ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

যেসব দেশে ভিপিএন ব্যবহারে শাস্তি হয় 

প্রকাশিত: ২১:২৭, ২৬ জুলাই ২০২৪

যেসব দেশে ভিপিএন ব্যবহারে শাস্তি হয় 

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন ইন্টারনেটের একটি ভার্চুয়াল) ‘টানেল’। যার মাধ্যমে ডাটা কম্পিউটার থেকে আদান প্রদান করতে পারে। এই ভার্চুয়াল কাল্পনিক সুড়ঙ্গটির মাধ্যমে একটি ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত প্রাইভেট নেটওয়ার্ক এর সঙ্গে ডিভাইসকে সংযুক্ত করা সম্ভব৷ 

ফলে ব্যবহারকারী তার ইন্টারনেট ব্যবহারের তথ্যাদি গোপন রাখতে পারে এবং নিজের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়, অন্য একটি অঞ্চলের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে স্বশরীরে সেখানে উপস্থিত থাকতে হচ্ছে না, বরং ভার্চুয়ালভাবেই একটি সফটওয়্যার এর মাধ্যমে সেই ভিন্ন অঞ্চলের প্রাইভেট নেটওয়ার্ক এর সঙ্গে সংযুক্ত হতে ব্যবহার করতে পারছে। এজন্যই এটির নামকরণ করা হয়েছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)।

 এ জন্যই ভিপিএনের এত জনপ্রিয়তা। তবে মনে হতে পারে, এগুলো হয়তো বিশ্বজুড়ে অবাধে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু না, বেশকিছু দেশ আছে যেখানে ভিপিএন ব্যবহারকে অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হয়। বেশ কিছু দেশে ভিপিএন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক এই দেশগুলো সম্পর্কে।

চীন
প্রযুক্তির ব্যবহারে শীর্ষে থাকা চীনে ভিপিএন ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ নয়, দেশটির বাসিন্দারা শুধু সরকার অনুমোদিত ভিপিএন ব্যবহার করতে পারেন। ফলে দেশটির সরকার চাইলে যে কোন সময় এই ধরনের ভিপিএন হস্তক্ষেপ করতে পারবে। যা ভিপিএন ব্যবহারের উদ্দেশ্যকেই সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে। এ ক্ষেত্রে ৫ বছর পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে।

তুর্কমেনিস্তান
ভিপিএনের ওপর তুর্কমেনিস্তান সরকারের রয়েছে কঠোরনীতি। ২০১৯ সালে দেশটিতে ভিপিএন প্রদানকারীদের ব্লক করা শুরু করে। তারপর ২০২১ সালে নির্দেশ দেওয়া হয়, ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার আগে ব্যবহারকারীদের কোরানে শপথ নিতে হবে। তারা কখনো ভিপিএন ব্যবহার করবে না। কেউ দেশটিতে ভিপিএন ব্যবহার করে ধরা পড়লে তাকে জরিমানা এবং গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

রাশিয়া
২০১৭ সালে সারা বিশ্বে ভিপিএনের ব্যবহার আকাশচুম্বী হতে শুরু করে। তখন রাশিয়ান সরকার একের পর এক ভিপিএন প্রদানকারীদের নিষিদ্ধ করা শুরু করে। ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর রাশিয়ান সরকারের অবস্থান শক্ত। তারা এখন পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি ভিপিএন প্রদানকারীকে নিষিদ্ধ করেছে। দেশটি ভিপিএন এবং প্রক্সির ব্যবহার কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ করেছে। 

বেলারুশ
২০১৫ সালে বেলারুশ সরকার ভিপিএন, প্রক্সি এবং টর ব্রাউজার-এর মতো সব ধরনের অনলাইন কারচুপির সরঞ্জামগুলো ব্যবহারের ওপর সম্পূর্ণরূপে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সংক্ষেপে বলা যায়, দেশটির কোনো বাসিন্দা কোনোভাবে বেনামে ওয়েব সার্ফ করতে পারবেন না। ধরা পড়লে রয়েছে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা।

সংযুক্ত আরব আমিরাত
২০১৬ সালে দেশটিতে সাইবার অপরাধ আইন সংশোধনের পর ভিপিএন ব্যবহার অবৈধ করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকার এনক্রিপশনকে খুব ভালো চোখে দেখে না। ভিপিএন যেভাবে কাজ করে তা এখন সে দেশে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিপিএন ব্যবহার করে ধরা পড়লে জরিমানা কিংবা এমন কী জেলের সাজাও হতে পারে। 

তুরস্ক
২০১৬ সালে তুরস্ক সরকার টর ব্রাউজারের পাশাপাশি ১০টি ভিপিএন প্রদানকারীকে নিষিদ্ধ করে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানানো হয়। তবে ভিপিএন তুরস্কে সম্পূর্ণরূপে অবৈধ নয়। 

উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তিগত আইনগুলো সবার তুলনায় বেশি কঠোর। তাই এটি আশ্চর্যজনক নয় যে, সেখানে ভিপিএন ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। তবে দাবি করা হয়, উত্তর কোরিয়ায় অনুমোদন ছাড়া ভিপিএন ব্যবহারের ফলে কারাদণ্ড হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে উত্তর কোরিয়ানদের ইন্টারনেটেই নিয়মিত প্রবেশাধিকার নেই।

উগান্ডা
উগান্ডায় সব ধরনের ভিপিএন ট্র্যাফিক সরকার থেকে ব্লক করা। এর কারণ, উগান্ডা সরকার ২০১৮ সালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ওপর কর চালু আরোপ করে। তখন এর বাসিন্দারা কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য ভিপিএন ব্যবহার শুরু করে। তবে ২০২১ সালে উগান্ডা সরকার এই আইন উঠিয়ে নেয়। 

এসআর

×