
ছবি: সংগৃহীত।
ফিলিস্তিন—একটি বরকতময় স্থান। এখানে অবস্থিত মুসলমানদের প্রথম কিবলা, পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মেরাজের রাতে এই মসজিদেই নামাজ আদায় করেছিলেন। বরকতময় এই ভূমি নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণীও করে গেছেন।
বর্তমান ফিলিস্তিন ছিল প্রাচীন বিলাদুশ শামের একটি অংশ। প্রাচীনকালে এই শামের অন্তর্ভুক্ত ছিল বর্তমান ফিলিস্তিন ছাড়াও সিরিয়া, জর্ডান ও লেবানন। এই শাম দেশ সম্পর্কেও (রা.) বহু ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। বিশেষ করে বায়তুল মুকাদ্দাস এবং তার আশপাশের এলাকায় ভবিষ্যতে কী ঘটবে, সে বিষয়ে অনেক কিছুই তিনি আগাম বলে গেছেন।
এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন: "কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না মুসলমানরা ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে এবং তাদের হত্যা করে। তখন ইহুদিরা পাথর বা গাছের আড়ালে আত্মগোপন করবে। কিন্তু পাথর বা গাছ বলবে, ‘হে মুসলিম! হে আল্লাহর বান্দা! আমার পেছনে একজন ইহুদি লুকিয়ে আছে, এসে তাকে হত্যা কর।’ তবে গারগাদ নামক গাছ এই কথা বলবে না, কারণ এটি ইহুদিদের গাছ।" (সহিহ মুসলিম)
বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাসূল (সা.) বিজয়ীদের ভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অর্থাৎ এক সময় ইহুদিদের দখল ও নির্যাতন শেষ হবে এবং মুসলমানদের একটি দল তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে বিজয়ী হবে।
হজরত আবু উমামা (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেন: "আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা সত্যের উপর বিজয়ী থাকবে। শত্রুর মনে তাদের পরাক্রম থাকবে। কোনো বিরোধীপক্ষ, দুর্ভিক্ষ ছাড়া, তাদের কিছুই করতে পারবে না। তারা এভাবেই থাকবে আল্লাহর আদেশ (কিয়ামত) পর্যন্ত।"
সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! তারা কোথায় থাকবে?” তিনি বললেন, “তারা বায়তুল মুকাদ্দাস এবং তার আশপাশে থাকবে।”
এই ভবিষ্যদ্বাণীতে ইঙ্গিত রয়েছে, উম্মতের মধ্যে একটি দল থাকবে যারা কেয়ামত পর্যন্ত সত্যের পক্ষে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে এবং আল্লাহর সাহায্য তাদের সঙ্গে থাকবে।
হজরত মুগিরা ইবনে শোবা (রাঃ) ও অন্যান্য সাহাবারা বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেন: “আমার উম্মতের একদল সর্বদা সত্যের উপর বিজয়ী থাকবে। কেয়ামত এসে যাবে, তবুও তারা বিজয়ীই থাকবে।”
রাসূল (সা.) আরও বলেন, “শ্যাম বিজয় করো। যখন তোমরা সেখানে বসবাসের অনুমতি পাবে, তখন দামেস্ক নগরীকে বাসস্থান বানাও। কারণ তা যুদ্ধ-পরবর্তী মুসলিমদের আশ্রয়স্থল হবে। আর মুসলিমদের ছাউনি হবে এক স্থানে, যাকে বলা হয় গোতা।”
(আবু দারদা, রা.)
একটি বিশেষ হাদিসে উল্লেখ আছে, “মহাযুদ্ধের সময় মুসলমানদের ছাউনি হবে গোতা শহরে, যা দামেস্ক নগরের পাশে অবস্থিত এবং শামের উৎকৃষ্ট শহরগুলোর একটি।”
ফিলিস্তিন ও শামের ভূমি যে কেবল দুনিয়াবী দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আখেরী যামানার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও আত্মিক কেন্দ্রস্থল—তা বহু হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
রাসূল (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের পূর্বে হজরত ঈসা (আ.) দ্বিতীয় আকাশ থেকে পৃথিবীতে অবতরণ করবেন। তিনি দুজন ফেরেশতার ডানায় ভর করে সিরিয়ার দামেস্ক শহরের “সাদা মিনার”-এর কাছে নেমে আসবেন এবং সিরিয়ার “বাবে লুদ” নামক স্থানে দাজ্জালকে হত্যা করবেন।
নুসরাত