
কর্মীদের জন্য আবারও অফিসমুখী হওয়ার বার্তা দিল প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল। কিছু নির্দিষ্ট রিমোট কর্মীকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অফিসে এসে কাজ শুরু করুন, নইলে প্রতিষ্ঠান ছাড়ার প্রস্তুতি নিন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তিতে বড় বিনিয়োগের পাশাপাশি খরচ কমানোর কৌশলের অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল।
সিএনবিসি-র হাতে আসা গুগলের অভ্যন্তরীণ এক নোট অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির কয়েকটি বিভাগ স্থায়ীভাবে বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন এমন কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে, এখন থেকে তাদের ‘হাইব্রিড’ মডেলে কাজ করতে হবে। মানে, সপ্তাহে অন্তত তিন দিন অফিসে এসে কাজ করা বাধ্যতামূলক। কেউ যদি এতে রাজি না হন, তবে চাকরি হারানো বা স্বেচ্ছা প্রস্থানের বিকল্প তুলে ধরা হচ্ছে তাদের সামনে।
গুগলের টেকনিক্যাল সার্ভিসেস ও পিপল অপারেশন্স (এইচআর) বিভাগে কর্মরত অনেক রিমোট কর্মীকে ইতিমধ্যেই এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। যাঁরা অফিস থেকে ৫০ মাইলের মধ্যে থাকেন, তাঁদের জন্য এটি বাধ্যতামূলক। আর যাঁরা দূরে থাকেন, তাঁদের একবারের জন্য স্থানান্তর ভাতা দিয়ে অফিস সংলগ্ন এলাকায় বসবাসে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
তবে গুগল জানিয়েছে, এটি কোনও ‘একটি নীতিতে সবাই’ ধরনের সিদ্ধান্ত নয়। বিষয়টি নির্ধারণ হচ্ছে প্রতিটি টিমের বিচারে। গুগলের মুখপাত্র কোর্টনি মেনসিনি বলেন,“আমরা আগেও বলেছি, জটিল সমস্যা সমাধান ও উদ্ভাবনের জন্য সরাসরি অফিসে বসে একসাথে কাজ করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।”
AI-তে ফোকাস বাড়াতেই এমন রূপান্তর
২০২৩ সাল থেকেই গুগল ধাপে ধাপে কর্মী ছাঁটাই এবং টিম পুনর্গঠনের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রকল্পগুলোর জন্য সংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। প্ল্যাটফর্ম ও ডিভাইস গ্রুপ,যার মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড, ক্রোম, নেস্ট ও ফিটবিট অন্তর্ভুক্ত।এই বিভাগের অনেক কর্মীকেই এর আগেই স্বেচ্ছা অবসর নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
এ বছরের শুরুর দিকে গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সার্গেই ব্রিন AI-সংক্রান্ত টিমগুলোর কর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, অধিক সময় অফিসে কাটানোই উৎপাদনশীলতার ‘সুইট স্পট’। এমনকি তিনি সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা অফিসে কাজ করাকে আদর্শ সময় বলেও মন্তব্য করেন।
করোনার সময়ে যে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ সংস্কৃতির উত্থান ঘটেছিল, এখন সেই নমনীয়তার জায়গা নিচ্ছে পুরনো কাঠামো। প্রযুক্তি খাতের একাধিক বড় প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে রিমোট মডেল থেকে সরে এসে হাইব্রিড বা পুরোপুরি অফিস-কেন্দ্রিক মডেলে ফিরছে।
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ গুগলের কর্মী সংখ্যা ছিল প্রায় ১,৮৩,০০০, যা ২০২২ সালের তুলনায় কিছুটা কম। নতুন করে অফিসে ফিরিয়ে আনার এই পদক্ষেপকে অনেকে দেখছেন প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও নতুন বাস্তবতার আলোকে নেওয়া একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবে।
সূত্র:https://tinyurl.com/3r5f4ebf
আফরোজা