
ছবি:সংগৃহীত
বাংলাদেশে স্মার্টফোন তৈরিতে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে 'ইনফিনিক্স'। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে নারায়ণগঞ্জের মোগরাপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত ‘আইস্মার্টইউ টেকনোলজি বিডি লিমিটেড’ কারখানায় উৎপাদিত হচ্ছে বিশ্বমানের স্মার্টফোন, যা দেশের বাজারের পাশাপাশি ভবিষ্যতে রপ্তানির সুযোগ তৈরি করতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তি, কঠোর মাননিয়ন্ত্রণ এবং দক্ষ কর্মশক্তির সমন্বয়ে, প্রতি মাসে এখানে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরি হচ্ছে। প্রযুক্তি খাতের বিকাশের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি দেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (পিএমসি) মো. রাশেদুল হাসান জানান, এখানে প্রতিটি উপাদান নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়, যাতে তাদের গুণগত মান অক্ষুণ্ন থাকে। পিসিবির ম্যাটেরিয়াল যেমন, আইসি প্রোডাকশনে পাঠানোর আগে ওভেন মেশিনে রাখা হয় এবং স্টোরেজে ভ্যাকুয়াম মেশিনের মাধ্যমে প্যাকেটের বাতাস বের করে উপাদানের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা হয়।
অ্যাসিস্ট্যান্ট টিম লিডার (এসএমটি ইঞ্জিনিয়ারিং) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এসএমটি ইউনিটে পিসিবির ওপর ছোট ছোট কম্পোনেন্ট মাউন্ট করা হয়, যা ‘‘সার্ফেস মাউন্ট টেকনোলজি’’ নামে পরিচিত। প্রতিটি কম্পোনেন্ট মেশিনে মাউন্ট করা হয় এবং দক্ষ কর্মীরা তা পর্যবেক্ষণ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি উপাদান কর্মীদের দ্বারা ওয়ান বাই ওয়ান চেক করা হয় এবং টেস্টিং লাইনে পিসিবিগুলো জিগ এবং দক্ষ কর্মীদের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়, যাতে কাস্টমার ডিমান্ড ও কোয়ালিটি সঠিকভাবে নিশ্চিত করা যায়।’
প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, ব্যাটারি ও ডিসপ্লের মান যাচাইয়ের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (কোয়ালিটি) মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ইনফিনিক্স সব সময় নিজেদের পণ্যের কোয়ালিটি উন্নত করতে ভালো মানের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করে। ব্যাটারির পারফরম্যান্স, ক্যাপাসিটি টেস্ট, চার্জ-ডিসচার্জ সাইকেল, ইভ্যালুয়েশনসহ ওভারঅল প্রোটেকশন পরীক্ষা করা হয়।’
মো. সাজেদুর রহমান আরও জানান, ডিসপ্লের ক্ষেত্রে ইনফিনিক্স কালার অ্যাকুরেসি ও ব্রাইটনেস যাচাই করে এবং ডিসপ্লের রিলায়াবিলিটি নিশ্চিত করতে স্ট্রেস টেস্ট স্টিমুলেশন করা হয়। প্রসেসরের কার্যক্ষমতা পর্যালোচনায় রানিং বেঞ্চমার্ক, থার্মাল ইফিসিয়েন্সি ও লো-পাওয়ার অপারেশন ইফিসিয়েন্সির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রতিটি স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ার আগে একাধিক পর্যায়ে মান পরীক্ষা করা হয়। অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (প্রোডাকশন) মো. আবদুর রউফ জানান, ইনফিনিক্সের সব ম্যাটেরিয়াল আন্তর্জাতিক মানের। এগুলো প্রথমে মেশিনের মাধ্যমে যাচাই করা হয় এবং তারপর দক্ষ কর্মীদের দ্বারাও পরীক্ষা করা হয়। আট ঘণ্টার রানিং টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে ফোনটি ত্রুটিমুক্ত।
ইনফিনিক্স ফোনের অ্যাসেম্বলি ইউনিটেও মাননিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি রয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট টিম লিডার (অ্যাসেম্বলি ইঞ্জিনিয়ারিং) মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘অ্যাসেম্বলি লাইনে, আইএসও স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, অডিও সেকশন, অ্যানটেনা স্টেশন ও ক্যামেরা পরীক্ষা করার জন্য ওআইএস ও ডিএসসি মেশিন রয়েছে। এখানে ফোনের প্রতিটি অংশ নির্ভুলভাবে পরীক্ষা করা হয়, যাতে গ্রাহকদের সেরা মানের ডিভাইস প্রদান করা যায়।’
আঁখি