
ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞানীরা এমন এক অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে পালং শাকের পাতা ব্যবহার করে কার্যকরী মানব হৃদযন্ত্রের টিস্যু তৈরি করা সম্ভব। টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং বা কৃত্রিম টিস্যু তৈরির ক্ষেত্রে এটি এক যুগান্তকারী অগ্রগতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মানব শরীরে নতুন টিস্যু তৈরি করতে হলে রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহের জন্য জটিল ধমনী নেটওয়ার্ক প্রয়োজন। কিন্তু কৃত্রিমভাবে এত সূক্ষ্ম শিরা বা রক্তনালী তৈরি করা এতদিন বিজ্ঞানীদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। এবার ওর্সেস্টার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এই সমস্যার সমাধানে এক নতুন উপায় বের করেছেন।
পদ্ধতিটি কীভাবে কাজ করে?
গবেষকরা প্রথমে পালং শাকের পাতা থেকে সব উদ্ভিজ্জ কোষ সরিয়ে ফেলেন, যার ফলে কেবল পাতার সেলুলোজ কাঠামো বা ফ্রেমটি থেকে যায়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ফ্রেমে থাকা সূক্ষ্ম শিরাগুলো দেখতে অনেকটাই মানুষের রক্তনালীর মতো। এরপর বিজ্ঞানীরা এই কাঠামোর মধ্যে মানব হৃদযন্ত্রের জীবিত কোষ স্থাপন করেন। কিছুদিনের মধ্যেই এই কোষগুলো হৃদপেশির মতো কাজ করতে শুরু করে।
হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা
এই গবেষণা ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাকে ক্ষতিগ্রস্ত হৃদযন্ত্রের পেশি মেরামত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে শুধু হৃদযন্ত্র নয়, বরং হাড়, তরুণাস্থি বা অন্যান্য টিস্যুর জন্যও কাঠামো তৈরি করা সম্ভব হতে পারে।
তবে এখনো এই প্রযুক্তি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। সফলভাবে পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করা গেলে, এটি টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং ও পুনরুজ্জীবনমূলক চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক বিপ্লব এনে দেবে। উদ্ভিদের কাঠামো ব্যবহার করে মানব টিস্যু তৈরি করার এই ধারণা যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনই এটি কম খরচে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টি করবে। বলা যায়, প্রকৃতির নকশা অনুসরণ করেই বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ আরও সবুজ হয়ে উঠছে!
আসিফ