তবে পেজারগুলো যে কোন অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর থেকে নেয়া না। এটা ধারণা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
যে কোন সময় আপনার শখের গ্যাজেট হতে পারে আপনার মৃত্যুর কারণ। কিন্তু কিভাবে? যদি বলা হয় আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি বিস্ফোরিত হতে পারে যে কোন সময়, ঘাবড়ে যাবেন?
আবার যদি বলা হয়, আপনার কানে থাকা ইয়ারবাডস কিংবা সামনে থাকা ল্যপটপ অথবা হাতে থাকা স্মার্টফোন আপনাকে ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে কন্ট্রোল করতে পারবে? শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এমনটা ঘটা কিন্তু এখন আর শুধুই কল্পনার মাঝে সীমাবদ্ধ না।
সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের লেবাননে একযোগে হাজার হাজার পেজার যন্ত্রের বিস্ফোরণ ঘটেছে। তাও একবার নয় দুই দফায় হয়েছে এই হামলা। পেজার হচ্ছে তারবিহীন যোগাযোগের যন্ত্র যেমন ওয়াকিটকি, মোবাইল ফোন, অথবা ওয়ারলেস টেক গ্যাজেট। এই হামলায় নিহত হয়েছেন ৩৪ জন।
হামলার জন্য দেশটির সংগঠন মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। তবে দেশটি এই হামলা নিয়ে কিন্তু এখনও চুপ।
তবে এই ঘটনায় ইলেক্ট্রিক ডিভাইসগুলোর প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠান কিংবা সরবরাহদাতা প্রতিষ্ঠানও দায় এড়াতে পারে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশটির নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, পেজারগুলোর ভেতরে বিস্ফোরক রেখে দিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের সেই দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা।
তবে নিউইয়র্ক টাইমস থেকে জানা যায়, এসব পেজার তৈরি করেছিল তাইওয়ানের গোল্ড অ্যাপোলো নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে কোম্পানিটি আবার দায় চাপিয়েছে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টভিত্তিক একটি কোম্পানির দিকে।
আবার বিস্ফোরিত ওয়াকিটকি গুলোর গায়ে লেখা ছিলো আইকম ব্র্যান্ডের কথা কিন্তু আইকম বলছে, যে পেজার বিস্ফোরণ ঘটেছে, ওই ধরনের মডেল ১০ বছর আগেই তৈরি করা বন্ধ করেছে তারা।
তবে পেজারগুলো যে কোন অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর থেকে নেয়া না। এটা ধারণা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
ঘটনা যাই হউক এভাবে টেক গ্যাজেটকে অস্ত্রে রূপান্তর করা। এবং হাজার হাজার ডিভাইসকে সবার অজান্তেই বিস্ফোরণের হাতিয়ার বানানোর বিষয়টিকে কেউই ভালো চোখে দেখছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটির ব্রায়ান প্যাট্রিক গ্রিন বলেন, " কাউকে না জানিয়ে হাজার হাজার যন্ত্র যেকোনো প্রকারে হোক, অস্ত্রে পরিণত হলো কিভাবে। এই ব্যবস্থায় বিস্ফোরক কিভাবে ঢুকলো—এমন সব ভয়ানক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে লেবাননের এই ঘটনায়।
আমাদের হাতের স্মার্টফোন বা ল্যাপ্টপ যেটি এরই মাঝে বিভিন্ন উপায়ে আমাদের থেকে আমাদের ইনফরমেশান নিচ্ছে। এছাড়াও পেগাসাস বা অন্য সফটওয়ারগুলো আমাদের কথা শুনে ফেলছে এই তথ্য আমরা আগেই জেনেছি।
কিন্তু ম্যাসিভ স্কেলে এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে, তা মুভি ছাড়া কি কেউ কল্পনা করেছে।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, আমাদের পকেটে থাকা স্মার্টফোন কখন বিস্ফোরক হয়ে উঠবে, কিংবা আমাদের সামনে থাকা ল্যাপ্টপ কখন কিলিং মেশিন হয়ে যাবে এটা আমরা ধারণাই করতে পারবো না।
এখন এর থেকে বাঁচার উপায় কী? প্রযুক্তিবীদদের মতে নকল কিংবা অফার থেকে প্রথমেই সাবধান থাকতে হবে। কিনতে হবে নির্ভরযোগ্য ব্র্যাণ্ডের আসল পণ্য।
এছাড়াও পণ্য কেনার জন্য কোম্পানীর অফিশিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলেই হয়তো ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।
বারাত