ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

অবিন্তা গ্যালারিতে ৫৪ শিল্পীর প্রাচ্যচিত্রকলা প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ২৩:২১, ১৫ মার্চ ২০২২

অবিন্তা গ্যালারিতে ৫৪ শিল্পীর প্রাচ্যচিত্রকলা প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যে কোন বস্তুর বাহ্যিক রূপকে ছাপিয়ে অন্তর্গত সৌন্দর্যের সন্ধান করে প্রাচ্যচিত্রকলা। শিল্পকলা সৃজনে পশ্চিমা রীতির পরিবর্তের প্রাচ্যের ভাবকে ধারণ করে এই ধারার চিত্রকর্ম। রেখানির্ভর ও অলঙ্কারধর্মী এই চিত্রকলার উদ্ভাসিত হয় বিষয়ের লাবণ্যময়তা। আর শিল্প সৃষ্টিতে মাঝে আপন ঐতিহ্যের অনুসন্ধানী সেই প্রাচ্যচিত্রকলার ছায়াতলে সংযুক্ত হয়েছেন ৫৪ জন চিত্রকর। ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপের (ওপিএসজি) আহ্বানে সারাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক ও স্বশিক্ষিত শিল্পীরা এঁকেছেন প্রাচ্যচিত্রকলা আঙ্গিকের ছবি। সেসব ছবি নিয়ে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার অবিন্তা গ্যালারি অব ফাইন আর্টসে চলছে প্রদর্শনী। শিরোনাম পরম সত্যের হৃদয়ঙ্গম বা রিয়েলাইজিং ডিভাইন হারমনি। নির্বাচিত ৫৪ শিল্পীর সঙ্গে প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে ১৯ জন অতিথি শিল্পীর ছবি। প্রদর্শনীটি প্রসঙ্গে আয়োজক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপের কিউরেটর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের শিক্ষক ড. মলয় বালা বলেন, এই শিল্পায়োজনের মাধ্যমে আমরা নিজেদের অস্তিত্বের কথা বলেছি। সৃজনশীলতায় নিজস্বতার রূপটি মেলে ধরেছি। প্রাচ্য চিত্রশৈলীর মূল বৈশিষ্ট্যগুলো এসব চিত্রকর্মে স্থান পেয়েছে। ভারতীয় ও চীনা শিল্পের ষড়ঙ্গের নীতি অনুসরণ করে প্রাচ্যের দরবারি; সমকালীন আধুনিক, ধারণাগত ও ঐতিহ্যগত শিল্প প্রবণতার দেখা মেলে এ আয়োজনে। এ ছাড়া জলরং কৌশলে বেশিরভাগ শিল্পকর্মেই দেশী শিল্প-সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বয়ান ও সমকালের বিষয়ভাবনা উঠে এসেছে। রয়েছে প্রাচ্যরীতির বিখ্যাত ওয়াশ পদ্ধতির চিত্রকলা, গোয়াশ, টেম্পারা ও চায়নিজ ইঙ্ক মাধ্যমের চিত্রকলাসহ এ্যাক্রিলিক, মিশ্র মাধ্যম ও নিউ-মিডিয়ার কাজ। এছাড়া ক্যালিগ্রাফি ও মিনিয়েচার বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনীর চিত্রকর্মসমূহের দৃশ্যমান হয়েছে প্রাচ্যচিত্রশৈলীর মূল বৈশিষ্ট্যগুলো। শিল্পী আবদুস সাত্তার, রফিক আহমেদ, অমিত নন্দী প্রমুখ শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম দরবারি ঘরানার অনুষঙ্গ জাড়িত। শিল্পী অমিত চন্দ্রের কাজে রয়েছে বেঙ্গল স্কুল ঘরানার লোভনীয় জলরং ওয়াশ ও ঐতিহ্যবাহী লিরিক্যাল লাইনের ব্যবহার। নিখিল দাস ও টাইগার নাজিরের চিত্রজমিন ও বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে পটশিল্পীদের আঙ্গিকে। ওয়াশ পদ্ধতিতে অনুষঙ্গে শিল্পী সুমন কুমার বৈদ্য, আয়েশা আক্তার ও কামরুজ্জাহার ল্যান্ডস্কেপ মুগ্ধতা ছড়িয়েছে শিল্পরসিকদের নয়নে। সঙ্গীতের রাগ-রাগিনী অনুপ্রাণিত জাহাঙ্গীর আলমের নিসর্গের দৃশ্যকল্প একইসঙ্গে মূর্ত ও বিমূর্ত আঙ্গিকের রসদ যোগায়। জ্যোতি পালের কাজে দেখা মেলে অজন্তা গুহাচিত্রের ধ্রুপদি ও লোকজ চিত্র-উপাদান। বাংলার টেরাকোটার ঐতিহ্যের ক্ষয়িষ্ণুতা বিষয়ে গবেষণামূলক বক্তব্য প্রকাশ করেছেন সামিনা জামান। উর্মিলা সিংহের মিনিয়েচারে বাংলার লোকসংস্কৃতি আশ্রিত সাপুড়ে জীবন ও গ্রামীণ সমাজ বিনোদনের বিলুপ্তপ্রায় দৃশ্যগুলো উঠে এসেছে। বীরেন সোম, শাকিলা খান চয়ন এবং মুসলিম মিয়র কাজে রেখার প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। ১২ মার্চ থেকে সূচনা হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ২৪ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত আটাটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। জাবিতে ‘তানভীর মোকাম্মেলের চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার ॥ জাবি সংবাদদাতা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদ এবং দর্শন বিভাগের আয়োজনে সোমবার ‘তানভীর মোকাম্মেলের চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আয়োজনে প্রধান আলোচক ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল। তিনি বলেন, একাত্তরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল এক মহাকাব্যিক ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের আত্ম-পরিচয়ের সন্ধান দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্রের মধ্যদিয়ে আমরা ইতিহাসের গভীরে প্রবেশ করতে পারি। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ মোজাম্মেল হক, দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া।
×