
ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও পর্নোগ্রাফি থেকে নাগরিকদের ‘রক্ষার’ জন্য রাতারাতি জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক নিষিদ্ধ করেছে প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র পাপুয়া নিউ গিনি।
দেশটির পুলিশ মন্ত্রী পিটার সিয়ামালিলি বলেছেন, সোমবার থেকে শুরু হওয়া ও মঙ্গলবার পর্যন্ত বিস্তৃত ফেইসবুক বন্ধের এ পরীক্ষাটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০২৪ এর কাঠামোর আওতায় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ উদ্যোগ নেওয়ার কারণ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘দায়িত্বশীল ব্যবহার’ নিশ্চিত করা ও ‘ক্ষতিকর কনটেন্ট’ থেকে জনসাধারণকে দূরে রাখা।
পাপুয়া নিউ গিনিতে আনুমানিক দশ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। তাদের জন্য ফেইসবুকে প্রবেশাধিকার বন্ধ করল দেশটি।
তবে পাপুয়া নিউ গিনির স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, অনেকেই ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করে এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ফেইসবুক ব্যবহার করছেন। “ফেইসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে অবাধে ভুয়া খবর, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, পর্নোগ্রাফি, শিশু নিপীড়ন ও সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ার মতো বিষয় মেনে নেওয়া একেবারেই অসম্ভব,” বলেছেন সিয়ামালিলি।
“আমাদের জনগণের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও কল্যাণের জন্য রীতিমতো হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে ফেইসবুকের মাধ্যমে ছড়ানো এসব চ্যালেঞ্জ।” এমন পদক্ষেপ ‘বাকস্বাধীনতা দমনের প্রচেষ্টা’ নয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। ফেইসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে ‘দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করার’ আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশ মন্ত্রী।
তিনি সতর্ক করে বলেছেন, তাদের দায়িত্বে গাফিলতি হলে পাপুয়া নিউ গিনির সরকার নিজেদের “নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য যে কোনও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না”।
ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, ফেইসবুকের ওপর দেশটির এমন আকস্মিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে। গ্রাহকদের সঙ্গে সংযোগ তৈরির জন্য এই প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভর করেন অনেক ছোট ব্যবসার মালিকরা।
সরকারের এমন পদক্ষেপকে ‘কঠোর’ বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় মন্ত্রী অ্যালান বার্ড।
“এ নতুন আইনের আওতায় পুলিশ মন্ত্রী যে কোন পর্যায়ের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন তার কোনও সীমা নেই। এটি একটি কঠোর আইন, যা তৈরি করা হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা হরণের জন্য,” বলেছেন বার্ড। “আমরা এখন বিপজ্জনক এক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর এই অত্যাচার বন্ধ করতে আমরা সবাই অক্ষম।”
পাপুয়া নিউ গিনির নিজস্ব তথ্য ও প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি অথরিটি’ বা এনআইসিটিএ’কে না জানিয়েই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে দেশটি। এনআইসিটিএ’র প্রধান নির্বাহী কিলাকুপা গুলো-ভুই জাতীয় নিরাপত্তা ও ডিজিটাল স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিকদের জন্য ফেইসবুক নিষিদ্ধের কথা পাপুয়া নিউ গিনির বিবেচনায় ছিল।
শহীদ