
আধুনিক প্রযুক্তির যুগে স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। যেখানে স্মার্টফোনের বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে, সেখানে এর অত্যধিক ব্যবহার স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। বিশেষত, চোখের উপর এর দীর্ঘসময় ব্যবহার ক্ষতিকারক হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
চোখের রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্টফোনে অতিরিক্ত সময় কাটানো মানুষের চোখে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে চোখের দৃষ্টিশক্তি এবং চোখের পেশী। "স্মার্টফোনের স্ক্রীনে দীর্ঘসময় তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের পেশী সংকোচন হতে পারে, যা পরবর্তীতে চোখের নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। একে 'স্ক্রীন সিনড্রোম' বা 'ডিজিটাল আই স্ট্রেইন' বলা হয়," বলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. সাদিকুল ইসলাম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনের স্ক্রীনের ব্লু লাইটও চোখের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। এই ব্লু লাইট চোখের রেটিনায় প্রবেশ করে, যা দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে চোখের সমস্যা বাড়াতে পারে। ড. সাদিকুল ইসলাম আরও বলেন, "যে কোনো ধরনের স্ক্রীনে দীর্ঘসময় তাকিয়ে থাকার ফলে চোখ শুকিয়ে যেতে পারে, ফলে চোখে জ্বালা, অস্বস্তি ও মাথাব্যথা হতে পারে।"
তবে, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কিছু সহজ উপায়ও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, প্রতি ২০ মিনিটে একবার চোখ বন্ধ করে ২০ সেকেন্ডের জন্য দূরের কিছু দেখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। এছাড়াও, নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করানো এবং স্মার্টফোনের স্ক্রীন ব্রাইটনেস কমিয়ে ব্যবহার করা স্বাস্থ্যকর হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) স্মার্টফোন ব্যবহারে ২ ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় না করার পরামর্শ দিয়েছে, বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম আরও কঠোরভাবে অনুসরণ করা উচিত।
স্মার্টফোন ব্যবহারের সঠিক সময় এবং নিয়ম মেনে চললে, প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকা সম্ভব। তাই সবাইকে সচেতন হতে এবং স্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
সাজিদ