
ছবি: সংগৃহীত
নিজের লিঙ্কডইন গ্রোথ নিয়ে হতাশ? প্রতিদিন নিয়মিত পোস্ট করেও কাঙ্ক্ষিত ফল না পেলে মনে হতে পারে, সমস্যার কারণ অ্যালগরিদম বা ভাগ্য। কিন্তু বাস্তবে, সামান্য কিছু ভুলের কারণেই পিছিয়ে পড়ছেন আপনি — এমনটাই জানাচ্ছেন লিঙ্কডইনে ৩৭ হাজার ফলোয়ার অর্জন করা এক অভিজ্ঞ ব্যবহারকারী।
তাঁর অভিজ্ঞতা বলছে, কোনো জটিল কৌশল নয়, বরং কয়েকটি মৌলিক নীতি ধারাবাহিকভাবে মেনে চলাই লিঙ্কডইনে সফলতার মূল চাবিকাঠি। আসুন জেনে নিই সেই সাতটি সাধারণ ভুল, যা ঠিক করতে পারলে আপনার প্রোফাইলেও আসতে পারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।
১. দুর্বল হুক দিয়ে পোস্ট শুরু করা
লিঙ্কডইনে একটি পোস্টের প্রথম দুই লাইনই ঠিক করে দেয় পাঠক বাকি লেখা পড়বে কিনা। অস্পষ্ট, দুর্বল বা কর্পোরেট ভাষায় লেখা হুক পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। শক্তিশালী, নির্দিষ্ট এবং আকর্ষণীয় একটি ওপেনিং ৮ শব্দের মধ্যে তৈরি করুন। প্রয়োজনে টুইটারে পরীক্ষা করে সবচেয়ে কার্যকর হুক নির্বাচন করতে পারেন।
২. কর্পোরেট ভাষা ব্যবহার করা
আপনার অডিয়েন্স পেশাদার শব্দজটের ভক্ত নয়। সহজ, স্বাভাবিক ভাষায় কথা বলুন। পোস্ট পাবলিশের আগে পড়ে শুনুন—যদি কৃত্রিম শোনায়, শব্দ পাল্টান। "Utilize" এর বদলে "Use" লিখুন। গবেষণায় দেখা গেছে, কথোপকথনের মতো লেখা পোস্ট দ্বিগুণ এনগেজমেন্ট এনে দেয়।
৩. নিজের গল্প বলাই মুখ্য করা
কেবল নিজের অর্জন বা অভিজ্ঞতার গল্প বললে শ্রোতাদের আগ্রহ কমে যায়। বরং অডিয়েন্সের সমস্যা, স্বপ্ন ও চাহিদার প্রতি মনোযোগ দিন। তাদের জন্য কীভাবে সমাধান দিতে পারেন, সেটাই তুলে ধরুন। এতে তাদের মধ্যে আপনার প্রতি আস্থা তৈরি হবে।
৪. ব্যক্তিত্ব আড়াল করে অতিরিক্ত পেশাদার হওয়া
নিজের ব্যক্তিত্ব চেপে রাখলে পোস্ট অন্যদের ভিড়ে হারিয়ে যায়। হাসি, আবেগ ও ব্যক্তিগত গল্প প্রকাশ করুন। সফল ব্যবহারকারীরা জানেন—আসল পরিচয়ই লিঙ্কডইনে সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা।
৫. অনিয়মিত এবং লক্ষ্যহীন পোস্ট করা
ইচ্ছামতো পোস্ট করলে অডিয়েন্স এবং অ্যালগরিদম বিভ্রান্ত হয়। তিনটি নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত পোস্ট করুন এবং ফলাফল পর্যবেক্ষণ করুন। যেসব বিষয় বেশি সাড়া আনে, সে দিকেই মনোযোগ বাড়ান। ধারাবাহিকতা সৃজনশীলতার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৬. অন্যদের পোস্টে এনগেজ না করা
শুধু নিজের কনটেন্ট পোস্ট করলেই হবে না। প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট অন্যদের পোস্টে গঠনমূলক মন্তব্য করুন। "গ্রেট পোস্ট!" লিখে এড়িয়ে যাবেন না—নিজের অভিজ্ঞতা বা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি যোগ করুন। এতে নতুন অডিয়েন্সের সামনে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ পাবেন।
৭. সাইকোলজিক্যাল ট্রিগার ব্যবহার না করা
অনেক পোস্ট দেখা হয়, কিন্তু মনে দাগ কাটে না। পাঠকদের ভয়, আশা ও বিশ্বাসের জায়গায় আঘাত করলে তারা আপনাকে মনে রাখবে। পোস্টের শেষে প্রশ্ন করুন, যাতে তারা মন্তব্য করতে আগ্রহী হয়। সংবেদনশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক স্তরে সংযোগ গড়ে তুলুন।
লিঙ্কডইনে সফল হতে কোনো গোপন ফর্মুলার প্রয়োজন নেই। শুধু এই সাতটি ভুল ঠিক করুন—দৃঢ় হুক ব্যবহার করুন, বাস্তব ভাষায় লিখুন, অডিয়েন্সের প্রয়োজন বুঝুন, নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করুন, নিয়মিত পোস্ট করুন, সক্রিয়ভাবে অন্যদের সাথে যুক্ত থাকুন এবং সাইকোলজিক্যালভাবে সংযোগ তৈরি করুন। তাহলেই আপনি দেখতে পাবেন, কীভাবে লিঙ্কডইনে আপনার বিকাশ গতিময় হয়ে উঠছে।
এম.কে.