.
প্রযুক্তির ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের শর্টকাট বা ছোটখাটো কিছু হ্যাকস যেমন আপনার সময় বাঁচাতে পারে, তেমনি বাড়াতে পারে কর্মদক্ষতাও। বর্তমানে আমাদের জীনের অধিকাংশ কাজ চলে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে। তাই সঠিক উপায়ে এসব প্রযুক্তির ব্যবহার আপনার জীবনকে করে তুলতে পারে আরও সহজ। আপনার প্রাত্যাহিক জীবন সহজ করে তুলতে দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে বিভিন্ন কাজ শেষ করতে সহায়ক কিছু প্রযুক্তি নিয়ে আজকের আলোচনা-
কিউআর কোডে ওয়াইফাই অ্যাক্সেস
আপনি কি প্রতিবার অতিথি বা অন্য কাউকে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর বারবার সেটি পরিবর্তন করতে করতে বিরক্ত? তাহলে, এই স্মার্ট সমাধানটি আপনার জন্য। ‘কিউআইএফআই.অর্গ’ এই ওয়েবসাইটটি আপনাকে পাসওয়ার্ড না দিয়ে আপনার ওয়াইফাই অ্যাক্সেসের জন্য একটি কিউআর কোড তৈরি করে দেয়। আপনার নেটওয়ার্কের নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে এই ওয়েবসাইট থেকে আপনার কিউআর কোডটি তৈরি করে নিতে পারেন। কিউআর কোডটি প্রিন্ট আউট করে নিলে, অন্যরা চাইলে সহজেই সেটি স্ক্যান করে আপনার ওয়াইফাই অ্যাক্সেস নিতে পারবে।
নিরাপদ পাসওয়ার্ড ম্যানেজার
আপনাকে আর পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়া এবং অ্যাকাউন্ট থেকে লগ-আউট হওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আপনার সবগুলো পাসওয়ার্ড মনে রাখার পরিবর্তে, আপনাকে শুধু একটি পাসওয়ার্ড মনে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনি, ‘১পাসওয়ার্ড’ এবং ‘লাস্টপাস.কম’ নামের অনলাইন পাসওয়ার্ড ম্যানেজারগুলো ব্যাবহার করতে পারেন। ‘বিটওয়ার্ডেন.কম’ ফ্রি পাসওয়ার্ড ম্যানেজারগুলোর মধ্যে বেশ ভালো। এগুলো আপনার ব্রাউজারের সঙ্গে যুক্ত করে নিলে আপনি ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য পরিষেবাগুলোতে নির্বিঘ্নে লগ-ইন করতে পারবেন, যা আপনার সময় বাঁচাবে।
অনলাইনে আর্টিকেলের সারাংশ
অনলাইনে দ্রুত বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেলের সারাংশ পেতে, ‘টিএলডিআর দিস’- নামে ক্রোম এক্সটেনশন ব্যবহার করতে পারেন। এই প্লাগইনটি আপনাকে আপনার নির্বাচিত অনলাইন আর্টিকেলের একটি সারাংশ দেখাবে। যাতে আপনি পুরো জিনিসটির একটি সারাংশ বুঝে নিতে পারেন অল্প সময়েই অথবা পুরো লেখাটা পড়তে চান কি না তা ঠিক করতে পারেন।
বড় আর্টিকেলের গুগল প্রুফরিড
আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী বা কন্টেন্ট রাইটার হন এবং আপনার কাজের প্রুফরিড করার জন্য কাউকে খুঁজে না পান, তাহলে গুগল হতে পারে আপনার বন্ধু। লিখতে গিয়ে দীর্ঘ সময় লেগে গেলে, অনেক সময় কাজের ত্রুটি ধরা কঠিন হয়ে যেতে পারে। তাই এক্ষেত্রে আপনি আপনার চোখের পরিবর্তে আপনার কান ব্যবহার করতে পারেন। আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, গুগল ট্রান্সলেটে আপনার লেখাটি কপি করে পেস্ট করুন এবং লিসেন আইকনে ক্লিক করুন। এটি আপনাকে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে শোনাবে।
ই-বুক না কিনে ধার
ই-বুকের সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো আপনি কোথাও বই নিতে ভুলে যাবেন না। কারণ এগুলো সবসময় আপনার ডিভাইসের মধ্যেই থাকবে। আপনার যদি ডিভাইসে একটি ই-বুক সংগ্রহশালা তৈরির ইচ্ছা না থাকে, তবে এগুলো কেনার পরিবর্তে ধার নিয়ে পড়ার কথা বিবেচনা করুন। ‘ওভারড্রাইভ.কম’ নামে প্ল্যাটফর্মটি আপনাকে আপনার পছন্দের বই ধার করতে এবং আপনার কাছের লাইব্রেরি খুঁজে পেতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া, শিক্ষার্থীদের জন্য ‘সোরাঅ্যাপ.কম’ এবং সবার জন্য ‘লিবিঅ্যাপ.কম’-এর মতো বিশেষ অ্যাপও রয়েছে। আপনি যদি কোনো প্রজেক্টের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বই ধার করতে চান কিংবা কেবল একবার পড়ার জন্য নিতে চান, তাহলে আপনি আপনার মোবাইল ডিভাইসে এই অ্যাপগুলো ডাউনলোড করে শুরু করে দিতে পারেন।
আর যেহেতু এটি একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, তাই আপনার সবগুলো বই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত তারিখে ফিরে যাবে। আপনাকে কখনোই লেট ফি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আর আপনার যদি পড়া শেষ না হয়, আপনি সবসময়ই তা আবার পুনরায় নিতে পারবেন।
পাওয়ার পয়েন্টে প্রেজেন্টেশন
ধরুন, আপনার একটি প্রেজেন্টেশন আছে এবং আপনাকে তা খুব কম সময়ের মধ্যে উপস্থাপন করতে হবে। তখন ফাইলটি পাওয়ার পয়েন্টে খুলে স্লাইড-শো খুঁজে বের করে শুরু করা বেশ ঝামেলার মনে হতে পারে। সেক্ষেত্রে, আপনি যদি আপনার পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ফাইল .পিপিটি-এর পরিবর্তে .পিপিএস-দিয়ে সেভ করেন, তাহলে আপনার ফাইলটি খুললে সরাসরি তা স্লাইডশো মোডে চলে যাবে। এতে করে আপনার ঝামেলা অনেকাংশেই কমে যাবে।
সময় বাঁচাতে ভয়েস টাইপিং
যদি আপনার হাতে সময় কম থাকে বা কোনো কারণে টাইপ করা কঠিন হয়, তাহলে ভয়েস টাইপিং ফিচারটি ব্যবহার করুন। এটি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এবং গুগল ডক্স-এ ব্যবহার করা যায়। ওয়ার্ডে এই ফিচারটি চালু করতে, হোম মেনু থেকে ‘ডিকটেশন’ অপশনটি নির্বাচন করুন বা ‘ডিকটেশন’ টুলবার খুঁজে পেতে উইন্ডোজ কি ‘+এইচ’ চাপুন। সেখান থেকে আপনি স্পিকারে ক্লিক করে, ভয়েস টাইপিং করতে পারেন। যেকোনো বিরাম চিহ্ন লেখার জন্য তা স্পষ্টভাবে বলুন। গুগল ডক্সেও একইভাবে কাজ করতে পারেন। টুলস মেনুতে গিয়ে ভয়েস টাইপিং অপশনটি নির্বাচন করুন। এরপর শুধু মাইকে ক্লিক করে আপনার কাজ চালিয়ে যান।