মানিকগঞ্জের ঘিওরে বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে পালপাড়ায় মাটির খেলা তৈরিতে ব্যস্ত গৃহবধূ
নববর্ষকে বরণ করতে আগ্রহের কোনো কমতি নেই মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদের। ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে বৈশাখী মেলার জোর প্রস্তুতি চলছে। চৈত্র সংক্রান্তি থেকে বৈশাখ মাসজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলা বসবে। বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে নববর্ষের বৈশাখী মেলা।
মেলাকে সামনে রেখেই ঘিওরে প্রায় ৩ হাজার তাঁত, হস্ত ও মৃৎশিল্পী আর মিষ্টির কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছে। সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ সবাই মিলে তৈরি করছে নানা রকমের জিনিসপত্র। বাড়ির পূর্বপুরুষদের কাজে সহযোগিতা করতে ঘরে বসে নেই রমণীরা। বৈশাখী মেলার খেলনা তৈরির মাধ্যমে হাতেখড়ি দিচ্ছে পাল পাড়ার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিশুরাও। সরেজমিনে দেখা যায়, কর্মমুখর কালাচাঁদপুর, বড়টিয়া, কেনিরকান্দি পালপাড়ায় কোথাও হচ্ছে মাটি থেকে কাদা তৈরির কাজ, কোথাও হচ্ছে নানা আকারের পাত্র তৈরি। পণ্য তৈরি শেষে শুকানো পরে রং তুলির আঁচড়। পণ্য নিয়ে এ সম্প্রদায়ের লোকজন বেরিয়ে পড়বেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বৈশাখী মেলায়। মেলায় নিজেদের বানানো পণ্যের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করবেন তারা।
বড়টিয়া ইউনিয়নের নেকিরকান্গি গ্রামের অমর পাল, তরণী পাল, প্রবীণ সুখেন পাল ও গৃহবধূ শিল্পী রানী পাল জানান, তারা প্রত্যেকেই মেলার জন্য মাটি দিয়ে নানা রকমের খেলনা ও তৈজসপত্র তৈরি করছেন। চাহিদার কথা চিন্তা করে পুতুল, ব্যাংক, আম, কাঁঠাল, হরিণ, ঘোড়া, হাতি, মাছ, ময়ূর, সিংহসহ হরেক রকম শিশু খেলনা, ঘর গৃহস্থালির হাড়ি, পাতিল, ঢাকনা, ঝাজর, কলসসহ নানান তৈজসপত্র, ঘর সাজানোর জন্য ফুলদানি, টবসহ নানান জিনিসপত্র তৈরি করছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হামিদুর রহমার জানান, বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। নতুন বর্ষকে বরণের পাশাপাশি উৎসবকে পরিপূর্ণতা দেয় বৈশাখী মেলা। বৈশাখী মেলা শুধু গ্রামেই নয়, শহরে মানুষদের বাঙালির ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, ১লা বৈশাখ আমাদের জাতির জীবনে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। আমাদের কৃষ্টি, সাহিত্য ও সভ্যতার একটি অংশ পহেলা বৈশাখ। তবে পুরাতন সকল জীবনাদর্শ ফেলে এসে নবউদ্যামে চলতে শেখায় পহেলা বৈশাখ। আমাদের চেতনার ধারক-বাহক পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখের আনন্দ সবাই মিলে যেন উপভোগ করতে পারে এই প্রত্যাশা করি।