ছবি: সংগৃহীত
এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনছে। চিত্র থেকে টেক্সট, টেক্সট থেকে অডিও, এমনকি একক চিত্র থেকে সম্পূর্ণ পডকাস্ট তৈরির ক্ষমতাও এখন এআই-এর আওতায় এসেছে।
তাহলে কি এআই প্রযুক্তি মানুষের পুনর্জন্ম ঘটাতে পারবে? এই প্রশ্নটি আজকের প্রযুক্তি বিশ্বে একটি আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি এক ভিডিওতে দেখা যায় থমাস আলভা এডিসন, নিকোলাস টেসলা, আইনস্টাইন, মেরি কুরি, রবার্ট ওপেনহাইমার প্রমুখ বিজ্ঞানীগণ একটি লাইভ পডকাস্টে কথা বলছেন! এআই প্রযুক্তির নিখুঁত ব্যবহারে বহু বছর আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া মানুষগুলো যেন পুনরায় জীবন্ত হয়ে ওঠেছেন!
প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার ফলে এখন মৃত ব্যক্তির কণ্ঠস্বর নকল করা সম্ভব হচ্ছে, এমনকি তাদের চিন্তাভাবনা, কথাবার্তা এবং স্মৃতি ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষণ করাও সম্ভব হচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানি এআই-ভিত্তিক হোলোগ্রাম তৈরি করছে, যা মৃত ব্যক্তির মতো দেখতে এবং কথা বলতে সক্ষম। এ ধরনের প্রযুক্তি আমাদের স্বজনদের স্মৃতি সংরক্ষণের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
ডিপফেক প্রযুক্তি মানুষের মুখাবয়ব ও কণ্ঠস্বর হুবহু নকল করতে সক্ষম। কিছু সংস্থা এমন সফটওয়্যার তৈরি করছে যা মৃত ব্যক্তির আগের ভিডিও ও অডিও ডেটা ব্যবহার করে তাদের কথোপকথন পুনর্নির্মাণ করতে পারে।
যদিও এটি অনেক ক্ষেত্রেই নৈতিক ও আইনি প্রশ্ন তৈরি করছে, তবুও এটি আমাদের কাছের মানুষদের ডিজিটালভাবে 'পুনরুজ্জীবিত' করার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলছে।
জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকৃত পুনর্জন্ম সম্ভব নয়। তবে, স্মৃতির ডিজিটাল সংরক্ষণ এবং কৃত্রিম উপায়ে ব্যক্তিত্বের প্রতিলিপি তৈরি করা সম্ভব। নিউরোসায়েন্স এবং এআই-এর একত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে একদিন হয়তো এমন একটি প্রযুক্তি আসতে পারে, যেখানে মানুষের চিন্তাভাবনা, স্মৃতি এবং আচরণ ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষণ করে একটি এআই মডেলে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে।
যদিও এই প্রযুক্তির বিকাশ অত্যন্ত রোমাঞ্চকর, তবে এর নৈতিক এবং সামাজিক দিকগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। মৃত ব্যক্তিদের স্মৃতি ও ব্যক্তিত্ব পুনরায় সৃষ্টির ফলে পরিবারগুলোর জন্য এটি একদিকে স্বস্তিদায়ক হতে পারে, আবার অন্যদিকে এটি বাস্তব ও কৃত্রিমতার মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
এআই হয়তো প্রকৃত অর্থে মানুষের পুনর্জন্ম ঘটাতে পারবে না, তবে এটি স্মৃতি ও ব্যক্তিত্বের একটি ডিজিটাল সংস্করণ সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, যা ভবিষ্যতে মানুষের অস্তিত্বের নতুন সংজ্ঞা তৈরি করতে পারে।
এম.কে.