ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশে স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালুর পরিকল্পনা করেছে মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের মূল প্রতিষ্ঠান ভিওন লিমিটেড। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংকের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাড়িয়ে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে সেলুলার সেবা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে দুবাইভিত্তিক এই টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভিওনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্যান তেরজিওগ্লু বলেন, তাদের লক্ষ্য এমন অঞ্চলগুলোতে নেটওয়ার্ক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, যেখানে এখনো স্থলভিত্তিক অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানের মতো দেশে স্যাটেলাইট-নির্ভর ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশে এই সেবাটি বাস্তবায়নে ভিওনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলালিংক, বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর, গ্লোবাল টেলিকম হোল্ডিংসের অধীনে পরিচালিত হয়, যার বেশিরভাগ শেয়ার ভিওনের মালিকানাধীন। ভিওন শুধু টেলিযোগাযোগেই সীমাবদ্ধ না থেকে আর্থিক সেবা এবং বিনোদন খাতেও তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করছে।
স্টারলিংক স্যাটেলাইট প্রযুক্তি এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট সেবা পৌঁছাতে সক্ষম, যেখানে সাধারণত স্থলভিত্তিক নেটওয়ার্ক নেই। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রযুক্তি টি-মোবাইলের সেলুলার নেটওয়ার্কের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ক্যান তেরজিওগ্লু জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, জ্বালানি সংকট বা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে স্থলভিত্তিক নেটওয়ার্ক প্রায়ই অকার্যকর হয়ে পড়ে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্যাটেলাইট ও স্থলভিত্তিক নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে কার্যকর সংযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।
ভিওনের ইউক্রেনভিত্তিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান কিইভস্টার পিজেএসসি ইতোমধ্যে স্টারলিংকের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ স্যাটেলাইট-টু-সেল প্রযুক্তির মাধ্যমে টেক্সট মেসেজিং সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, যা পরবর্তীতে ভয়েস ও ডেটা সেবায় সম্প্রসারিত হবে।
তবে সেবাটি বাস্তবায়নের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো স্পেকট্রামের অনুমোদন। এটি ব্যয়বহুল এবং সবসময় সহজলভ্য নয় বলে জানিয়েছেন ভিওনের সিইও। তবুও, বাংলাদেশ ছাড়াও ভিয়েতনাম, ইথিওপিয়া এবং মেক্সিকোতে এই সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশে স্টারলিংকের এই সেবা চালু হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধার বিস্তৃতি ঘটবে। একইসঙ্গে জরুরি পরিস্থিতিতে টেলিযোগাযোগ সেবা কার্যকর রাখার ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।
সায়মা ইসলাম
