
ইসলাম ধর্মে কেয়ামতের আগে দাজ্জালের আগমনকে সবচেয়ে ভয়ানক ফিতনা হিসেবে গণ্য করা হয়। মুসলিম উম্মাহর ঈমান রক্ষায় যুগে যুগে হাদিসে বারবার এসেছে দাজ্জালের ফেতনা সম্পর্কে সতর্কতার নির্দেশ। তবে সময়ের পরীক্ষায় আরেকটি ভয়াবহ ফিতনা প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশে বিদ্যমান,যা দাজ্জালের চেয়েও ক্ষতিকর বলে মত দিয়েছেন দেশের প্রখ্যাত আলেম শায়খ আহমাদুল্লাহ।
কোরআন-হাদিসের বর্ণনানুযায়ী, দাজ্জালের ফিতনা সবচেয়ে বড় হলেও হাদিসে আরেক ফিতনার পরিচয় পাওয়া যায়, যা দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও ভয়ংকর ও ক্ষতিকর। সেটি হলো রিয়া বা লোক দেখানো আমল। যে আমল আল্লাহর জন্য না-করে আত্মপ্রচারের জন্য বা সুনাম কুড়ানোর জন্য করা হয়। এই রিয়াকারীরা মূলত আল্লাহর পরিবর্তে আত্মপ্রচারকেই শরিক বানায়। মুশরিকরা শরিক বানায় আল্লাহর পরিবর্তে দেবদেবীকে। এই শরিক বানানোটাই হলো শিরক। ইবাদতে শরিক করা হয়,‘যে আমল বাহ্যত আল্লাহর জন্য মনে হলেও নিয়ত ভিন্ন।’ (তাফসিরে তাবারি: ১৫/৪৪০)
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন,‘রাসুল (স.) আমাদের নিকট আসলেন যখন আমরা দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন বস্তু সম্পর্কে সংবাদ দেবো, যা তোমাদের জন্য দাজ্জালের চেয়েও অধিক ভয়ঙ্কর। আমরা বললাম, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বললেন, গোপন শিরক। (ইবনু মাজাহ: ৪২৭৯; আহমদ: ৩/৩০; হাকিম: ৪/৩২৯)।
লোক দেখানো আমলকে দাজ্জালের চেয়েও ভয়ংকর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে আলেমরা বলেন, দাজ্জাল বিশেষ একটি সৃষ্টি, নির্দিষ্ট সময় আসবে। সে পৃথিবীতে দেড় বছরও থাকবে না। এ সময় যারা পৃথিবীতে থাকবে, তারাই শুধু তার ফেতনার সম্মুখীন হবে। তাও আবার সে সময়ের সব মানুষ নয়। কিন্তু গুপ্ত শিরক তথা রিয়া ও প্রসিদ্ধি কামনা তো যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে, যেকোনো মুমিনের অন্তরে ঢুকে তাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এজন্য নবীজি (স.) একে দাজ্জাল থেকেও বেশি ভয়ংকর বলেছেন।
দাজ্জালের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি যেমন জরুরি, তেমনি আত্মার গহীনে বাসা বাধা ‘রিয়া’ নামক রোগের বিরুদ্ধেও চাই চূড়ান্ত আত্মসচেতনতা। নিজের নিয়ত বিশুদ্ধ রাখা, প্রত্যেক ইবাদতের পেছনে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টিকে উদ্দেশ্য বানানো একজন মুমিনের জন্য অপরিহার্য।
সূত্র:https://tinyurl.com/4b364vdc
আফরোজা