
ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর এই আধুনিক সময়ে কম্পিউটার-স্মার্টফোন আমাদের অনেকেরই নিত্যদিনকার সঙ্গী। পেশাগত কারণেও একটা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারে চোখ রেখে কাজ করতে হয় অনেককে। এটা চোখের পক্ষে ক্ষতিকর। এই ক্ষতি থেকে চোখকে বাঁচিয়ে রাখতে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। চলুন জেনে নিই এমন কিছু বিষয়, যা আপনার চোখকে সুরক্ষা দিতে ভূমিকা রাখবে
অফিসে হোক বা বাড়িতে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় বসে কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে চোখ এখন সবারই থাকে। শুধু কম্পিউটার বা ল্যাপটপই নয়, সমস্যা বাড়িয়েছে অত্যধিক মাত্রায় স্মার্টফোনের ব্যবহারও। স্মার্টফোনের পর সাধারণ মানুষ এখন অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ভরশীল। কেউ ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ব্যবহার না করলেও ফোনের ব্যবহার সর্বক্ষণই করছেন। হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জারে টেক্সট করার পাশাপাশি ইন্টারনেট সার্ফিং সবকিছুতেই এখন ফোনের উপরে অনেক বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল মানুষ। আর তাতেই বাড়ছে নানারকম সমস্যা। সেই তালিকায় রয়েছে চোখও।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই মোবাইলে চোখ। তারপর স্কুল-কলেজ বা অফিসে যাওয়ার সময়ও স্মার্টফোন বা ট্যাবের ব্যবহার। কাজের চাপ এখন সবারই অনেক বেশি। কিন্তু চোখকেও তো বিশ্রাম দিতে হবে। অন্তত অফিসে পৌঁছে যাতে গোটা সময় কম্পিউটারে চোখ না রাখতে হয়, সেই বিষয়টাও মাথায় রাখা প্রয়োজন। কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় কম্পিউটার-স্মার্ট ফোন ব্যবহারেই বাড়ছে চোখের সমস্যা। যার মধ্যে অন্যতম ‘ড্রাই আইস’। ঘরে সঠিক আলোর ব্যবহার করা প্রয়োজন। খুব কম আলোয় বা অন্ধকারে মোবাইল বা কম্পিউটার করা চোখের জন্য একেবারেই ভালো নয়। রাতে ঘর অন্ধকার করে শুয়ে শুয়ে স্মার্টফোনে সিনেমা দেখা বা সোশ্যাল মিডিয়া করা তাই কিছুটা কমান।
কম্পিউটার মনিটরে অ্যান্টি গ্লেয়ার স্ক্রিন ব্যবহার করে এবং চশমায় অ্যান্টি রিফ্লেকটিভ প্লাস্টিকের কাচ ব্যবহার করলে অনেকটাই লাভ পাওয়া যায়। মনিটর এবং স্মার্টফোনের ব্রাইটনেসও ঠিকঠাক করে রাখুন। কাজ করার ফাঁকেই ঘন ঘন পলক ফেলুন। কারণ কম্পিউটারে কাজ করার সময় চোখের পলক পড়া কমে যায়। ফলে চোখের পানি কমে যায় ও চোখে শুষ্কতা বা ড্রাই আইসের সমস্যা দেখা যায়। এর ফলে চোখে ক্লান্তিও অনেক বাড়ে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আই ড্রপ ব্যবহার করুন। দিনে অন্তত তিন থেকে পাঁচবার সেই ড্রপ দিলে চোখে অনেকটাই আরাম পাবেন।
অফিসে কাজের ফাঁকেই চোখের কয়েকটা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। ঘরের বাইরে দেখুন। তাকাতে পারেন গাছপালার দিকেও। যদি সেটা সম্ভব না হয়। কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকান। ভুলেও আবার ওইসময় ফোন নিয়ে বসে পড়বেন না। চোখের ব্যায়ামের পাশাপাশি মাঝেমধ্যেই চেয়ার থেকে উঠে শরীর কিছুটা স্ট্রেচ করে নিন। নাহলে ঘাড়ে, কাঁধে বা পিঠেও ব্যথা হতে পারে। মাঝেমধ্যে কাজের থেকে বিরতি নিন। ধরুন আপনি এক ঘণ্টা টানা কম্পিউটারে কাজ করছেন, তাহলে কাজ বন্ধ করে ৫-১০ মিনিট অন্য কোথাও তাকান বা ঘুরে আসুন। কাজের জায়গাও ঠিকঠাক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। কম্পিউটারে কাজ করার চেয়ারটি হাইড্রোলিক হলে ভালো হয়। এতে কাজের সময় চোখের উচ্চতা কম্পিউটার মনিটরের চেয়ে সামান্য উঁচুতে থাকে। মনিটর চোখের বরাবর থাকতে হবে। মনিটর বাঁকা থাকলে অক্ষরগুলোর পরিবর্তন হতে পারে, এবং চোখ ব্যথার কারণ হতে পারে।