
ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবীর গভীরে, আমাদের অজান্তেই প্রতি ২৬ সেকেন্ডে একবার ঘটে যাচ্ছে এক রহস্যময় কম্পন— যেন পৃথিবীর একটি শান্ত ও স্থির হৃদস্পন্দন। এই আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক ঘটনাটি বিজ্ঞানীদের বহু দশক ধরে চমকে দিচ্ছে, যার প্রকৃত উৎস এখনো অজানা।
এই ক্ষীণ কিন্তু নিয়মিত কম্পনকে বলা হয় “২৬-সেকেন্ড মাইক্রোসিসমিক ব্যান্ড”। এটি মূলত মহাসাগরের গভীর থেকে উৎপন্ন হয়ে গোটা পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই ধরণের কম্পন অতীতের কোনো বড় ভূমিকম্প নয়, বরং এক ধরণের নীরব সংকেত, যা টেকটোনিক ও মহাসাগরীয় গতিবিধির সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা এই ‘হার্টবিট’-এর উৎস খুঁজতে বিভিন্ন তত্ত্বের দিকে ঝুঁকেছেন। একটি তত্ত্ব অনুযায়ী, বিশাল মহাসাগরীয় ঢেউ যখন উপকূল বা সমুদ্রতলের নির্দিষ্ট অংশে আঘাত হানে, তখন তা নিয়মিত চাপ সৃষ্টি করে, যা এই ছন্দময় কম্পনের কারণ হতে পারে।
অন্য এক তত্ত্বে বলা হয়েছে, সমুদ্রতলের নিচে থাকা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত কিংবা টেকটোনিক প্লেটের চলাচল এই কম্পন সৃষ্টি করে। এমনও ধারণা রয়েছে, সমুদ্রের তলদেশে অবস্থিত সেডিমেন্ট বা তলানির স্তরের ক্ষুদ্র ফাটল বা সরে যাওয়া থেকে এই মাইক্রোস্পন্দন উৎপন্ন হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা এখনো এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি, তবে গবেষণা চলছে পুরোদমে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আশা করা হচ্ছে, একদিন হয়তো এই নীরব হৃদস্পন্দনের প্রকৃত উৎস ও প্রভাব আমরা পুরোপুরি জানতে পারব।
ততদিন পর্যন্ত, পৃথিবীর এই ২৬ সেকেন্ড অন্তর হওয়া ‘হার্টবিট’ আমাদের মনে করিয়ে দেয়— এই গ্রহটি শুধু স্থির নয়, বরং তার ভেতরেও চলছে এক ছন্দময় প্রাণচাঞ্চল্য।
সূত্র: ডিসকভার ম্যাগাজিন
এম.কে.