ছবি: সংগৃহীত
হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য উদ্বেগজনক এক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ইসরাইলি স্পাইওয়্যার গ্রাফাইট এর মাধ্যমে হ্যাক করা হচ্ছে স্মার্টফোন, নজরদারিতে থাকছে ব্যক্তিগত বার্তা, ভয়েস কল, ছবি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
সম্প্রতি মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ অভিযোগ এনেছে ইসরাইলি সাইবার গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান প্যারাগন সলিউশনসের বিরুদ্ধে, যেখানে ১০০-র বেশি ব্যবহারকারীর তথ্য চুরির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স, আলজাজিরা-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাফাইট স্পাইওয়্যারটি বিশেষভাবে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও সুশীল সমাজের সদস্যদের টার্গেট করে হ্যাকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, গ্রুপ চ্যাট এবং পিডিএফ ফাইলের আড়ালে চালানো হচ্ছে নজরদারি।
বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মতোই শক্তিশালী গ্রাফাইট, যা iOS ও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ইনস্টল করা যায় দূর থেকেই। ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, এই হ্যাকিংয়ের জন্য কোনো ফিশিং লিংকে ক্লিক করাও লাগে না—জিরো-ক্লিক পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীর অজান্তেই ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় গ্রাফাইট।
এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালের মতো এনক্রিপ্টেড অ্যাপও নিরাপদ নয় এই নজরদারি সফটওয়্যারের হাত থেকে।
প্রাক্তন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক প্রতিষ্ঠিত প্যারাগন সলিউশনসের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ উঠলেও, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ধরনের স্পাইওয়্যারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ ও অনুমোদন করে।
ফলে এটি সরকার-সমর্থিত নজরদারি অস্ত্র বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের ৩৫টি দেশের সরকার ইতিমধ্যে প্যারাগনের প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে গ্রিস, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, মেক্সিকো, ভারতসহ একাধিক দেশ।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই হ্যাকিং কার্যক্রম শনাক্ত করে হোয়াটসঅ্যাপ প্যারাগনের বিরুদ্ধে ‘সিজ অ্যান্ড ডেসিস্ট’ নোটিশ পাঠিয়েছে। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবহারকারীদের কোন দেশের নাগরিক এবং কতদিন ধরে তাদের ফোন ঝুঁকির মধ্যে ছিল, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি না হলে ও ব্যক্তিগত সতর্কতা অবলম্বন না করলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি অপেক্ষা করছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা আজ চরম হুমকির মুখে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/Ofx8xV0yjUI?si=p6JWd68ngikRzcD7
এম.কে.