ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

মানুষ বসবাস করার মতো নতুন গ্রহ পেয়েছে নাসা যা পৃথিবী থেকে আড়াই গুণ বড়!

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

মানুষ বসবাস করার মতো নতুন গ্রহ পেয়েছে নাসা যা পৃথিবী থেকে আড়াই গুণ বড়!

ছবিঃ সংগৃহীত

পৃথিবী থেকে আড়াই গুণ বড় একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার শক্তিশালী প্রমাণ মিলেছে। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া এই তথ্য বিজ্ঞানীদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।

ক্যামবিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নিকু মধুসূদন বলেন, আজকের দিনটা পৃথিবীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজার যে গবেষণা, সেই গবেষণায় এক আমূল পরিবর্তন এসে গেছে। কারণ, আমরা এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছি যেখানে আমরা প্রমাণ করতে পারছি—যদি কোথাও প্রাণ থাকে, যদি ‘হাইসিয়ান ওয়ার্ল্ড’ থাকে, অর্থাৎ এমন সব সমুদ্রঘেরা গ্রহ যাদের চারপাশে আছে হাইড্রোজেনসমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল, তাহলে আমরা এখন সেইসব গ্রহের ‘লাইফ সিগনেচার’ বা ‘বায়ো সিগনেচার’ শনাক্ত করতে পারি।অর্থাৎ, মহাকাশ দেখার দৃষ্টিভঙ্গিই পুরোপুরি বদলে যাচ্ছে।

নাসার ছবি ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায়, পৃথিবীর বাইরে এমন একটি গ্রহ পাওয়া গেছে যেখানে ডাইমেথাইল সালফাইড এবং ডাইমেথাইল ডিসালফাইড রয়েছে। এই দুটো গ্যাস পৃথিবীতে কেবলমাত্র জীবের মাধ্যমেই তৈরি হয়, বিশেষ করে সামুদ্রিক শৈবাল ও অনুজীবের মাধ্যমে।

K2-18b নামের এই গ্রহটির নক্ষত্র লিও কেটু—যখন লিও এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন তার আলো বিশ্লেষণ করে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ এইসব উপাদান শনাক্ত করে। বিজ্ঞানীরা গ্রহটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই গবেষণা করছিলেন, কারণ গ্রহটি একটি হ্যাবিটেবল জোনে অবস্থিত। অর্থাৎ, পৃথিবীর মতো তার নক্ষত্র থেকে খুব বেশি দূরেও নয়, আবার খুব বেশি কাছেও নয়—একটি আদর্শ দূরত্বে যেখানে তরল পানি থাকতে পারে। আর যেখানে পানি, সেখানেই তো জীবনের সম্ভাবনা!

গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে আট গুণ ভারী এবং আকারে আড়াই গুণ বড়। অধ্যাপক মধুসূদন বলেন, “যে উপায়ে এই গ্যাসগুলো শনাক্ত হয়েছে, তাতে আমরা ধরে নিতে পারি এটি একটি হাইসিয়ান ওয়ার্ল্ড। অর্থাৎ, এই গ্রহে মহাসাগর আছে যার চারপাশে হাইড্রোজেনসহ বায়ুমণ্ডল রয়েছে—যা প্রাণের জন্য উপযোগী।”

তবে, K2-18b-তে যদি প্রাণী থাকেও, তাদের সঙ্গে মানুষের দেখা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত কয়েক লক্ষ বছর। কারণ, এই গ্রহটি পৃথিবী থেকে ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে। বর্তমানে পৃথিবীতে যে ধরনের রকেট রয়েছে, সেই রকেট দিয়ে K2 গ্রহে যেতে কমপক্ষে ২৫ লক্ষ বছর লাগবে। তবে বিজ্ঞানীরা আরও দ্রুতগতির রকেট আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন, যাতে এই সময় কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।

এর আগেও বিভিন্ন গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এ ধরনের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো গবেষণাকেই বেশিদূর এগিয়ে নেওয়া যায়নি। এবারে বিজ্ঞানীরা একটু বেশি আশাবাদী, কারণ K2-18b নিয়ে গবেষণা ইতোমধ্যেই সিগমা থ্রি লেভেল-এ পৌঁছে গেছে, যেখানে ভুলের সম্ভাবনা মাত্র ০.৩%

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়নাসা-র বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এটিকে সিগমা ফাইভ পর্যন্ত নিয়ে যেতে চান, যেখানে ভুলের সম্ভাবনা এক মিলিয়নের মধ্যে মাত্র এক। এতে করে আমরা হয়তো এখনও পৃথিবীর বাইরের প্রাণীদের কাছে পৌঁছাতে পারিনি, কিন্তু অন্তত জোর দিয়েই বলা যায়—এই মহাবিশ্বে আমরা আর নিঃসঙ্গ নই।

সূত্রঃ https://youtu.be/ELPpoL33s4A?si=-fJuC_mTWuVknGFq

ইমরান

×