ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত নেকড়ে ফিরিয়ে এনেছেন বিজ্ঞানীরা

প্রকাশিত: ১১:২৩, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত নেকড়ে ফিরিয়ে এনেছেন বিজ্ঞানীরা

১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ‘ডায়ার উলফ’ নামের সাদা নেকড়ে আবারও পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসভিত্তিক কলোসাল বায়োসায়েন্সেস নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তির মাধ্যমে এ অসাধ্যকে সম্ভব করেছেন।


'ডায়ার উলফ' নামের সাদা নেকড়ের কাল্পনিক রূপ পূর্বে বহু জনপ্রিয়তার সৃষ্টি করেছিল। এবার সেই নেকড়েই বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছেন গবেষকরা, যা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তির এক যুগান্তকারী উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, এখন পর্যন্ত ১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই নেকড়ে প্রজাতির তিনটি শাবক জন্ম নিয়েছে। এর মধ্যে দুটি পুরুষ শাবকের জন্ম হয়েছে গত বছরের ১ অক্টোবর, এবং একটি নারী শাবকের জন্ম হয়েছে ৩০ জানুয়ারি। বিজ্ঞানীরা জানান, প্রাচীন ডিএনএ ক্লোনিং ও জিন সম্পাদনার মাধ্যমে এই শাবকদের জন্ম দেওয়া হয়েছে।


জন্ম নেওয়া দুটি নেকড়ের নাম রাখা হয়েছে রুমুলাস ও রেমাস। প্রায় ৪ ফুট লম্বা নেকড়ে দুটি বর্তমানে ৩৬ কেজির বেশি ওজনের। বিজ্ঞানীদের মতে, ক্লোনিংয়ের জন্য ডায়ার উলফের সবচেয়ে কাছাকাছি জীবিত প্রজাতি ধূসর নেকড়ের ডিএনএ ব্যবহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ডায়ার উলফ একসময় উত্তর আমেরিকার শীর্ষ শিকারী প্রাণী ছিল এবং তারা আকারে ধূসর নেকড়ের চেয়েও বড় ছিল।


অন্য নেকড়ে প্রজাতির তুলনায় ডায়ার উলফের শাবকগুলোর আচরণে রয়েছে ভিন্নতা। মানুষের উপস্থিতিতে সাধারণত কুকুরছানাদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়, তা এদের মধ্যে অনুপস্থিত। বরং তারা মানুষ থেকে একধরনের দূরত্ব বজায় রাখছে, যা এই প্রজাতির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে।


বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এবার তারা আরও একধাপ এগিয়ে বিলুপ্ত ম্যামথ, ডোডো ও তাসমানিয়ান বাঘ ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছেন। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই অগ্রগতি ভবিষ্যতে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে পারে।

এক সময় যেসব প্রাণীকে শুধুই ইতিহাসের পাতায় কিংবা সিনেমার পর্দায় কল্পনায় দেখা যেত, বিজ্ঞান এখন তাদের ফিরিয়ে আনছে বাস্তবে। ডায়ার উলফের প্রত্যাবর্তন কেবল একটি বৈজ্ঞানিক সাফল্য নয়, এটি একটি সময়-ভ্রমণও বটে,যেখানে প্রাচীন জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে আবারও সাক্ষাৎ ঘটছে বর্তমান মানব সভ্যতার।

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/4ur62jkv

আফরোজা

×