মোবাইল সেবা ও ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম কমানোর দাবি দীর্ঘদিনের হলেও, গ্রাহকদের খরচ আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বর্তমান সরকার মোবাইল সেবায় বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ শুল্ক যোগ করার পরিকল্পনা করছে। এ নিয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
শুল্ক বৃদ্ধির অনুমোদন ও প্রেক্ষাপট
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, মোবাইল সেবায় অতিরিক্ত ৩ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় এবং দুটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন কেবল প্রজ্ঞাপন জারির অপেক্ষা।বিগত অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল সেবায় শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। এর ফলে বর্তমানে ১০০ টাকা রিচার্জে গ্রাহকদের প্রায় ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা কর দিতে হয়। নতুন শুল্ক কার্যকর হলে এই কর বাড়বে ৫৬ দশমিক ৩ শতাংশে। অর্থাৎ, ১০০ টাকা রিচার্জে গ্রাহক ব্যবহার করতে পারবেন মাত্র ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা।
গ্রাহকের ওপর প্রভাব
বারবার কর বৃদ্ধির ফলে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার কমে যাচ্ছে। অনেক গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ কমানোর চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে মুঠোফোন গ্রাহকের সংখ্যা কমে হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ, যা জুনের তুলনায় ৭৩ লাখ কম। একই সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমে ১৩ কোটি ২৮ লাখে নেমেছে।
উদ্বেগ ও সমালোচনা
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে। উচ্চহারে করারোপ তাদের সেবা গ্রহণ আরও কঠিন করবে এবং ডিজিটাল উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে।
ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবার ওপর বাড়তি কর আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরণের পদক্ষেপ দেশের যোগাযোগপ্রযুক্তির উন্নতির পথে বাধা হতে পারে।
আফরোজা