বহু মানুষ তৈয়ব আলীর জানাজা নামাজে অংশগ্রহণ করেন। এরপর কসবা পার্শ্ববর্তী এলাকা, শালদা নদী এলাকা ও সীমান্ত এলাকায় যেখানেই কোনো মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছে, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের এখানে এনে কাফন-দাফন করে সমাহিত করা হয়। পাহারের টিলা কেটে মাটি সমান করে কবরস্থানের জন্য উপযুক্ত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস জুড়ে একে একে এখানে ৫০জন বীর শহীদের কবর প্রতিষ্ঠিত হয়।
কবর সংরক্ষণ, নাম ফলক স্থাপন ও সৌন্দর্য বর্ধন
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা প্রশাসক অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের কবরগুলো সংরক্ষণ করেন। তখন প্রতিটি কবরে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অঙ্কন করা ও নাম স্মৃতিফলক তৈরি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ক্যাপ্টেন আবদুল গাফফার একটি ডাইরি মেনটেইন করতেন। কবরের নামফলক নির্ধারণে তাই ক্যাপ্টেন আবদুল গাফফারের সহযোগিতা নেওয়া হয় বলে জানা যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সরকারের আমলে টিলার চতুরপাশে পাশে বাউন্ডারি ওয়াল স্থাপনসহ স্থানটিতে অনেক উন্নয়ন কাজ করা হয়। দর্শনার্থীদের জন্য এখানে একটি আধুনিক একটি রেস্ট হাউস ও একটি মসজিদ, পুকুরে পাকা ঘাট ও যাতায়াতের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। মরহুম আবদুল করিমও এই জায়গাটি কবরস্থানের স্মৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যেই স্থায়ীভাবে দান করে গেছেন।
উল্লেখ্য, একসঙ্গে এতগুলো শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আর কোথাও নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানের মুক্তিযোদ্ধারা এখানে যারা শহিদ হয়েছেন তাঁদের আত্মীয়স্বজনরা প্রতিবছর এই স্থানে তাঁদের কবর জেয়ারত করতে আসেন। অনেক সাধারণ মানুষরাও বিভিন্ন সময় এখানে এসে থাকেন। বিশেষ করে ১৬ই ডিসেম্বর এবং ২৬ মার্চে ব্যাপক জনসমাগম হয়। লোকজন বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে সমবেত হন। দর্শনার্থীদের আনাগোনায় এলাকাটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এক তীর্থভূমিতে পরিণত হয়েছে।
কোল্লাপাথরে সমাহিত ৫০জন বীর শহীদদের নাম :
(উল্লেখ্য, কবরের সিরিয়ালের নাম অনুযায়ী এই লেখা প্রস্তুত করা হয়নি)
দেশের বিভিন্ন জেলার ১০ জন
তাঁরা হলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার তৈয়ব আলী (সিলেট), বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাকির হোসেন (বীর প্রতীক) (আর কে মিশন রোড-ঢাকা), বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েক সুবেদার বেলায়েত হোসেন (বীর উত্তম) (চট্টগ্রাম), বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েক সুবেদার মো. আবদুল সালাম (বীর বিক্রম) (নোয়াখালী), বীর মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক আবদুস সাত্তার (বীর বিক্রম) (বগুড়া), বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক দর্শন আলী (ঠাকুরগাঁও), বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েক মোজাম্মেল হক (ময়মনসিংহ), বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহি মুসলীম মৃধা (ফরিদপুর), বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম (শরীয়তপুর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী আশুরঞ্জন দে (কিশোরগঞ্জ) (অমুসলিম মুক্তিযোদ্ধা)।
কুমিল্লার ১৩ জন। তাঁরা হলেনÑ
 নায়েক সুবেদার মইনুল হোসেন (বীর উত্তম) (তার নামে ঢাকা সেনানিবাস এলাকার শহীদ মইনুল সড়কের নামকরণ করা হয়), বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোশারফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী আক্কাছ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী জসিম উদ্দীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী হুমায়ুন কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক আজিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল কাসেম (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী),  বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তারু মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জামাল উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফরিদ মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাকিল মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী মো. আবদুল বারী খন্দকার।
চাঁদপুরের ৩ জন। তাঁরা হলেনÑ বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার ইলাহী বক্স পাটোয়ারী (বীর প্রতীক), বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী মো. নুরুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২১ জন। তাঁরা হলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল জব্বার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাহিদ নুরু মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফারুক আহম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফকরুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নোয়াব আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল অদুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক মো. আ. খালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল কাইয়ুম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সালাম সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আমির হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী শহিদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী আনোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল আউয়াল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাবেদ আহাম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী পরেশ চন্দ্র মল্লিক, (অমুসলিম মুক্তিযোদ্ধা) বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুর রশিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোরসেদ মিয়া ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তাজুল ইসলাম। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৩জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এখানে শায়িত আছেন।
উপসংহার : মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির গৌরব ও অহংকার। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। ১৯৭১ সালে এই দেশের মানুষ যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করত এবং যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন না করত তাহলে জাতি হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্র ও ইতিহাস থেকে আমাদের নাম চিহ্ন মুছে যেত। যারা জীবনবাজি রেখে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন সেই সমস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদেরকে আমাদের সারাজীবন মনে রাখতে হবে, সম্মান করতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের বুকে ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে পারলে যাদের দেহ গ্রহণ করে এ মাটি ধন্য হয়েছে তাদের আত্মত্যাগ সফল হবে।
উল্লেখ্য, এটি একটি অসম্পূর্ণ লেখা। কোল্লাপাথরের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস ও এখানে শায়িত সকল মুক্তিযোদ্ধার জীবনী লেখার জন্য তথ্য সংগ্রহ চলছে। উপরিউক্ত লেখায় কোনো তথ্যে অসংগতি দেখলে বা নতুন কোনো তথ্য পেলেও তা  আমাদের জানানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

আর্টিকেল তৈরির তত্ত্বাবধানে : জয়দুল হোসেন (কবি ও গবেষক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
 
তথ্যসূত্র ও অনুলিপি
* ইউকিপিডিয়া বাংলা
* মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া: রচনা: জয়দুল হোসেন (কবি ও গবেষক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
* সাক্ষাৎকার: মেজর জেনারেল জামিল উদ্দিন আহসান বীরপ্রতীক। (দৈনিক ইত্তেফাক, ০৫ মার্চ ২০২২)
* আর্টিকেল: খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা: মোহাম্মদ আবদুল গাফফার হালদার, বীর উত্তম (ডেইলি স্টার, ২৭ জানুয়ারি ২০২২)
* আর্টিকেল: দুঃসাহসিক সালদা নদীর যুদ্ধ: (ডেইলি স্টার, ১৫ নভেম্বর ২০২১)
* ব্যক্তিগত আলোচনা: জয়দুল হোসেন (কবি ও গবেষক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
* ব্যক্তিগত আলোচনা : জহিরুল ইসলাম স্বপন (গবেষক ও সংগ্রাহক, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

মোহাম্মদ আলী

×