ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

কোরআনে ইসরাইলিদের পতন সম্পর্কে যা বলা হয়েছে

প্রকাশিত: ১৫:০৯, ৩১ মার্চ ২০২৫

কোরআনে ইসরাইলিদের পতন সম্পর্কে যা বলা হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত

যুগে যুগে আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা, নবীদের হত্যা ও দুনিয়ার বুকে ফিতনা ফ্যাসাদ করেছে বনী ইসরাইল। এজন্য বারবার লাঞ্ছিত, অপমানিত, ধ্বংস ও বিতাড়িত হয়েছে তারা। কিয়ামত পর্যন্ত এই চক্র চলমান থাকবে।

বনী ইসরাইলের ব্যাপারে কোরআনে আগে থেকেই বর্ণনা করে রেখেছেন আল্লাহ তাআলা। আল্লাহ তাআলা বলেন,

"আমি বনী ইসরাইলকে কিতাবের পরিস্কার বলে দিয়েছি তোমরা পৃথিবীর বুকে অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং অত্যন্ত বড় ধরণের অবাধ্য তায় লিপ্ত হবে। অতঃপর যখন প্রতিশ্রুত সেই সময়টি এলো, তখন আমি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করলাম আমার কঠোর যোদ্ধা বান্দাদেরকে।

অতঃপর তারা প্রতিটি জনপদের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়লো। এই ওয়াদা পূর্ণ হওয়ারই ছিল। অতঃপর আমি তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে, তোমাদেরকে ধন সম্পদ ও পুত্র সন্তান দ্বারা সাহায্য করলাম এবং তোমাদেরকে জনসংখ্যা দিয়ে একটি বিশাল বাহিনীতে পরিণত করলাম। তোমরা যদি ভালো করো তবে নিজেদের জন্য ভালো করবে, আর যদি মন্দ করো তাও নিজেদের জন্যই।

এরপর যখন দ্বিতীয় সময়টি এলো তখন অন্য বান্দাদেরকে প্রেরণ করলাম যাতে তারা তোমাদের মুখমণ্ডল বিকৃত করে দেয়। আর মসজিদে ঢুকে পড়ে যেমনটা প্রথমে ঢুকেছিল। এবং যেখানেই জয়ী হয় সেখানেই পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। হয়তো তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন। কিন্তু, যদি পুনরায় তাই করো, আমিও পুনরায় তাই করব।

আমি জাহান্নামকে কাফেরদের জন্য কয়েদখানা করেছি। (সূরা বনী ইসরাইল ১৭:৮)

সূরা বনী ইসরাইলের এই আয়াত গুলো থেকে বোঝা যায়, এই জাতি দুনিয়ার বুকে দুইবার ফ্যাসাদ সৃষ্টি করবে। তারপর আল্লাহ তাদের পরাজিত করবেন।

ধারণা করা হয়, প্রথম ঘটনাটি ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। খ্রিস্টপূর্ব ৭২২ অব্দে বনী ইসরাইলের একটি অংশকে জোরপূর্বক নির্বাসিত করে অ্যাসিরিয়ানরা। নব্য অ্যাসিরিয়ান রাজা তৃতীয় তিগলাত পিলেসার এবং পঞ্চম সালমানেসার এই ইসরাইলি সাম্রাজ্য দখল করেছিলেন। তখন জেরুজালেম দখল করে নিয়েছিলেন অ্যাসিরিয়ান রাজারা। এটা ছিল দাউদ (আ:) এর তৈরি করা সাম্রাজ্যের পতন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

"অতঃপর আমি তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে, তোমাদেরকে ধন সম্পদ ও পুত্র সন্তান দ্বারা সাহায্য করলাম এবং তোমাদেরকে জনসংখ্যা দিয়ে একটি বিশাল বাহিনীতে পরিণত করলাম।"

এভাবেই বনী ইসরাইলকে পুনরায় ক্ষমতায়িত করেন আল্লাহ তাআলা। ধারণা করা হয় গেল কয়েক হাজার বছরের মধ্যে এই প্রথম সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বনী ইসরাইল।

ইসলামের শুরুর দিকের কোরআনের তাফসীরবিদদের মতে, দুটি ঘটনাই এর মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে, আধুনিক মুফাসসিরদের বিশ্বাস দ্বিতীয় ঘটনা এখনো সংঘটিত হয়নি। ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী কিয়ামতের আগে ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে মুসলিমরা জেরুজালেম জয় করবে। বর্তমান বিশ্বের পরম্পরায় অনেক মুফাসসির মনে করেন এটাই হবে বনী ইসরাইলের দ্বিতীয় বিপর্যয়ের ঘটনা।

সূত্র: https://youtu.be/nRWihERxJXk?si=n68MPBavNgyqr40y

মায়মুনা

×