ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিপ্লব: বিচ্ছিন্ন হাত পুনঃসংযোগে চীনের চমকপ্রদ সাফল্য

প্রকাশিত: ০০:৪১, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিপ্লব: বিচ্ছিন্ন হাত পুনঃসংযোগে চীনের চমকপ্রদ সাফল্য

বিশ্ব স্বাস্থ্য সেবায় প্রতিনিয়ত অগ্রসর হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। ২০২৪ সালের এক প্রতিবেদনে বিশ্বের ১০০টি দেশের স্বাস্থ্যসেবার মানের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চিকিৎসা মানের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফ্রান্স, ভেনিজুয়েলা, নেদারল্যান্ডস ও চীনসহ আরও কয়েকটি দেশ। বিশেষ করে চীনের স্বাস্থ্যসেবায় অভাবনীয় উন্নতি এখন বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।

এই অগ্রগতির একটি অনন্য উদাহরণ ঘটে ২০১৩ সালে, চীনের হুনান প্রদেশে। সেখানকার একটি কারখানায় কাজ করার সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ‘জে ওয়ে’ নামের এক কর্মীর পুরো ডান হাত সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যেখানে অনেক দেশেই এমন ঘটনায় হাত রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব হতো, সেখানে চীনা চিকিৎসকরা দেখিয়েছেন এক চমকপ্রদ উদ্ভাবনী দক্ষতা।পায়ের সঙ্গে হাত সংযোগ: এক অভিনব সিদ্ধান্ত
জে ওয়ের বিচ্ছিন্ন হাতটি বাঁচাতে চিকিৎসকরা এক অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নেন — তার হাতটি তারই পায়ের সাথে অস্থায়ীভাবে সংযুক্ত করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রক্ত চলাচল অব্যাহত রেখে কোষগুলিকে জীবিত রাখা, যাতে ভবিষ্যতে পুনঃপ্রতিস্থাপন সম্ভব হয়।

পুরো এক মাস ধরে হাতটি পায়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যদিও তখনও স্নায়ু সংযোগ হয়নি এবং হাতটি অবস অবস্থায় ছিল, তবে রক্ত প্রবাহের কারণে হাতটি উষ্ণ ও জীবিত ছিল। জে ওয়ে নিজেই জানান, প্রথমদিকে পায়ে হাত যুক্ত থাকাটা অদ্ভুত লাগলেও ধীরে ধীরে তিনি সেটি মেনে নেন, শুধু একটু ভারী অনুভূত হতো।

অবিশ্বাস্য পুনঃপ্রতিস্থাপন
এক মাস পর সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হাতটি তার মূল অবস্থানে প্রতিস্থাপন করা হয়। সময়ের সাথে সাথে স্নায়ুর কার্যক্রম ফিরে আসে এবং জে ওয়ে ধীরে ধীরে তার হাতের অনুভূতি ও স্বাভাবিক ব্যবহারের ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করেন।

বিশ্ব চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি একটি অনন্য কীর্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চীনের এই চিকিৎসা সাফল্য প্রমাণ করে, সঠিক উদ্যোগ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়।

রাজু

×