ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১

ধেয়ে আসছে গ্রহাণু, কী হবে পৃথিবীর?

প্রকাশিত: ০২:৫১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ধেয়ে আসছে গ্রহাণু, কী হবে পৃথিবীর?

ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে একটি বিশাল গ্রহাণু, যার নাম ২০২৪ ওয়াইআর৪। সম্প্রতি নাসার সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজ (সিএনইওএস) এটি শনাক্ত করেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি চলে আসবে। সম্ভাব্য দূরত্ব হতে পারে মাত্র ১,০৬,২০০ কিলোমিটার। তবে কক্ষপথের হিসাব-নিকাশে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকায় এটি সরাসরি পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গ্রহাণুর পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা ১/৮৩, যা ২০০৪ সালের পর থেকে আবিষ্কৃত গ্রহাণুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং নাসার সেনট্রি রিস্ক টেবিলেও এটি ঝুঁকিপূর্ণ গ্রহাণুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।

নাসার অ্যাটলাস প্রোজেক্টের টেলিস্কোপ এটি প্রথম শনাক্ত করে। পরে ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভের পর্যবেক্ষণে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নাসার গবেষক ডেভিড র‍্যাঙ্কিন জানিয়েছেন, মানুষকে এখনই ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। সম্ভাব্য প্রভাব খুবই কম। এটি আমাদের পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি।

যদি ২০২৪ ওয়াইআর৪ পৃথিবীতে আঘাত হানে, তাহলে এটি ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি হয় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে বিশাল ‘এয়ারবার্স্ট’ তৈরি করবে, যা বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ব্যাপক অঞ্চল ধ্বংস করতে পারে, অথবা এটি সরাসরি ভূমিতে আঘাত করতে পারে।

১৯০৮ সালে সাইবেরিয়ায় টুঙ্গুস্কা বিস্ফোরণ এমনই একটি ঘটনা ছিল, যেখানে প্রায় ৮০ মিলিয়ন গাছপালা ধ্বংস হয়েছিল এবং বিস্ফোরণের শক্তি ছিল প্রায় ৫০ মিলিয়ন টন টিএনটি’র সমান। গবেষকদের মতে, সেখানে মাত্র ১০ মিটার ব্যাসের একটি গ্রহাণু আঘাত করেছিল। অথচ ২০২৪ ওয়াইআর৪ তার চেয়েও ৬ গুণ বড়!

বর্তমান হিসাব অনুযায়ী, সম্ভাব্য আঘাতের এলাকা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে সাব-সাহারান আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০২৮ সালে যখন এটি আবার পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে, তখন আরও নিখুঁতভাবে এর কক্ষপথ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।

 

আদৌ এটি পৃথিবীর জন্য হুমকি কিনা এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। গ্রহাণুটির উপাদানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যদি এটি আয়রন-সমৃদ্ধ হয়, তবে সরাসরি ভূমিতে আঘাত হানতে পারে। কিন্তু যদি এটি পাথুরে হয়, তাহলে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞানীরা ২০২৮ সালে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করবেন, যা থেকে বোঝা যাবে, আদৌ এটি পৃথিবীর জন্য হুমকি কিনা। 

তাবিব

×