
ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে বনাঞ্চলে নিখোঁজ মানুষের অবস্থান উদ্ভিদের অদ্ভুত আচরণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে। বিষয়টি শুনতে কিছুটা ভৌতিক মনে হলেও, সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে এটি বাস্তবে অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতিতে পরিণত হতে চলেছে।
সম্প্রতি Trends in Plant Science জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানবদেহের পচন প্রক্রিয়ার ফলে "ক্যাডাভার ডিকম্পোজিশন আইল্যান্ড" নামে বিশেষ ধরনের একটি জৈবিক এলাকা সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়ায় আশপাশের মাটি ও উদ্ভিদের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটে। এমনকি, গাছের পাতার রঙের পরিবর্তন বা তাদের প্রতিফলনশক্তির (ফ্লুরোসেন্স) তারতম্য দূর থেকে ড্রোনের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব হতে পারে।
টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নীল স্টুয়ার্ট জুনিয়রের নেতৃত্বে একটি দল এই তত্ত্ব পরীক্ষা করে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্রে, যা সাধারণভাবে "বডি ফার্ম" নামে পরিচিত। তাঁরা লক্ষ্য করছেন, কীভাবে উদ্ভিদ মানবদেহের পচন থেকে নির্গত নাইট্রোজেনসমৃদ্ধ উপাদান শোষণ করে এবং এসব পরিবর্তন কেবলমাত্র মানবদেহের পচনের সাথেই যুক্ত কিনা।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, যদিও ধূমপানের মতো ব্যক্তিগত রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করার বিষয়টি এখনো গবেষণাধীন, তবে মূল লক্ষ্য পরিষ্কার: দুর্গম বনাঞ্চলের গভীরে নিখোঁজ ব্যক্তির দেহাবশেষ দ্রুত ও নিরাপদভাবে খুঁজে বের করা।
ভবিষ্যতে হয়তো কোনো গাছের অস্বাভাবিক আলো বিচ্ছুরণ বা পাতার অদ্ভুত রঙের পরিবর্তনই হারিয়ে যাওয়া মানুষের অবস্থান সম্পর্কে জানান দিতে পারে, এমনটাই আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা—প্রকৃতির ভেতর লুকিয়ে থাকা সংকেত বুঝতে পারলে হয়তো হারিয়ে যাওয়া প্রাণগুলোকে খুঁজে ফেরানো আরও সহজ হবে।
সূত্র: সায়েন্স ডেইলি
এম.কে.