ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং

.

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফ্রিল্যান্সিংবিশেষ করে স্বাধীনচেতা তরুণ-তরুণীদের কাছেফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি না পেরোতেই অনেকে হয়ে ওঠেন প্রফেশনালফ্রিল্যান্সিংকে বলা হয় মুক্ত পেশাঅর্থা একজন ফ্রিল্যান্সার নিজের স্বাধীনমতো যখন ইচ্ছা কাজ করতে পারেনশুধু দেশের কাজই নয়, দেশে বসে যে কোনো দেশের গ্রাহকদের কাজও করে দিতে পারেন একজন ফ্রিল্যান্সারআর এই প্রক্রিয়াকে বলা হয়

আউটসোর্সিংএসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন- নাফিস আহমেদ

ফ্রিল্যান্সিং পেশাটি বেশি জনপ্রিয় হয়েছে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমেএক দেশে বসে অন্য কোনো দেশের কারও কাজ করে দেওয়াটাই হচ্ছে আউটসোর্সিংদেশের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ তরুণতরুণ প্রজন্ম আমাদের পুরো অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে বদলে দিতে পারেবর্তমানে প্রধানত প্রযুক্তিভিত্তিক কাজ, যেমন- ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, আর্টিকেল রাইটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, মাল্টিমিডিয়া, আর্কিটেকচার, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ওয়েব রিসার্চ, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি কাজ দিয়ে শুরু করতে পারেইউটিউব একটি শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্মসুতরাং, কেউ বিষয়গুলোতে দক্ষতা বাড়াতে চাইলে ইউটিউব আপনার কাক্সিক্ষত বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে শিখতে সাহায্য করতে পারে

যেভাবে শুরু করবেন

যে কেউ ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেনএখানে বয়সের সীমাবদ্ধতা বা লিঙ্গের কোনো ভেদাভেদ নেইতা ছাড়া এখানে কোনো ডিগ্রি বা একাডেমিক সার্টিফিকেটেরও প্রয়োজন নেইপ্রয়োজন শুধু লেগে থাকার ইচ্ছাশক্তি এবং কর্মদক্ষতাপিওডি বা প্রিন্ট অন ডিমান্ড বর্তমানে আয়ের বেশ জনপ্রিয় একটি মাধ্যমএখানে প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের কোনো ঝামেলা নিজের কাছে না থাকায় এবং গ্রাহক তাঁর প্রয়োজনীয় জিনিসের পছন্দসই প্রিন্ট পাওয়ায় এটি বেশ দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে

পিওডি প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনি কয়েক মিনিটে একটি চিন্তার সেটআপ করে নিতে পারবেন এবং আপনার সৃজনশীল, প্রফেশনাল বা ফানি ডিজাইন আপলোডের মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করতে পারবেনএভাবে বিবেচনা করলে খুবই সহজ একটি প্রসেসতবে আপনি ডিজাইন না করতে পারলে পার্টনার হিসেবে ডিজাইনার রাখতে পারেন বা ফ্রিল্যান্স ডিজাইনার হায়ার করতে অথবা ডিজাইন বিক্রি করে এমন প্ল্যাটফর্ম থেকেও কিনতে পারেনমনে রাখবেন, দক্ষতা ছাড়া দুনিয়ার কোথাও চাকরি মেলে নাআর ফ্রিল্যান্সিং একটি পেশাতাই ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে যে বিষয়ে ফ্রিল্যান্স করবেন, ঠিক সেই বিষয়ে দক্ষ হতে হবেবর্তমানে কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডাটা ম্যানেজমেন্ট, অটোমেশন, প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডিজাইন, এসইও ইত্যাদি বিষয়ের চাহিদা বেশিযদি কেউ এই বিষয়গুলোর যে কোনো একটি ভালো করে শিখে দক্ষ হয়ে নেন, তবে তাঁর জন্য ফ্রিল্যান্সিং পেশা অবশ্যই আশীর্বাদস্বরূপইউটিউব, গুগল, ইউডেমি, ফেসবুক গ্রুপে প্রচুর রিসোর্স পাবেন ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য

যেখানে মেলে কাজ

ফ্রিল্যান্সিং কাজের অসংখ্য পথএর মধ্যে মার্কেটপ্লেস, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ও নিজস্ব নেটওয়ার্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণআপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার, গুরু- এমন বেশ কিছু মার্কেটপ্লেস আছে, যেখানে কাজদাতা বা বায়ার কাজের বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেনযিনি কাজটা করে দেবেন তিনি ফ্রিল্যান্সার; বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনবায়ার-ফ্রিল্যান্সারের শর্তগুলো মিলে গেলে চুক্তি হয় মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমেবায়ার কাজের মূল্যমান অর্থ মার্কেটপ্লেসে জমা রাখেনকাজ শেষ হলে ফ্রিল্যান্সার তা জমা দেনবায়ার কাজ বুঝে নিয়ে ডিপোজিট মানি রিলিজ করে দেনফ্রিল্যান্সার তা পেয়ে যানএভাবে একটি কাজ শেষ হয়প্রফেশনাল সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, যেমন লিঙ্কডইনে প্রচুর কাজ পাওয়া যায়ফ্রিল্যান্সার যে কাজে পারদর্শী সেই নেটওয়ার্কে ঘোরাঘুরি করে কাজ ম্যানেজ করে নেননিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করা সবচেয়ে বেশি লাভজনকএকটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মার্কেটপ্লেসে কাজ করার পর অনেক ফ্রিল্যান্সারই নিজস্ব নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেলতে পারেনফলে বায়ারের সঙ্গে সরাসরি কন্ট্রাক্ট করে নিজের পছন্দমতো কাজ করা যায়

পছন্দের কাজ দিয়ে হোক শুরু

হুটহাট শুরু না করে যদি সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা সাজিয়ে কাজে নামেন, তবে সফলতা পাবেনইযেমন, নতুন কেউ কনটেন্ট রাইটিংয়ে ফ্রিল্যান্স করতে চাইলে প্রথমেই আয়ের কথা না ভেবে নিজেকে তৈরি করতে হবেসে ক্ষেত্রে কারও কাছে ইন্টার্নশিপ নিতে পারলে ভালো হয়শুরুতেই আয়ের কথা ভাবলে হতাশা চলে আসতে পারে মনেফ্রিল্যান্সিং এমন এক পেশা, যেখানে স্কিলড না হলে দু-এক মাস কাজ করা গেলেও লং টাইমের জন্য মার্কেটে টিকে থাকা যাবে নামনে রাখবেন, ১৫ থেকে ১৭ বছর পড়াশোনা শেষে যেখানে আমরা ৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের একটি চাকরি ম্যানেজ করতে পারলেই খুশি, সেখানে ৫০০ থেকে ১০০০ ডলার মাসে আয় করার জন্য কি অন্তত ১৫ থেকে ১৭ মাস কাজ শেখা জরুরি নয়? প্রশ্নটা নিজেকেই করুনঠকবেন না কখনও- এটি নিশ্চিত করে বলতে পারি!

×