ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১

ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে কোরআন ও হাদিসে কী আছে?

প্রকাশিত: ০২:০১, ৮ এপ্রিল ২০২৫

ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে কোরআন ও হাদিসে কী আছে?

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ। হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হচ্ছেন, ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুলসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। মুসলিম বিশ্ব এ যুদ্ধকে দেখছে এক গভীর মানবিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। এমতাবস্থায় অনেকেই জানতে চাইছেন—ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে ইসলাম কী বলে? কোরআন ও হাদিসে এই বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা রয়েছে কি?

কোরআনে বনী ইসরাইল প্রসঙ্গ পবিত্র কোরআনে "বনী ইসরাইল" নামটি বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে একসময় নবী-রাসূল দান করেছিলেন, কিন্তু তাদের অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘনের কারণে তাদের প্রতি আল্লাহর গজব নেমেছিল।

আল্লাহ তাআলা বলেন— “তোমরা যখন প্রথমবার সীমালঙ্ঘন করেছিলে, তখন আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার শক্তিশালী বান্দাদেরকে পাঠিয়েছিলাম, যারা ঘরে-ঘরে প্রবেশ করেছিল। এটা ছিল এক প্রতিশ্রুত শাস্তি।” (সূরা বনী ইসরাইল: ৫)

এই আয়াত ইসরাইলিদের পূর্বের সীমালঙ্ঘন ও তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত শাস্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

মজলুমদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা ইসলামে জুলুম ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে গণ্য হয়। কোরআনে বলা হয়েছে— “আর তোমাদের কী হলো যে, তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো না, অথচ নির্যাতিত পুরুষ, নারী ও শিশু বলছে— হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের এই জালিম সম্প্রদায়ের হাত থেকে মুক্ত করো।” (সূরা নিসা: ৭৫)

এই আয়াত স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়, নিপীড়িতদের পক্ষে দাঁড়ানো এবং জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ইসলামসম্মত।

হাদিসে ফিলিস্তিন ও বাইতুল মুকাদ্দাস হাদিসে বায়তুল মুকাদ্দাস বা আল-আকসা মসজিদের মর্যাদা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন— “তিনটি মসজিদের উদ্দেশ্যে সফর করা বৈধ— মসজিদে হারাম, আমার এই মসজিদ (মসজিদে নববী), এবং মসজিদে আকসা।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১১৮৯)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, আল-আকসা মুসলমানদের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্মীয় স্থান।

যুদ্ধ ও শান্তির আদর্শ ইসলাম কখনো অন্যায় যুদ্ধ বা আগ্রাসনকে সমর্থন করে না। বরং আত্মরক্ষার্থে, নির্যাতিতদের রক্ষার্থে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুদ্ধকে অনুমোদন দেয়। ইসলাম সব সময় ন্যায়ের পক্ষে ও জুলুমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বলে।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ কেবল একটি সংঘাত নয়, এটি একটি মানবিক ও ধর্মীয় ইস্যুও। কোরআন ও হাদিস আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এবং নির্যাতিতদের পাশে থাকতে উদ্বুদ্ধ করে। এই যুদ্ধের সমাধান শান্তি ও ন্যায়ের ভিত্তিতে হওয়াই কাম্য।

আসিফ

×