
মুসলিম বিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত্যুর পরপরই শুরু হয় কবরজীবনের এক কঠিন পরীক্ষা। ফেরেশতারা কবরস্থ ব্যক্তিকে বসিয়ে প্রশ্ন করেন,যার উত্তর নির্ধারণ করে পরবর্তী জীবন, জান্নাত না জাহান্নাম। তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি আমলের কথা বলেছেন, যা কবরের প্রশ্ন সহজ করে দিতে পারে।
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত, কাতাদা (রহ.)-এর সূত্রে আনাস (রা.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-“মৃত ব্যক্তিকে যখন কবরে রাখা হয় এবং দাফনের কাজ শেষে লোকজন চলে যায়, তখন মৃত ব্যক্তি তাদের জুতার আওয়াজ পর্যন্ত শুনতে পায়। তখন দুজন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে প্রশ্ন করেন-‘এই ব্যক্তি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে তোমার ধারণা কী?’
রাসূল (সা.) বলেন, মুমিন ব্যক্তি বলবে,“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।”
তখন ফেরেশতারা বলবেন-“তুমি তোমার জাহান্নামের ঠিকানা দেখো। আল্লাহ তাআলা তা পরিবর্তন করে জান্নাতে তোমার ঠিকানা নির্ধারণ করেছেন।”
নবীজি বলেন, সে জান্নাত ও জাহান্নাম উভয় স্থানই দেখতে পায়।
অন্যদিকে, যদি মৃত ব্যক্তি কাফের বা মুনাফিক হয়, তখন ফেরেশতারা তাকে জিজ্ঞাসা করবেন-“এই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার ধারণা কী?”
সে বলবে,“আমি কিছুই জানি না। মানুষ যা বলতো, আমিও তাই বলতাম।”
তখন বলা হবে,“তুমি জানো নাই, শিখোও নাই।”
এরপর একটি লোহার মুগুর দিয়ে তার কানের মাঝখানে এমন জোরে আঘাত করা হবে, যাতে সে ভয়ানকভাবে চিৎকার করে উঠবে।জিন ও মানুষ ব্যতীত পৃথিবীর সব সৃষ্টি সেই চিৎকার শুনতে পাবে।
কবরের প্রশ্ন সহজ করার এক গোপন চাবি হলো সূরা মুলক তিলাওয়াত।আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“কোরআনে এমন একটি সূরা আছে, যাতে ৩০টি আয়াত রয়েছে। এটি তার তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা না করে দেওয়া পর্যন্ত তার জন্য সুপারিশ করতে থাকবে। সূরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বিইয়াদিহিল মুলক, অর্থাৎ সূরা মুলক।”
রাসূল (সা.) আরও বলেছেন,“প্রতিদিন এশার নামাজের পর রাতে ঘুমানোর আগে যে ব্যক্তি সূরা মুলক তিলাওয়াত করবে, তার মৃত্যুর পর কবরের আযাব মাফ করে দেওয়া হবে।”
কবরের প্রশ্নের উত্তর যেন সহজ হয়, তার জন্য প্রয়োজন সঠিক আমল। সূরা মুলক তিলাওয়াত, রাসূলের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও ঈমানি জীবনই পারে মৃত্যুর পর আমাদের সত্যিকারের মুক্তির পথ প্রশস্ত করতে।
সূত্র:https://tinyurl.com/yhkhsr68
আফরোজা