
ছবি: প্রতিকী
বহু বছর আগে সরকারকে দেওয়া একটি ইউনিক প্রস্তাবনার মাধ্যমে রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানিকারকরা একটি নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলছেন, যেখানে গাড়ির পুরনো এবং নতুন উভয় মূল্য নির্ধারণ করা থাকে। জাপান সরকারের প্রতিষ্ঠান 'জাপান অটো অ্যাপ্রেইজমেন্ট ইনস্টিটিউট' প্রদত্ত এই মূল্য তালিকায় বছরের শুরু এবং শেষের বৈজ্ঞানিক তথ্যসহ মূল্য সংযোজিত থাকে। ফলে আমদানিকারকরা এই নির্ধারিত কাঠামোর বাইরে যেতে পারেন না।
অপরদিকে, নতুন গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে কোনো নির্ধারিত মানদণ্ড নেই, ফলে সেখানে অনেক গ্রে এরিয়া তৈরি হয়েছে। নতুন গাড়ির ঘোষিত মূল্যের ওপর ভিত্তি করে অনেক কম দামেও গাড়ি আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বর্তমানে সরকার গাড়ির ওপর থেকে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন, রিকন্ডিশন গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্ককরের হার পুনর্বিবেচনা করা হলে এবং মধ্যবিত্তের জন্য গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ বাড়ালে রাজস্ব আরও বৃদ্ধি পাবে। জীবনের নিরাপত্তা ও আরাম নিশ্চিত করতে সারা দেশে গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করা জরুরি বলে তারা মনে করছেন।
বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর মতো (যেমন ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড) বাংলাদেশেও গাড়ির বয়সসীমা তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে। পরিবেশগত দিক বিবেচনায় বিশ্বের সর্বোচ্চ মান রক্ষাকারী দেশগুলোতে যেখানে বয়সসীমা নেই, সেখানে বাংলাদেশে তা বজায় রাখা কার স্বার্থে—এই প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া, রিকন্ডিশন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি নিয়েও চরম বৈষম্যের অভিযোগ রয়েছে। পূর্বে ব্যক্তি পর্যায়ে বিদেশ থেকে গাড়ি এনে সেটি নিজ নামে রেজিস্ট্রেশন করতে হতো, যেখানে রেজিস্ট্রেশন ফি ছিল মাত্র ২০০০ টাকা। বর্তমানে রিকন্ডিশন গাড়ির জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ১ লাখ টাকার বেশি, যা ১৫০০ সিসির গাড়ির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অন্যদিকে, নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফি তুলনামূলক কম।
সরকারের কোনো আইনে রিকন্ডিশন গাড়ির ক্ষেত্রে বাড়তি কমিশন নির্ধারণ করা হয়নি। তবুও আমদানিকারকদের কাছ থেকে বেশি কমিশন নেয়া হচ্ছে। অথচ এই খাতের উদ্যোক্তারা বিপুল রাজস্ব প্রদান, বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের পরিবহন চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
তারা মনে করেন, রিকন্ডিশন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি নতুন গাড়ির সমান অথবা ট্রান্সফারের সমান হওয়া উচিত। কারণ এগুলো ব্যবহৃত হলেও, অন্য দেশের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন এবং সরকার নির্ধারিত ট্যাক্স প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট মহল সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে যারা আছেন তারা সমাজের প্রতিষ্ঠিত এবং জনকল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই জনগণের স্বার্থে এই বৈষম্য দূরীকরণ ও নীতিমালার পুনর্বিবেচনা জরুরি।
রবিউল হাসান