
ছবি: সংগৃহীত
গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী ও ২০২৪ সালের রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ডেমিস হাসাবিস সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মানব-মতো কগনিটিভ ক্ষমতাসম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AGI (Artificial General Intelligence) বাস্তবতার দ্বারপ্রান্তে এবং আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যেই এটি আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠতে পারে।
টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে হাসাবিস বলেন, “AGI এখন বাস্তবতার শেষ ধাপে পৌঁছেছে। কেউ কেউ বলে, এটি আরও আগেই আসবে— তাতে আমি অবাক হব না। তবে আমার ধারণা, আমরা এখন AGI থেকে মাত্র পাঁচ থেকে দশ বছর দূরে।” তবে একইসাথে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “সমাজ কি আদৌ এর জন্য প্রস্তুত?”
হাসাবিস মনে করেন, AGI শুধু প্রযুক্তিগত বিপ্লব নয়, বরং এটি মানবজাতির জন্য এক গভীর সামাজিক ও নীতিগত চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, “এখন আমাদের ভাবতে হবে, এই প্রযুক্তি কতটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য, কারা এর ব্যবহারের অধিকার পাবে, এবং এর আন্তর্জাতিক মানদণ্ড কী হবে।”
তিনি আরও প্রস্তাব দেন, AGI-এর উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি— শুধু রাষ্ট্র নয়, গবেষক এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও। তার মতে, জাতিসংঘের মতো একটি আন্তর্জাতিক ছাতার নিচে AGI গবেষণা ও ব্যবহার তদারকির উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
এর আগেও হাসাবিস AGI-এর সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি প্রস্তাব করেছেন, AGI গবেষণার জন্য একটি সার্ন (CERN)-এর মতো আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্র গঠন করা উচিত, যেখানে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীরা একসাথে কাজ করবেন। পাশাপাশি IAEA-এর মতো একটি নজরদারি সংস্থার প্রয়োজন, যা বিপজ্জনক প্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণ করবে। সবশেষে, একটি আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের কথাও বলেন, যা এই প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করবে।
সম্প্রতি ডিপমাইন্ড একটি গবেষণাপত্রে সতর্ক করেছে যে, যদি AGI সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তবে এটি মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, “AGI যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে তা স্থায়ীভাবে মানবজাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে।”
AGI বা আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স হলো এমন এক ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যা মানুষের মতো চিন্তা করতে, শেখার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে এবং নানা বিষয়ে জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারে। সাধারণ এআই নির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রোগ্রাম করা হয়, কিন্তু AGI বহু ধরনের কাজ একসাথে করতে পারে— একজন মানুষের মতো সম্পূর্ণ বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা নিয়ে।
সূত্র: এনডিটিভি
এম.কে.