ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫, বাংলাদেশ পর্বের প্রস্তুতি শুরু করলো বেসিস

প্রকাশিত: ১৯:০১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৯:০১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫, বাংলাদেশ পর্বের প্রস্তুতি শুরু করলো বেসিস

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বের বৃহত্তম হ্যাকাথন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫-এর বাংলাদেশ পর্ব আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। টানা ১২তম বারের মতো এই আয়োজন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বেসিস, যা বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় পরিচালিত হবে।

এই উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেসিস অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির, কমিটির সদস্য (প্রশাসন) ইমরুল কায়েস পরাগ, মোস্তাইন বিল্লাহ এবং এ এইচ এম রোকমুনুর জামান রনি। এছাড়া, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ পর্বের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান এবং আরিফুল হাসান অপু উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের সাফল্যের ধারাবাহিকতা
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসা প্রতি বছর NASA Space Apps Challenge আয়োজন করে, যেখানে বিশ্বের ১৮৫টি দেশের প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, শিক্ষাবিদ এবং উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন। এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করা।

বাংলাদেশ এই প্রতিযোগিতায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে মোট চারবার, যার মধ্যে টানা তিনবার শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। বেসিসের উদ্যোগে বাংলাদেশের ৯টি শহর—ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা—থেকে শিক্ষার্থীরা এই বৃহৎ হ্যাকাথনে অংশ নেয়।

শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ আয়োজন
এ বছর স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়ার্কশপ ও সেমিনার আয়োজন করা হবে, যা শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এছাড়া, অনলাইন ডাটা বুট ক্যাম্প আয়োজন করা হবে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা ডেটা বিশ্লেষণ ও প্রজেক্ট উন্নয়নের প্রশিক্ষণ পাবেন।

প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহী টিমগুলোর জন্য বিশেষজ্ঞ মেন্টরদের সহায়তা নিশ্চিত করা হবে, যাতে তারা মূল হ্যাকাথনের জন্য তাদের প্রকল্প যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে পারে। প্রতিটি টিমকে প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সাপোর্টও প্রদান করা হবে, যা তাদের উদ্ভাবনী ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগ্রহীরা আজ থেকেই https://nsac.basis.org.bd লিঙ্কের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন।

বেসিসের প্রত্যাশা
বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, "বাংলাদেশের প্রযুক্তি দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে বৈশ্বিক মঞ্চে তুলে ধরতে আমরা টানা ১২ বছর ধরে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ আয়োজন করে আসছি। টানা তিনবার বিশ্বসেরা হওয়া আমাদের তরুণদের মেধারই প্রমাণ। আমরা আশাবাদী, এবারও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে বিশ্বকে মুগ্ধ করবে।"

তিনি আরও বলেন, "প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্ভাবন বেরিয়ে আসে। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা সবক্ষেত্রে ভালো করছে, আমি আশাবাদী মহাকাশ গবেষণাতেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ পর্বের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান বলেন, "এবারের চ্যালেঞ্জে আমরা ২ লাখ শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত করার পাশাপাশি সরাসরি প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি উদ্ভাবনী চিন্তাধারা ও বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে। এখন আমাদের সময় এসেছে বিশ্বকে দেখানোর যে আমরা প্রযুক্তি, সৃজনশীলতা এবং সমস্যার সমাধানে কতটা দক্ষ।"

উদ্ভাবনের পথে এগিয়ে বাংলাদেশ
বেসিসের লক্ষ্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করা। আগের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছরও বাংলাদেশ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ট্রফি অর্জনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

মারিয়া

×